হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর বাজারে টাকা দেনা-পাওনাকে কেন্দ্র করে দুই পরগনার মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ৬ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে মিরপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কমপক্ষে তিন শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। এ সময় বশির প্লাজার সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয় সংঘর্ষকারীরা।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে শুরু হয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ।
আহতদেরকে বাহুবল ও হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। যে কারণে দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় উপজেলার মিরপুর বাজারে টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে একই উপজেলার লামাতাসি গ্রামের ট্রেইলার আলফু মিয়ার সঙ্গে বানিয়াগাঁও গ্রামের আকল আলীর ছেলে আল আমিনের কথা কাটাকাটি হয়। বিষয়টি সমাধান করার জন্য বানিয়াগাঁও গ্রামের আ. শহিদ মিয়ার ছেলে সাদ্দাম মিয়া চেষ্টা করলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আলফু মিয়ার লোকজন।
বিষয়টি উভয় পক্ষের গ্রামের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে মিরপুর বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। পরে লামাতাশি ও বানিয়াগাঁও গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে মিরপুর বাজারে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। উভয় পক্ষের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লামাতাশি গ্রামের পক্ষে ৫ গ্রাম ও বানিয়াগাঁও গ্রামের মধ্যে ৮ গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িত হয়। দুই পরগনার লোকজনের মধ্যে চলে ইট পাটকেল নিক্ষেপ, টানা রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে এ সংঘর্ষ। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য ফোটানো হয় পটকাও। এক পর্যায়ে বশির প্লাজার সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেল ও কিছু চেয়ার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এসময় মিরপুর বাজারের দোকান পাঠেও হামলা ভাঙচুর করে সংঘর্ষকারীরা। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিভাতে চেষ্টা করে।
এদিকে খবর পেয়ে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ও সেনা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তবে দু’ পক্ষে উত্তেজনা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ক্ষিপ্ত থাকায় পিচু হটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তুমুল সংঘর্ষে মিরপুর বাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
আহতদের উদ্ধার করে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালসহ বিভিন্নস্থানে চিকিৎসা দেয়া হয়।
রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাহুবল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফেজ কামরুল ইসলাম, মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামীম আহমদ, লামাতাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উস্তার মিয়াসহ স্থানীয় লোকজনের জোর চেষ্টার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে উভয় পক্ষের লোকজনকে বাড়িতে পাঠানো হয়।
মিরপুর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মোতাব্বির হোসেন বলেন, সংঘর্ষে বাজারের অনেক দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমানকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।