ঢাকা ০৮:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা। বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

এবার রোজায় খেজুরের দাম এত বেশি কেন?

দাম নির্ধারণ করে দিয়েও দেশে খেজুরের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না সরকার। তাছাড়া রোজার আগেই ইফতারিতে অন্যতম জনপ্রিয় খেজুরের শুল্কও কমানো হয়েছে। তবুও রোজায় অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীদের অতি লাভের প্রবণতার কারণেই এবার খেজুরের দাম হু হু করে বেড়েছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি খেজুরের আমদানি শুল্ক পঁচিশ শতাংশ থেকে কমিয়ে পনের শতাংশ করার পরও বাজারে যখন খেজুরের দাম বেড়েই চলছিল, তখন পরিস্থিতি সামলাতে রোজা শুরুর আগের দিন বহুল ব্যবহৃত দুই ধরনের খেজুরের দাম বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে যেখানে শুল্ক ছিল না সেখানে অতি মাত্রায় শুল্ক আরোপ করতে গিয়েই আন্তর্জাতিক বাজারে খেজুরের দাম কম থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের বাজারে খেজুরের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। তাদের দাবি, বাজারের সবচেয়ে কম দামি খেজুরেও প্রতি কেজিতে ৫২ টাকা কর নিচ্ছে সরকার, ফলে অন্য সব খরচ মিলিয়ে একশ টাকার খেজুর হয়ে যাচ্ছে আড়াইশ টাকা।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুও বলেছেন, আগে ট্যাক্স-ফ্রি থাকলেও এবার ডলার বাইরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে এনবিআর শুল্ক আরোপ করেছে। তিনি বিবিসিকে বলেন, আমদানি মূল্য, ডলারের দাম এবং ট্যাক্স তিনটি মিলেই খেজুরের দাম এ অবস্থায় গেছে। আমরা মানুষকে স্বস্তি দিতে বেশি ব্যবহৃত হয় এমন দুই ধরনের খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি।

যদিও কোনো কোনো আমদানিকারক খেজুর এনেও পর্যাপ্ত পরিমাণে বাজারে ছাড়ছেন না বলেও অভিযোগ আছে, তবে ব্যবসায়ীরা এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন।

দাম এত বেশি কেন

অভিযোগ উঠেছে যে অতি মাত্রায় শুল্কের পাশাপাশি রমজানে অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীদের অতি লাভের প্রবণতার কারণেই এবার খেজুরের দাম হু হু করে বেড়েছে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতি মাত্রায় শুল্ক নির্ধারণের কারণেই বাংলাদেশের বাজারে খেজুরের এত দাম।

বছরের শুরু থেকেই বাজারে খেজুরের দাম বাড়তে থাকলে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এরপর গত মাসের শুরুতে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুল্ক কমানোর নির্দেশনা পায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর।

এর আগে খেজুরের ওপর খুব একটা শুল্ক ছিল না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০২২ সালে এসে আমদানি নিয়ন্ত্রণের জন্য শুল্ক আরোপ করে সরকার। এতে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ, মূসক/ভ্যাট পনের শতাংশ, পাঁচ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, পাঁচ শতাংশ অগ্রিম কর এবং তিন শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করে সরকার।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এক হাজার ডলারের খেজুরের জন্য এখন চার হাজার ডলার ট্যারিফ ভ্যালু দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি বেড়েছে সংশ্লিষ্ট অন্য খরচগুলোও।

বিবিসিকে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফলে একশ টাকা দামের খেজুর এমনি চারশো টাকা হয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে পরিবহণ ও বিপণন খরচসহ অন্য খরচ আছে। ৯০ টাকার ডলার এখন ১২২ টাকা। এসবই দাম আকাশচুম্বী হওয়ার কারণ।

রোজার এক মাস আগেই দাম বৃদ্ধির এমন পরিস্থিতি দেখে শুল্ক কমানোর নির্দেশনা পায় এনবিআর। এরপর গত ৮ ফেব্রুয়ারি দশ শতাংশ শুল্ক কমায় এনবিআর। শুল্ক কমানোর পর গত ১০ মার্চ পর্যন্ত এক মাসে দেশে খেজুর আমদানি হয়েছে ৩৮ হাজার টনের সামান্য বেশি।

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এর অর্ধেকই হলো বস্তায় করে আনা খেজুর। আর এর এক চতুর্থাংশ হলো জাইদি খেজুর। মূলত এ দুই ধরনের খেজুরই বাংলাদেশে বেশি আমদানি হয় বলে জানিয়েছেন সিরাজুল ইসলাম।

কিন্তু রোজার আগে এসব খেজুরের দাম বাড়তে থাকলে ১১ মার্চ প্রজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানের খেজুর ১৫০-১৬৫ টাকা এবং জাইদি খেজুর ১৭০-১৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। যদিও বাজারে এ দামে খেজুর পাওয়া যায় না বলেই অভিযোগ ভোক্তাদের। বরং কিছু কিছু বাজারে এসব খেজুরই তিনশ-চারশো টাকা বিক্রির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

সিরাজুল ইসলাম বলেছিলেন, আগে এসব মাঝারি মানের খেজুর ৮০-১৫০ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম আমরা। এবার ১০০ টাকার খেজুরে শুল্কই হলো দেড়শ টাকা।

খেজুর আসে কোথা থেকে?

বাংলাদেশে খেজুর আসে মূলত ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তিউনিসিয়া ও আলজেরিয়া থেকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত জাইদি খেজুর আমদানি করা হয় ইরাক থেকে। এছাড়া সৌদি আরব, মিশরসহ আরও কিছু দেশ থেকে অল্প পরিমাণে খেজুর আসে এ দেশের বাজারে।

বাংলাদেশের বাজারে দামি খেজুর অল্প বিক্রি হলেও সেগুলো আমদানি মূল্যের কয়েকগুণ দামে বিক্রির অভিযোগ আছে।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে খেজুর আসার পরিমাণ খুব একটা বেশি নয়। সাধারণত উচ্চমূল্যের খেজুরগুলো সেখান থেকে আসে। সহজলভ্য খেজুরের জন্য আমাদের পছন্দ ইরাক। বিশেষ করে দাম কম হওয়ায় জাইদি খেজুর সেখান থেকেই আনে ব্যবসায়ীরা।

দেশের বাজারে ২০-২৫ ধরনের খেজুর পাওয়া যায়। এর মধ্যে বস্তায় করে আসা খোলা খেজুর যেমন ২০০-৩০০ টাকা কেজিতে পাওয়া যায়, তেমনি আবার উচ্চমূল্যের খেজুরের মধ্যে আজওয়ার কেজি দুই হাজার টাকার বেশি। যদিও এসব খেজুরের কেজি প্রতি আমদানি মূল্য পাঁচশ টাকার মধ্যেই।

কর ও পরিবহণ খরচ মিলে এর খুচরা মূল্য ৮০০-৯০০ টাকার মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও বাজারে কেন এটি দ্বিগুণেরও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের, তার কোনও জবাব পাওয়া যায় না। এছাড়া দামি খেজুরের মধ্যে মরিয়ম ও মেডজুল বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের কাছে কিছুটা জনপ্রিয়। তবে গত এক মাসে এ ধরনের খেজুর এসেছে আড়াইশ টনেরও কম।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, এনবিআর শুল্কের জন্য কয়েকটা স্ল্যাব করে দিয়েছে। এখন ব্যবসায়ীরা যেই দামেই আমদানি করুক না কেন এই কয়েকটি স্ল্যাবের মধ্যে ফেলে শুল্ক নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, এখানেই ব্যবসায়ীদের আপত্তি। আমরা ব্যবসায় কোনো হস্তক্ষেপ করছি না। তবে জনজীবনে স্বস্তি আনতে যৌক্তিক দাম নির্ধারণে উৎসাহিত করছি। সেজন্যই দুই ধরনের খেজুরের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে- মূলত প্যাকেটজাত, কার্টন, বস্তায় ভরা শুকনো ও ভেজা- এই চার ক্যাটাগরিতে রেখে খেজুরের শুল্ক নির্ধারণ করা হয়।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

এবার রোজায় খেজুরের দাম এত বেশি কেন?

আপডেট সময় ০৪:৩৬:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ ২০২৪

দাম নির্ধারণ করে দিয়েও দেশে খেজুরের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না সরকার। তাছাড়া রোজার আগেই ইফতারিতে অন্যতম জনপ্রিয় খেজুরের শুল্কও কমানো হয়েছে। তবুও রোজায় অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীদের অতি লাভের প্রবণতার কারণেই এবার খেজুরের দাম হু হু করে বেড়েছে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি খেজুরের আমদানি শুল্ক পঁচিশ শতাংশ থেকে কমিয়ে পনের শতাংশ করার পরও বাজারে যখন খেজুরের দাম বেড়েই চলছিল, তখন পরিস্থিতি সামলাতে রোজা শুরুর আগের দিন বহুল ব্যবহৃত দুই ধরনের খেজুরের দাম বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে যেখানে শুল্ক ছিল না সেখানে অতি মাত্রায় শুল্ক আরোপ করতে গিয়েই আন্তর্জাতিক বাজারে খেজুরের দাম কম থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের বাজারে খেজুরের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। তাদের দাবি, বাজারের সবচেয়ে কম দামি খেজুরেও প্রতি কেজিতে ৫২ টাকা কর নিচ্ছে সরকার, ফলে অন্য সব খরচ মিলিয়ে একশ টাকার খেজুর হয়ে যাচ্ছে আড়াইশ টাকা।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুও বলেছেন, আগে ট্যাক্স-ফ্রি থাকলেও এবার ডলার বাইরে চলে যাওয়াসহ নানা কারণে এনবিআর শুল্ক আরোপ করেছে। তিনি বিবিসিকে বলেন, আমদানি মূল্য, ডলারের দাম এবং ট্যাক্স তিনটি মিলেই খেজুরের দাম এ অবস্থায় গেছে। আমরা মানুষকে স্বস্তি দিতে বেশি ব্যবহৃত হয় এমন দুই ধরনের খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি।

যদিও কোনো কোনো আমদানিকারক খেজুর এনেও পর্যাপ্ত পরিমাণে বাজারে ছাড়ছেন না বলেও অভিযোগ আছে, তবে ব্যবসায়ীরা এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন।

দাম এত বেশি কেন

অভিযোগ উঠেছে যে অতি মাত্রায় শুল্কের পাশাপাশি রমজানে অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীদের অতি লাভের প্রবণতার কারণেই এবার খেজুরের দাম হু হু করে বেড়েছে।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতি মাত্রায় শুল্ক নির্ধারণের কারণেই বাংলাদেশের বাজারে খেজুরের এত দাম।

বছরের শুরু থেকেই বাজারে খেজুরের দাম বাড়তে থাকলে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এরপর গত মাসের শুরুতে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে শুল্ক কমানোর নির্দেশনা পায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর।

এর আগে খেজুরের ওপর খুব একটা শুল্ক ছিল না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২০২২ সালে এসে আমদানি নিয়ন্ত্রণের জন্য শুল্ক আরোপ করে সরকার। এতে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ, মূসক/ভ্যাট পনের শতাংশ, পাঁচ শতাংশ অগ্রিম আয়কর, পাঁচ শতাংশ অগ্রিম কর এবং তিন শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করে সরকার।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এক হাজার ডলারের খেজুরের জন্য এখন চার হাজার ডলার ট্যারিফ ভ্যালু দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি বেড়েছে সংশ্লিষ্ট অন্য খরচগুলোও।

বিবিসিকে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ফলে একশ টাকা দামের খেজুর এমনি চারশো টাকা হয়ে যাচ্ছে। এর সঙ্গে পরিবহণ ও বিপণন খরচসহ অন্য খরচ আছে। ৯০ টাকার ডলার এখন ১২২ টাকা। এসবই দাম আকাশচুম্বী হওয়ার কারণ।

রোজার এক মাস আগেই দাম বৃদ্ধির এমন পরিস্থিতি দেখে শুল্ক কমানোর নির্দেশনা পায় এনবিআর। এরপর গত ৮ ফেব্রুয়ারি দশ শতাংশ শুল্ক কমায় এনবিআর। শুল্ক কমানোর পর গত ১০ মার্চ পর্যন্ত এক মাসে দেশে খেজুর আমদানি হয়েছে ৩৮ হাজার টনের সামান্য বেশি।

ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এর অর্ধেকই হলো বস্তায় করে আনা খেজুর। আর এর এক চতুর্থাংশ হলো জাইদি খেজুর। মূলত এ দুই ধরনের খেজুরই বাংলাদেশে বেশি আমদানি হয় বলে জানিয়েছেন সিরাজুল ইসলাম।

কিন্তু রোজার আগে এসব খেজুরের দাম বাড়তে থাকলে ১১ মার্চ প্রজ্ঞাপন দিয়ে সাধারণ মানের খেজুর ১৫০-১৬৫ টাকা এবং জাইদি খেজুর ১৭০-১৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। যদিও বাজারে এ দামে খেজুর পাওয়া যায় না বলেই অভিযোগ ভোক্তাদের। বরং কিছু কিছু বাজারে এসব খেজুরই তিনশ-চারশো টাকা বিক্রির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

সিরাজুল ইসলাম বলেছিলেন, আগে এসব মাঝারি মানের খেজুর ৮০-১৫০ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম আমরা। এবার ১০০ টাকার খেজুরে শুল্কই হলো দেড়শ টাকা।

খেজুর আসে কোথা থেকে?

বাংলাদেশে খেজুর আসে মূলত ইরাক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তিউনিসিয়া ও আলজেরিয়া থেকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত জাইদি খেজুর আমদানি করা হয় ইরাক থেকে। এছাড়া সৌদি আরব, মিশরসহ আরও কিছু দেশ থেকে অল্প পরিমাণে খেজুর আসে এ দেশের বাজারে।

বাংলাদেশের বাজারে দামি খেজুর অল্প বিক্রি হলেও সেগুলো আমদানি মূল্যের কয়েকগুণ দামে বিক্রির অভিযোগ আছে।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে খেজুর আসার পরিমাণ খুব একটা বেশি নয়। সাধারণত উচ্চমূল্যের খেজুরগুলো সেখান থেকে আসে। সহজলভ্য খেজুরের জন্য আমাদের পছন্দ ইরাক। বিশেষ করে দাম কম হওয়ায় জাইদি খেজুর সেখান থেকেই আনে ব্যবসায়ীরা।

দেশের বাজারে ২০-২৫ ধরনের খেজুর পাওয়া যায়। এর মধ্যে বস্তায় করে আসা খোলা খেজুর যেমন ২০০-৩০০ টাকা কেজিতে পাওয়া যায়, তেমনি আবার উচ্চমূল্যের খেজুরের মধ্যে আজওয়ার কেজি দুই হাজার টাকার বেশি। যদিও এসব খেজুরের কেজি প্রতি আমদানি মূল্য পাঁচশ টাকার মধ্যেই।

কর ও পরিবহণ খরচ মিলে এর খুচরা মূল্য ৮০০-৯০০ টাকার মধ্যে হওয়ার কথা থাকলেও বাজারে কেন এটি দ্বিগুণেরও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের, তার কোনও জবাব পাওয়া যায় না। এছাড়া দামি খেজুরের মধ্যে মরিয়ম ও মেডজুল বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের কাছে কিছুটা জনপ্রিয়। তবে গত এক মাসে এ ধরনের খেজুর এসেছে আড়াইশ টনেরও কম।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, এনবিআর শুল্কের জন্য কয়েকটা স্ল্যাব করে দিয়েছে। এখন ব্যবসায়ীরা যেই দামেই আমদানি করুক না কেন এই কয়েকটি স্ল্যাবের মধ্যে ফেলে শুল্ক নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, এখানেই ব্যবসায়ীদের আপত্তি। আমরা ব্যবসায় কোনো হস্তক্ষেপ করছি না। তবে জনজীবনে স্বস্তি আনতে যৌক্তিক দাম নির্ধারণে উৎসাহিত করছি। সেজন্যই দুই ধরনের খেজুরের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

জানা গেছে- মূলত প্যাকেটজাত, কার্টন, বস্তায় ভরা শুকনো ও ভেজা- এই চার ক্যাটাগরিতে রেখে খেজুরের শুল্ক নির্ধারণ করা হয়।