ঢাকা ০৬:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশন সমাপ্ত

একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশন রোববার সমাপ্ত হয়েছে। অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ঘোষণা পাঠ করার মাধ্যমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ অধিবেশন সমাপ্তির ঘোষণা দেন। 

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাপনী ভাষণ দেন। এ ছাড়া বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের সমাপনী দিনে বক্তৃতা করেন। অধিবেশন সমাপ্তির ঘোষণা দেওয়ার আগে ১৯৭২ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণের অডিও সংসদে শোনানো হয়।

গত ৩০ অক্টোবর শুরু হয়ে ৬ অক্টোবর শেষ দিন পর্যন্ত এ অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ছয়টি। আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত কাজ সম্পাদনের পাশাপাশি কার্যপ্রণালী-বিধির ৭১ বিধিতে ৯১টি নোটিশ পাওয়া গেছে। ৭১(ক) বিধিতে দুই মিনিটের আলোচিত নোটিশের সংখ্যা ৩০টি।

প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার জন্য সর্বমোট ৪৪টি প্রশ্ন পাওয়া যায়, এর মধ্যে তিনি ১৪টি প্রশ্নের উত্তর দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উত্তর দেওয়ার জন্য পাওয়া মোট ১ হাজার ১৩টি  প্রশ্নের মধ্যে মন্ত্রীরা ৪৩৯টি প্রশ্নের জবাব দেন। এ অধিবেশনে চারটি বিল পাস হয়। এ অধিবেশনে দুটি স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট উপস্থাপিত হয়। এ ছাড়া, ৩ নভেম্বর ২০২২ ‘জেলহত্যা দিবস’-উপলক্ষে পয়েন্ট অব অর্ডারে সংসদ সদস্যরা আলোচনা করেন।

পাশাপাশি তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের। এ ছাড়া তিনি ধন্যবাদ জানান পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, গণপূর্ত, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের। জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা, বাংলাদেশ বেতার, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলসহ দেশের সব গণমাধ্যমের সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে পেছনে ফেলে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের পথে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সকল নিয়ামক অর্জন, জাতিসংঘ ঘোষিত ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে তার সুযোগ্য নেতৃত্বে রূপকল্প ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তাঁর বলিষ্ঠ ও সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সূচক, জিডিপি, প্রবৃদ্ধি, রেমিটেন্স, রিজার্ভ, শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি, লিঙ্গ সমতা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, সামাজিক উন্নয়ন সূচক – প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং সফলতার স্বাক্ষর রাখছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ কোনো স্বপ্ন নয়। আজকের বাংলাদেশ তরুণদের অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ। আশা করি একাদশ জাতীয় সংসদ চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে, বাংলাদেশ গণতন্ত্রের অব্যাহত অগ্রযাত্রার অনন্য এক মাইলফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

স্পিকার বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের এই অগ্রযাত্রা একদিনে অর্জিত হয়নি। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দীর্ঘ সংগ্রামে নেতৃত্বে দিয়েছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রকে সুসংহতকরণে বাধা-বিপত্তি অতিক্রম, অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম, রক্তঝরা পথ ধরে আজকের অর্জন। শত প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা আর তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গৃহীত কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। এই সফলতার মূল চালিকা শক্তি সদিচ্ছা- পলিটিক্যাল উইল, যার মধ্যে অন্তর্নিহিত রয়েছে পিপল এন্টেয়ার্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পিপল এন্টেয়ার্ড পলিটিক্স- যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে জনগণ, জনগণের কল্যাণ সাধনই যার মূল উদ্দেশ্য।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশন সমাপ্ত

আপডেট সময় ০৯:৪০:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২

একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশন রোববার সমাপ্ত হয়েছে। অধিবেশন সমাপ্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ঘোষণা পাঠ করার মাধ্যমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এ অধিবেশন সমাপ্তির ঘোষণা দেন। 

সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাপনী ভাষণ দেন। এ ছাড়া বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের সমাপনী দিনে বক্তৃতা করেন। অধিবেশন সমাপ্তির ঘোষণা দেওয়ার আগে ১৯৭২ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণের অডিও সংসদে শোনানো হয়।

গত ৩০ অক্টোবর শুরু হয়ে ৬ অক্টোবর শেষ দিন পর্যন্ত এ অধিবেশনে মোট কার্যদিবস ছিল ছয়টি। আইন প্রণয়ন সম্পর্কিত কাজ সম্পাদনের পাশাপাশি কার্যপ্রণালী-বিধির ৭১ বিধিতে ৯১টি নোটিশ পাওয়া গেছে। ৭১(ক) বিধিতে দুই মিনিটের আলোচিত নোটিশের সংখ্যা ৩০টি।

প্রধানমন্ত্রীর উত্তর দেওয়ার জন্য সর্বমোট ৪৪টি প্রশ্ন পাওয়া যায়, এর মধ্যে তিনি ১৪টি প্রশ্নের উত্তর দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উত্তর দেওয়ার জন্য পাওয়া মোট ১ হাজার ১৩টি  প্রশ্নের মধ্যে মন্ত্রীরা ৪৩৯টি প্রশ্নের জবাব দেন। এ অধিবেশনে চারটি বিল পাস হয়। এ অধিবেশনে দুটি স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট উপস্থাপিত হয়। এ ছাড়া, ৩ নভেম্বর ২০২২ ‘জেলহত্যা দিবস’-উপলক্ষে পয়েন্ট অব অর্ডারে সংসদ সদস্যরা আলোচনা করেন।

পাশাপাশি তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের। এ ছাড়া তিনি ধন্যবাদ জানান পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, গণপূর্ত, বিদ্যুৎ ও টেলিফোন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের। জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা, বাংলাদেশ বেতার, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলসহ দেশের সব গণমাধ্যমের সাংবাদিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে পেছনে ফেলে অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের পথে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সকল নিয়ামক অর্জন, জাতিসংঘ ঘোষিত ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে তার সুযোগ্য নেতৃত্বে রূপকল্প ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তাঁর বলিষ্ঠ ও সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সূচক, জিডিপি, প্রবৃদ্ধি, রেমিটেন্স, রিজার্ভ, শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রগতি, লিঙ্গ সমতা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, সামাজিক উন্নয়ন সূচক – প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং সফলতার স্বাক্ষর রাখছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ কোনো স্বপ্ন নয়। আজকের বাংলাদেশ তরুণদের অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ। আশা করি একাদশ জাতীয় সংসদ চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে, বাংলাদেশ গণতন্ত্রের অব্যাহত অগ্রযাত্রার অনন্য এক মাইলফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

স্পিকার বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের এই অগ্রযাত্রা একদিনে অর্জিত হয়নি। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দীর্ঘ সংগ্রামে নেতৃত্বে দিয়েছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রকে সুসংহতকরণে বাধা-বিপত্তি অতিক্রম, অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম, রক্তঝরা পথ ধরে আজকের অর্জন। শত প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা আর তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গৃহীত কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। এই সফলতার মূল চালিকা শক্তি সদিচ্ছা- পলিটিক্যাল উইল, যার মধ্যে অন্তর্নিহিত রয়েছে পিপল এন্টেয়ার্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পিপল এন্টেয়ার্ড পলিটিক্স- যার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে জনগণ, জনগণের কল্যাণ সাধনই যার মূল উদ্দেশ্য।