ঢাকা ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

হেফাজত নেতা হাফেজ আব্দুল মাবুদকে তুলে নিয়ে গেল কারা?

হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলার যুগ্ম সম্পাদক হাফেজ আব্দুল মাবুদকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারীরা বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার মেখল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পজারী তালুকদার বাড়ি থেকে তাকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। হাফেজ আব্দুল মাবুদ ওই এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।

রোববার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই হেফাজত নেতার মা সাজেদা বেগম। তিনি জানান, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারীরা বাসা থেকে তার ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে।

এ সময় ছেলেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন— মায়ের এমন প্রশ্নের উত্তরে পোশাকধারীরা জানায়, আপনার ছেলের কাছে কিছু তথ্য আছে। তাই তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে তাকে ফের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হবে। তবে তার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার ২০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও সন্তানের সন্ধান পাননি বলে জানান আব্দুল মাবুদের মা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হেফাজত নেতা আব্দুল মাবুদের চাচাতো ভাই মো. শাফায়েত বলেন, আমার জেঠাতো ভাই আব্দুল মাবুদ হাটাহাজারী বাসস্টেশন কলাবাগানস্থ ‘পাওয়ার নেট ইলেকট্রনিক্স’-এর স্বত্বাধিকারী। শনিবার রাত ১০টার দিকে আমি বাসায় আসি এবং এক ঘণ্টা পরে ১১টার দিকে বড় ভাই হেফাজত নেতা আব্দুল মাবুদ বাসায় আসেন। ঘণ্টাখানেক পর গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে কয়েকজন পুরুষ ও নারী সদস্য বাসায় প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের একটি রুমে নিয়ে গিয়ে সবার মোবাইলগুলো নিয়ে নেয়।

তিনি আরও জানান, এরপর বড় ভাইয়ের রুমে গিয়ে আলমারি থেকে শুরু করে সব জায়গায় কি জানি খুঁজতে গিয়ে সবকিছু তছনছ করে ফেলে। একপর্যায়ে ভাইকে তারা ঘর থেকে বের করে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে, তারা প্রথমে গোয়েন্দা সংস্থার কথা বললেও পরে হাটহাজারী থানায় নিয়ে যাচ্ছে বলে জানায়। এ সময় আমি তাদের সঙ্গে হাটহাজারী থানায় যেতে চাইলেও আমাকে বাধা দেওয়া হয়। তারা ভাইকে নিয়ে একটি নোহা গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পিছু নিয়ে দেখি তাদের গাড়ি চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের ইছাপুর বাজারের মরিয়ম ক্লাবের সামনে অবস্থান করছে। এরপর গাড়িটি কোন দিকে গেল তা আমি আর দেখতে পাইনি।

এদিকে হেফাজত নেতা আব্দুল মাবুদের পরিবারের সদস্যরা হাটহাজারী মডেল থানায় এ বিষয়ে জিডি করতে চাইলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন তারা।

হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোয়েব আহমেদ খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন।

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরিস জানান, দেশে এখন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নেই। এমন সময় আব্দুল মাবুদ গুম হাওয়ায় জনমনে আরেকটি নতুন নাটকের আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা অনতিবিলম্বে এ হেফাজত নেতার মুক্তি ও সন্ধান চাই।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

হেফাজত নেতা হাফেজ আব্দুল মাবুদকে তুলে নিয়ে গেল কারা?

আপডেট সময় ০২:৩২:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলার যুগ্ম সম্পাদক হাফেজ আব্দুল মাবুদকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারীরা বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার মেখল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের পজারী তালুকদার বাড়ি থেকে তাকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবার অভিযোগ করেছে। হাফেজ আব্দুল মাবুদ ওই এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।

রোববার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই হেফাজত নেতার মা সাজেদা বেগম। তিনি জানান, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারীরা বাসা থেকে তার ছেলেকে তুলে নিয়ে গেছে।

এ সময় ছেলেকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন— মায়ের এমন প্রশ্নের উত্তরে পোশাকধারীরা জানায়, আপনার ছেলের কাছে কিছু তথ্য আছে। তাই তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে তাকে ফের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হবে। তবে তার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার ২০ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও সন্তানের সন্ধান পাননি বলে জানান আব্দুল মাবুদের মা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হেফাজত নেতা আব্দুল মাবুদের চাচাতো ভাই মো. শাফায়েত বলেন, আমার জেঠাতো ভাই আব্দুল মাবুদ হাটাহাজারী বাসস্টেশন কলাবাগানস্থ ‘পাওয়ার নেট ইলেকট্রনিক্স’-এর স্বত্বাধিকারী। শনিবার রাত ১০টার দিকে আমি বাসায় আসি এবং এক ঘণ্টা পরে ১১টার দিকে বড় ভাই হেফাজত নেতা আব্দুল মাবুদ বাসায় আসেন। ঘণ্টাখানেক পর গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে কয়েকজন পুরুষ ও নারী সদস্য বাসায় প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের একটি রুমে নিয়ে গিয়ে সবার মোবাইলগুলো নিয়ে নেয়।

তিনি আরও জানান, এরপর বড় ভাইয়ের রুমে গিয়ে আলমারি থেকে শুরু করে সব জায়গায় কি জানি খুঁজতে গিয়ে সবকিছু তছনছ করে ফেলে। একপর্যায়ে ভাইকে তারা ঘর থেকে বের করে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে, তারা প্রথমে গোয়েন্দা সংস্থার কথা বললেও পরে হাটহাজারী থানায় নিয়ে যাচ্ছে বলে জানায়। এ সময় আমি তাদের সঙ্গে হাটহাজারী থানায় যেতে চাইলেও আমাকে বাধা দেওয়া হয়। তারা ভাইকে নিয়ে একটি নোহা গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের পিছু নিয়ে দেখি তাদের গাড়ি চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের ইছাপুর বাজারের মরিয়ম ক্লাবের সামনে অবস্থান করছে। এরপর গাড়িটি কোন দিকে গেল তা আমি আর দেখতে পাইনি।

এদিকে হেফাজত নেতা আব্দুল মাবুদের পরিবারের সদস্যরা হাটহাজারী মডেল থানায় এ বিষয়ে জিডি করতে চাইলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন তারা।

হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোয়েব আহমেদ খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন।

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা মীর ইদরিস জানান, দেশে এখন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নেই। এমন সময় আব্দুল মাবুদ গুম হাওয়ায় জনমনে আরেকটি নতুন নাটকের আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা অনতিবিলম্বে এ হেফাজত নেতার মুক্তি ও সন্ধান চাই।