ঢাকা ০৬:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

ইসরাইলের নতুন আতঙ্ক হুথিদের তৈরি ‘ফিলিস্তিন’ ক্ষেপণাস্ত্র!

দীর্ঘদিন ধরে গাজায় সামরিক আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এর জবাব দিয়েছে যাচ্ছে হামাস ও ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। হামলায় এবার প্রথমবারের মতো নতুন একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার শুরু করেছে হুথি। নতুন ওই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম ‘ফিলিস্তিন’। এ দিয়ে গত এক সপ্তাহে ইসরাইলে অন্তত দুবার হামলা চালানো হয়েছে, যা পুরো অঞ্চলে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

সোমবার (১০ জুন) দক্ষিণ ইসরাইলের বন্দর শহর এইলাতে ‘ফিলিস্তিন’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হুথি বিদ্রোহীরা। খবর এপির।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সবশেষ সোমবার (১০ জুন) দক্ষিণ ইসরাইলের বন্দর শহর এইলাতে ‘ফিলিস্তিন’ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানায় হুথি বিদ্রোহীরা। তবে এতে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এর আগে, গত সপ্তাহে (৪ জুন) এ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একই শহরে প্রথম হামলা চালানো হয়। ওইদিনের হামলায় কিছু ড্রোনও ব্যবহার করা হয় বলে আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

ওইদিন হামলার পর টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে হুথি বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেন, ‌‘ফিলিস্তিন’ নামে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইল অধিকৃত এইলাত বন্দরের একটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। হামলার মূল লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।

আরব নিউজের প্রতিবেদন মতে, ওইদিন হুথির হামলা শুরুর পরপরই এইলাতে সাইরেন বাজিয়ে ইসরাইলিদের সতর্ক করা হয় এবং তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠায় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

হামলার কথা স্বীকার করলেও তাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহত হয়েছে তা জানায়নি ইসরাইল। তবে হুতি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বীকার না করলেও এসব হামলায় ইসরাইলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। এরপর গত প্রায় ৮ মাস ধরে পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর রীতিমতো গণহত্যা চলছে।

এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৯ হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ৮২ হাজারের বেশি। নিখোঁজ রয়েছেন আরও প্রায় ১৫ হাজার।

ইসরাইলের এ বর্বর আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী ও সামরিক বাহিনী লোহিত সাগরে ইসরাইলি জাহাজে হামলা শুরু করে।

এক পর্যায়ে তারা ইসরাইল অভিমুখী যেকোনো দেশের জাহাজকে টার্গেট করার ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর জাহাজ ও ড্রোন লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইয়েমেনের সশস্ত্র এ গোষ্ঠী।

ইসরাইলকে বাঁচাতে হুথিদের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস ধরে পাল্টা অভিযান চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য সামরিক জোট। এতে এরই মধ্যে বহু হুথি যোদ্ধা হতাহত হয়েছে।

কিন্তু তাদের কোনোভাবেই দমানো যাচ্ছে না। এডেন সাগর থেকে লোহিত সাগর পর্যন্ত ইসরাইলি ও পশ্চিমা জাহাজ ও স্বার্থ টার্গেট করে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে হুতিরা।

ইসরাইলি হামলায় নিষ্পেষিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জনাতেই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফিলিস্তিন’। বলা হচ্ছে, ইরানের ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে এর মিল রয়েছে, যা হাইপারসনিক গতিতে আঘাত হানতে পারে।

গত বুধবার (৬ জুন) আনসারুল্লাহ মিলিটারি মিডিয়া নামে এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হয়। তাতে একটি ক্ষেপণাস্ত্র দেখানো হয়, যেটাকে হুতিরা ‘ফিলিস্তিন’ বলছে।

ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেড বা মাথার দিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক কেফিয়াহ স্কার্ফের স্টাইলে আঁকা রয়েছে। ভিডিওতে ক্ষেপণাস্ত্রটি ধীরে ফায়ারিং তথা উৎক্ষেপণের জন্য উন্নীত করা ও এরপর উৎক্ষেপণ করতে দেখা যায়। এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি করেছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

ইসরাইলের নতুন আতঙ্ক হুথিদের তৈরি ‘ফিলিস্তিন’ ক্ষেপণাস্ত্র!

আপডেট সময় ০৯:৪৬:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪

দীর্ঘদিন ধরে গাজায় সামরিক আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এর জবাব দিয়েছে যাচ্ছে হামাস ও ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। হামলায় এবার প্রথমবারের মতো নতুন একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার শুরু করেছে হুথি। নতুন ওই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম ‘ফিলিস্তিন’। এ দিয়ে গত এক সপ্তাহে ইসরাইলে অন্তত দুবার হামলা চালানো হয়েছে, যা পুরো অঞ্চলে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

সোমবার (১০ জুন) দক্ষিণ ইসরাইলের বন্দর শহর এইলাতে ‘ফিলিস্তিন’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হুথি বিদ্রোহীরা। খবর এপির।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সবশেষ সোমবার (১০ জুন) দক্ষিণ ইসরাইলের বন্দর শহর এইলাতে ‘ফিলিস্তিন’ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানায় হুথি বিদ্রোহীরা। তবে এতে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এর আগে, গত সপ্তাহে (৪ জুন) এ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একই শহরে প্রথম হামলা চালানো হয়। ওইদিনের হামলায় কিছু ড্রোনও ব্যবহার করা হয় বলে আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

ওইদিন হামলার পর টেলিভিশনে প্রচারিত এক বিবৃতিতে হুথি বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেন, ‌‘ফিলিস্তিন’ নামে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইল অধিকৃত এইলাত বন্দরের একটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। হামলার মূল লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে।

আরব নিউজের প্রতিবেদন মতে, ওইদিন হুথির হামলা শুরুর পরপরই এইলাতে সাইরেন বাজিয়ে ইসরাইলিদের সতর্ক করা হয় এবং তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠায় ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

হামলার কথা স্বীকার করলেও তাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহত হয়েছে তা জানায়নি ইসরাইল। তবে হুতি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বীকার না করলেও এসব হামলায় ইসরাইলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। এরপর গত প্রায় ৮ মাস ধরে পশ্চিম তীর ও গাজার ফিলিস্তিনিদের ওপর রীতিমতো গণহত্যা চলছে।

এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৯ হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ৮২ হাজারের বেশি। নিখোঁজ রয়েছেন আরও প্রায় ১৫ হাজার।

ইসরাইলের এ বর্বর আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী ও সামরিক বাহিনী লোহিত সাগরে ইসরাইলি জাহাজে হামলা শুরু করে।

এক পর্যায়ে তারা ইসরাইল অভিমুখী যেকোনো দেশের জাহাজকে টার্গেট করার ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর জাহাজ ও ড্রোন লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইয়েমেনের সশস্ত্র এ গোষ্ঠী।

ইসরাইলকে বাঁচাতে হুথিদের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাস ধরে পাল্টা অভিযান চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য সামরিক জোট। এতে এরই মধ্যে বহু হুথি যোদ্ধা হতাহত হয়েছে।

কিন্তু তাদের কোনোভাবেই দমানো যাচ্ছে না। এডেন সাগর থেকে লোহিত সাগর পর্যন্ত ইসরাইলি ও পশ্চিমা জাহাজ ও স্বার্থ টার্গেট করে নিয়মিত হামলা চালাচ্ছে হুতিরা।

ইসরাইলি হামলায় নিষ্পেষিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জনাতেই নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফিলিস্তিন’। বলা হচ্ছে, ইরানের ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে এর মিল রয়েছে, যা হাইপারসনিক গতিতে আঘাত হানতে পারে।

গত বুধবার (৬ জুন) আনসারুল্লাহ মিলিটারি মিডিয়া নামে এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হয়। তাতে একটি ক্ষেপণাস্ত্র দেখানো হয়, যেটাকে হুতিরা ‘ফিলিস্তিন’ বলছে।

ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেড বা মাথার দিকে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের প্রতীক কেফিয়াহ স্কার্ফের স্টাইলে আঁকা রয়েছে। ভিডিওতে ক্ষেপণাস্ত্রটি ধীরে ফায়ারিং তথা উৎক্ষেপণের জন্য উন্নীত করা ও এরপর উৎক্ষেপণ করতে দেখা যায়। এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি করেছে।