আওয়ামী লীগ দেশকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত ‘যুগপৎ আন্দোলন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের প্রধান সংকট একটা রাজনৈতিক দল যারা নিজেদেরকে স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী দল মনে করে। এদেশটাকে তারা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বলেও মনে করে। সেই দল আজকে এই রাষ্ট্রের সমস্ত কর্তৃত্ব নিজেদের হাতে গ্রহণ করেছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল যেটাকে তারা স্বাধীনতার চেতনা বলে। সেই চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে ধুলিস্যাৎ করে দিয়ে তাদের যে অপকর্ম, নিজেদের বিত্ত-সম্পদ তৈরি করা, ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করা, এই কাজগুলোকে পাকাপোক্ত করার চেষ্টা করছে। আমি সব সময় বলি এটা তাদের পুরোনো অভ্যাস। ’৭৫ সালে তারা ১১ মিনিটে সংসদে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল করেছিল। সেখান থেকে তারা এখনও বেরিয়ে আসতে পারেনি।
বিভিন্ন দলের মধ্যে কিভাবে ঐক্য হবে সে বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন আমরা আলোচনা করি। আপনারা প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরাও প্রস্তাব দিয়েছি। সামনের দিনে কি হবে, কিভাবে আমরা এগুতে পারবো। ভবিষ্যত রাষ্ট্র কিভাবে গঠন করবো। আসুন সে বিষয়ে কথা বলি, চেষ্টা করি। আমার বিশ্বাস কোথাও কিছু আটকাবে না।
মহিলা দল নেত্রী সুলতানা আহামেদকে কেন গ্রেফতার করা হয়েছে প্রশ্ন করে বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে সুলতানার মুক্তি দাবি করেন।
বরিশালে যাওয়ার পথে ইশরাক হোসেনের গাড়ি বহরে হামলা ও তার বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, এখন আবার গায়েবি মামলা শুরু হয়েছে। সাভারে কোনো ঘটনাই ঘটেনি, মিছিল ছিল না, কিছু ছিল না সেখানে। ডা. সালাহউদ্দিন সাহেবকে (ঢাকা জেলা বিএনপি সভাপতি) এক নম্বর আসামি করে প্রায় দেড়শ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অর্থাৎ প্রসেস হ্যাজ স্টার্টেট।
আন্দোলনকে কিভাবে হামলা করে, মামলা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া যায়। দমন নীতি চালিয়ে সেই প্রক্রিয়া এরা শুরু করেছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না যে জনগণের পিঠ কিন্তু দেয়ালে ঠেকে গেছে। জনগণ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এই হামলা, মামলা, মোকদ্দমা দিয়ে অতীতে তো লাভ হয়নি। এখনও লাভ হবে না। ১৫ বছর ধরে করছে, কিন্তু বিএনপিকে স্তিমিত করতে পারেননি।
‘পালাবো না আমরা জেলে যাবো’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তাহলে তারা পালাবার চিন্তুা শুরু করে দিয়েছেন। এটাই তাদের বোঝা উচিত ছিল। এতো পুরোনো রাজনৈতিক দল, আমরা আশা করেছিলাম তারা জনগণের চোখের ভাষাটা বুঝতে পারবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য রাখেন এস এম আকরাম, আ স ম আব্দুর রব, সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, রফিকুল ইসলাম বাবলু, হাসনাত কাইয়ূম, নুরুল হক নূর প্রমুখ।