ঢাকা ০২:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা। বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

‘আমার বুক চিরে দেখেন, বৃষ্টি আমারই মেয়ে’

বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় নিয়ে জটিলতা যেন কাটছেই না। তবে তিনিই যে কুষ্টিয়ার বৃষ্টি খাতুন, তা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। অনুসন্ধানে মিলেছে এমনই তথ্য।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বনগ্রাম পশ্চিমপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় সেখানে চলছে শোকের মাতম। বিলাপ করছেন মা বিউটি পারভীন। আর পাশে অঝোরে কাঁদছে ছোট দুই বোন ঝর্ণা ও বর্ষা। নিকটাত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশীরা তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতেও তাদের সঙ্গে কথা হয়। সুযোগ বুঝে কথা হলো ঝর্ণার সঙ্গে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় বৃষ্টির নাম-পরিচয় নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে বিষয়টি আসলে কী? অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তার জবাব— বৃষ্টি আমাদের আদরের বড় বোন। এর চেয়ে বড় পরিচয় আর কিইবা হতে পারে। তবে প্রমাণ হিসেবে অনেক কিছুই উপস্থাপন করলেন তিনি।

এসএসসির রেজিস্ট্রেশন কার্ড, এনআইডির ফটোকপি, ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার সনদ। সব কিছুতেই বৃষ্টি খাতুনের নাম রয়েছে। বাবার নাম সবুজ শেখ। এরই মধ্যে ছোটবোন বর্ষা খাতুনও আসেন। বড়বোন বৃষ্টির সঙ্গে তার নানা স্মৃতিময় তথ্য বলতে থাকেন। গোটা পাড়াতেই যেন শোকাচ্ছন্ন আবহ। গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে অনেকেই এগিয়ে আসেন, বৃষ্টির পরিচয় নিয়ে যা হচ্ছে তা ঠিক নয় বলেও দাবি তাদের।

এর পর কথা হয় বৃষ্টির (অভিশ্রুতি শাস্ত্রী) মায়ের সঙ্গে। কথা বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিছু বলার আগেই তিনি বলেন, বৃষ্টি আমার মেয়ে। সে অন্য কারও মেয়ে হতে পারে না। আমার বুক চিরে দেখেন, বৃষ্টি আমারই মেয়ে।

আমার বুক চিরে প্রয়োজনে পরীক্ষা করেন। দয়া করে যেন আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন। এভাবেই বেশ কিছু সময় বিলাপ করতে থাকেন তিনি।

কথা হয় বেদবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। একই সঙ্গে তিনি বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও।

তিনি জানান, রাজধানী ঢাকায় বেইলি রোডে একটি ভবনে যে আগুনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে মারা গেছেন আমাদের মেয়ে বৃষ্টি। গণমাধ্যমে তার নাম শোনা যাচ্ছে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার বাড়ি বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ায়। বাবার নাম সবুজ শেখ। মা বিউটি বেগম। জন্ম নিবন্ধনও তার পরিষদ থেকেই নেওয়া। এনআইডিও একই নামে।

এনআইডি’র তথ্যমতে, বৃষ্টির পুরো নাম বৃষ্টি খাতুন। জন্ম ১৯৯৮ সালের ৯ মার্চ। বাবার নাম সবুজ শেখ এবং মায়ের নাম বিউটি বেগম। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ভোটার নম্বর, ভোটার এরিয়া কোর্ড, সিরিয়াল নম্বর, ভোটার এলাকা সবই বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ার। এনআইডিতে লিঙ্গ পরিচয় অবিবাহিত।

চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, মাস-তিনেক আগেও বৃষ্টির সঙ্গে ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় আমার দেখা হয়। আমি তার সঙ্গে ছবিও তুলি। যে ছবি আমার কাছে রয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

‘আমার বুক চিরে দেখেন, বৃষ্টি আমারই মেয়ে’

আপডেট সময় ০১:৫৪:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪

বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় নিয়ে জটিলতা যেন কাটছেই না। তবে তিনিই যে কুষ্টিয়ার বৃষ্টি খাতুন, তা নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। অনুসন্ধানে মিলেছে এমনই তথ্য।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বনগ্রাম পশ্চিমপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় সেখানে চলছে শোকের মাতম। বিলাপ করছেন মা বিউটি পারভীন। আর পাশে অঝোরে কাঁদছে ছোট দুই বোন ঝর্ণা ও বর্ষা। নিকটাত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশীরা তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতেও তাদের সঙ্গে কথা হয়। সুযোগ বুঝে কথা হলো ঝর্ণার সঙ্গে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় বৃষ্টির নাম-পরিচয় নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে বিষয়টি আসলে কী? অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তার জবাব— বৃষ্টি আমাদের আদরের বড় বোন। এর চেয়ে বড় পরিচয় আর কিইবা হতে পারে। তবে প্রমাণ হিসেবে অনেক কিছুই উপস্থাপন করলেন তিনি।

এসএসসির রেজিস্ট্রেশন কার্ড, এনআইডির ফটোকপি, ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার সনদ। সব কিছুতেই বৃষ্টি খাতুনের নাম রয়েছে। বাবার নাম সবুজ শেখ। এরই মধ্যে ছোটবোন বর্ষা খাতুনও আসেন। বড়বোন বৃষ্টির সঙ্গে তার নানা স্মৃতিময় তথ্য বলতে থাকেন। গোটা পাড়াতেই যেন শোকাচ্ছন্ন আবহ। গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে অনেকেই এগিয়ে আসেন, বৃষ্টির পরিচয় নিয়ে যা হচ্ছে তা ঠিক নয় বলেও দাবি তাদের।

এর পর কথা হয় বৃষ্টির (অভিশ্রুতি শাস্ত্রী) মায়ের সঙ্গে। কথা বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিছু বলার আগেই তিনি বলেন, বৃষ্টি আমার মেয়ে। সে অন্য কারও মেয়ে হতে পারে না। আমার বুক চিরে দেখেন, বৃষ্টি আমারই মেয়ে।

আমার বুক চিরে প্রয়োজনে পরীক্ষা করেন। দয়া করে যেন আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন। এভাবেই বেশ কিছু সময় বিলাপ করতে থাকেন তিনি।

কথা হয় বেদবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের সঙ্গে। একই সঙ্গে তিনি বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও।

তিনি জানান, রাজধানী ঢাকায় বেইলি রোডে একটি ভবনে যে আগুনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে মারা গেছেন আমাদের মেয়ে বৃষ্টি। গণমাধ্যমে তার নাম শোনা যাচ্ছে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার বাড়ি বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ায়। বাবার নাম সবুজ শেখ। মা বিউটি বেগম। জন্ম নিবন্ধনও তার পরিষদ থেকেই নেওয়া। এনআইডিও একই নামে।

এনআইডি’র তথ্যমতে, বৃষ্টির পুরো নাম বৃষ্টি খাতুন। জন্ম ১৯৯৮ সালের ৯ মার্চ। বাবার নাম সবুজ শেখ এবং মায়ের নাম বিউটি বেগম। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ভোটার নম্বর, ভোটার এরিয়া কোর্ড, সিরিয়াল নম্বর, ভোটার এলাকা সবই বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ার। এনআইডিতে লিঙ্গ পরিচয় অবিবাহিত।

চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, মাস-তিনেক আগেও বৃষ্টির সঙ্গে ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় আমার দেখা হয়। আমি তার সঙ্গে ছবিও তুলি। যে ছবি আমার কাছে রয়েছে।