বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা এখানে এসেছিলাম শহিদ বোন সুমাইয়ার অবুঝ শিশুকে দেখতে। যার মুখে এখনো ভাষা ফুটে নাই। এই শিশুর যখন মুখে ভাষা ফুটবে তখন তার মা ডাকার মতো কেউ রইল না। এই শিশুর মতো যারা মা হারিয়েছে, যারা বাবা হারিয়েছে, যারা নিজেদের সন্তানদের হারিয়েছে- আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা দেন।
নিহত সুমাইয়ার মেয়ে সুয়াইবার দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, এই অবুঝ বাচ্চার এখন থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত পড়াশোনাসহ যাবতীয় দায়িত্ব আমরা নিলাম।
বুধবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি নতুন মহল্লার দোয়েল চত্বর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করা তরুণীর মায়ের বাড়িতে এসে ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা জালিমের হাতে মৃত্যুবরণ করলেন আল্লাহ তাদের শহিদের মর্যাদা দান করবেন। এলাকাবাসীর কাছে অনুরোধ রইল- জুলুমের হাত থেকে বাঁচতে হাজারও মানুষ তাদের বুক পেতে দিয়েছেন। এখন যদি কেউ আবারো এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে তা শহিদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি হবে। আর যেন তা না করতে পারে সেজন্য আপনার অলিগলিতে, এলাকায় এলাকায় তাদের হাত অবশ করে দেবেন। লুটতরাজ, চাঁদাবাজি করতে আসলে তাদের কোনো ছাড় দেবেন না। ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। এবার জনগণ প্রমাণ করে দিয়েছে তারা অন্যায়ের সঙ্গে কোনো আপস করে না। তারা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে প্রমাণ করল তারা দেশে শান্তি চায়। আমরা যেন দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারি আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করেন।
এ সময় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটিসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছিল। এতে উত্তাল ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড় থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত। পাইনাদী নতুন মহল্লার দোয়েল চত্বর এলাকায় দৌড়াদৌড়ির আওয়াজ শুনে বিকাল বেলায় মায়ের ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাহিরের দৃশ্য দেখতে এসে গুলি লেগে নিহত হন সুমাইয়া। বিয়ের দুই বছরের মাথায় প্রথম সন্তানের মা হয়েছিলেন সুমাইয়া।