ঢাকা ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা। বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন: অগ্রণী ব্যাংকের শীর্ষ ৫ কর্মকর্তার জেল

হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করে দণ্ডিত হয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক-১ ওয়াহিদা বেগম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক-২ শ্যামল কৃষ্ণ সাহা এবং জেনারেল ম্যানেজার ফজলুল করিম ও প্রধান শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক একেএম ফজলুল হককে তিন মাস করে দেওয়ানি কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. নুরুল আমীন। অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শামীম খালেদ আহমেদ।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, রাজধানীর ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা দিলকুশায় ২২তলা মুন টাওয়ার নামে একটি ভবন নির্মাণ করা হয় অগ্রণী ব্যাংক থেকে ২৩১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে। একপর্যায়ে ওই ভবনের ৯৮ হাজার ২৩৫ বর্গফুট (১২, ১৩ ও ১৪তলা ও ৬ষ্ঠ তলার ৫ হাজার বর্গফুট) কিনে নেয় অগ্রণী ব্যাংক। ঋণের বিপরীতে এই টাকা সমন্বয় করে ব্যাংকটি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বদলি হলে নতুন কর্মকর্তা এসেই মুন টাওয়ারের মালিকের কাছে ঋণের বিপরীতে ১৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা দাবি করে বসেন। এই টাকা পরিশোধ করতে ২০২১ সালে মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেন। এই চিঠির বৈধতা নিয়ে ঢাকার নিম্ন আদালতে মামলা করেন মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান। ওই আবেদনে অগ্রণী ব্যাংকের চিঠির কার্যকারিতার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

আদালত ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দেন। এর পর নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন মিজানুর রহমান। হাইকোর্ট শুনানি নিয়ে ওই চিঠির জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে আদেশ দেন। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ওই চিঠির কার্যকারিতার ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। ওই চিঠি কেন বাতিল করা হবে না এবং এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেওয়া হয়। এর পরও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তথা বিবাদীপক্ষ টাকার জন্য মিজানুর রহমানকে চিঠি দেয়।

ওই চিঠিতে মিজানুর রহমানের কাছে দাবি করা টাকাকে খেলাপি ঋণ হিসেবে দেখানো হয়। এর পর মিজানুর রহমান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পৃথক দুটি আবেদন দেন। ওই আবেদনে আগের আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা নিতে আরজি জানানো হয়।

এরই মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলে আসে। এই নির্বাচনে মিজানুর রহমান জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনয়নে বরগুনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী হন। কিন্তু অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরগুনার জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে মিজানুর রহমানকে ঋণখেলাপি হিসেবে উল্লেখ করেন। এই চিঠি পাওয়ার পর মিজানুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করে দেন জেলা প্রশাসক। অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তার ওই চিঠির বিরুদ্ধেও হাইকোর্টে আবেদন করেন মিজানুর রহমান। ওই তিন আবেদনের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট ৫ ব্যাংক কর্মকর্তাকে সাজা দিয়ে মঙ্গলবার আদেশ দেন হাইকোর্ট।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন: অগ্রণী ব্যাংকের শীর্ষ ৫ কর্মকর্তার জেল

আপডেট সময় ০২:৫৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪

হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করে দণ্ডিত হয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক-১ ওয়াহিদা বেগম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক-২ শ্যামল কৃষ্ণ সাহা এবং জেনারেল ম্যানেজার ফজলুল করিম ও প্রধান শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক একেএম ফজলুল হককে তিন মাস করে দেওয়ানি কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. নুরুল আমীন। অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শামীম খালেদ আহমেদ।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, রাজধানীর ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা দিলকুশায় ২২তলা মুন টাওয়ার নামে একটি ভবন নির্মাণ করা হয় অগ্রণী ব্যাংক থেকে ২৩১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে। একপর্যায়ে ওই ভবনের ৯৮ হাজার ২৩৫ বর্গফুট (১২, ১৩ ও ১৪তলা ও ৬ষ্ঠ তলার ৫ হাজার বর্গফুট) কিনে নেয় অগ্রণী ব্যাংক। ঋণের বিপরীতে এই টাকা সমন্বয় করে ব্যাংকটি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বদলি হলে নতুন কর্মকর্তা এসেই মুন টাওয়ারের মালিকের কাছে ঋণের বিপরীতে ১৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা দাবি করে বসেন। এই টাকা পরিশোধ করতে ২০২১ সালে মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেন। এই চিঠির বৈধতা নিয়ে ঢাকার নিম্ন আদালতে মামলা করেন মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান/ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান। ওই আবেদনে অগ্রণী ব্যাংকের চিঠির কার্যকারিতার ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

আদালত ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দেন। এর পর নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন মিজানুর রহমান। হাইকোর্ট শুনানি নিয়ে ওই চিঠির জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে আদেশ দেন। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ওই চিঠির কার্যকারিতার ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। ওই চিঠি কেন বাতিল করা হবে না এবং এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেওয়া হয়। এর পরও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তথা বিবাদীপক্ষ টাকার জন্য মিজানুর রহমানকে চিঠি দেয়।

ওই চিঠিতে মিজানুর রহমানের কাছে দাবি করা টাকাকে খেলাপি ঋণ হিসেবে দেখানো হয়। এর পর মিজানুর রহমান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে পৃথক দুটি আবেদন দেন। ওই আবেদনে আগের আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা নিতে আরজি জানানো হয়।

এরই মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলে আসে। এই নির্বাচনে মিজানুর রহমান জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনয়নে বরগুনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী হন। কিন্তু অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বরগুনার জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে মিজানুর রহমানকে ঋণখেলাপি হিসেবে উল্লেখ করেন। এই চিঠি পাওয়ার পর মিজানুর রহমানের প্রার্থিতা বাতিল করে দেন জেলা প্রশাসক। অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তার ওই চিঠির বিরুদ্ধেও হাইকোর্টে আবেদন করেন মিজানুর রহমান। ওই তিন আবেদনের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট ৫ ব্যাংক কর্মকর্তাকে সাজা দিয়ে মঙ্গলবার আদেশ দেন হাইকোর্ট।