ঢাকা ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা। বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

ব্যারিস্টার সুমনকে নিয়ে বিপদে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার নির্বাচনী সভায় ব্যক্তবে বলেন, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা মাহবুব ভাইকে দিয়েছেন নমিনেশন আর আমাকে দিয়েছেন পারমিশন”। অনেকেই বলাবলি করছে এবারের নির্বাচন হল ”নমিনেশন আর পারমিশন”এর নির্বাচন। গত দুই নির্বাচনে সহজে জয় পেলেও এবারই তিনি প্রথম ভোটের লড়াইয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। এবার একটু বেকায়দায় পড়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।

সংসদ মাহবুব আলী এলাকার উন্নয়নে কী ভুমিকা রেখেছেন, কী করেননি তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে। প্রতিদ্বন্ধী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন সব বয়সী ভোটারদের নিয়ে যেভাবে ঈগল প্রতীকের প্রচার শুরু করেছেন, এবার মাহবুব আলীর নৌকা ঘাটে ভিড়তে কিনা, এ নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে মো. মাহবুব আলী প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। পরে ও ২০১৮ সালেও তিনি জয়ী হন। মাহবুব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি টানা দুবারের এমপি এবং দ্বিতীয় দফায় প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন কিন্তুু স্থানীয় নেতা কর্মীদের সাথে অনেকটা গ্যাপ ছিল।

এলাকাবাসীর পাশে যেভাবে থাকার কথা, সেভাবে থাকেননি। মুষ্টিমেয় কিছু নেতা ছাড়া দলীয় নেতাকর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা শাহ সৈয়দ হাবিবুল্লাহ সূচন। বিএনপি নেতার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত কলেজকে হঠাৎ মাহবুব আলী তার বাবার নামে নামকরণ করেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তার আমলের সার্বিক উন্নয়নের কথা বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় তুলে ধরছেন এড.মাহবুব আলী। তার বাবা তৎকালিন এমপি মাওলানা আছাদ আলীর সাদাসিধে জীবনে অভ্যস্থ ছিলেন, যিনি এমপিএ হয়েও জনগণের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে পাঞ্জাবির পকেটে সিল নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। এই অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে তার বাবার অবদানের কথা তুলে ধরছেন। তার বাবার পরামর্শেই তিনি এলাকার জনগণের সেবা করতে এসেছেন বলেন। এ ছাড়া অতীতে এ আসনে নির্বাচনী ফলাফলের প্রতিফলনই আসন্ন নির্বাচনে দেখতে পাবেন বলে মনে করছেন।

অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহানো জনগণের কষ্ট লাঘবে ইতোমধ্যে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার ব্যক্তিগত অর্থ ব্যয়ে কওে চুনারুঘাটে ৪৯টি ব্রীজ নির্মাণ করেছেন। বিতরণ করেছেন ৩৭ হাজার আমগাছ। চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে তাদের পাশে দাঁড়ান ও খাবার সরবরাহ করেন। নিজের নামে ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে এলাকার তরুণদের সংগঠিত করেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে তার একাডেমি একাদশের সঙ্গে প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করে এর সুনাম সারাদেশে ছড়িয়ে দেন। ওই সব ম্যাচে তিনি নিজে অংশ নিয়ে এবং মাঠে আগত দর্শকের উদ্দেশে মনোমুগ্ধকর বক্তব্য দিয়ে উন্মাদনার সৃষ্টি করেছেন। করোনাকালে ও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং বিপুল অর্থ সংগ্রহ করে বিতরণ করেন। এসব বিষয়ে এলাকার ভোটাররা আলোচনা করছেন।

ব্যারিস্টার সুমন তার নির্বাচনী প্রচারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে জোরালোভাবে কাজে লাগাচ্ছেন। সুমনের ফেসবুক ফলোয়ার রয়েছেন ৫.৫ মিলিয়ন। নির্বাচনী প্রচারে সুমন প্রতিপক্ষের দুর্বল দিক তুলে ধরে সমালোচনা করলেও নৌকার প্রার্থী এড.মাহবুব আলী সরাসরি কোনো সমালোচনা করা থেকে বিরত রয়েছেন। এলাকায় এড.মাহবুব তবে তার সমর্থকদের কেউ কেউ সুমনকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।

চা বাগান অধ্যুষিত হওয়ায় হবিগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার প্রার্থীই এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রায় সব নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসছেন। ব্যতিক্রম শুধু ১৯৭৯, ১৯৮৬ ও ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারী) নির্বাচন। ১৯৭৯ সালে চুনারুঘাট উপজেলা বাহুবল উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। আর মাধবপুর উপজেলা নিয়ে একটি পৃথক আসন ছিল। ১৯৮৬ নির্বাচনের আগে মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলা সংযুক্ত করে সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হয়। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ছয়বারের জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তুুফা শহীদ।

এই আসনে জয়-পরাজয়ে চা শ্রমিকদের ভোটই নিয়ামক হিসেবে কাজ করে আসছে। অতীতের নির্বাচনের ভোট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়,চা শ্রমিকরা বরাবার নৌকাতেই ভোট দিয়ে আসছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারে ব্যারিস্টার সুমন এগিয়ে থাকলেও ভোটের সমীকরণ কি হবে, এ জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষক মহল। সরেজমিনে গত মঙ্গলবার দিন গিয়ে দেখা যায়,দিন থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন চা বাগান ও পাড়া মহল্লায় জনসভা করেছেন এড.মাহবুব আলী। দুপুরে চুনারুঘাটের আমু চা বাগানের নাচ ঘরে চা শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন তিনি। সভায় এড.মাহবুব আলী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চা শ্রমিকদের ভোটের অধিকার দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর থেকেই আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে আসছেন। তাই এবারও নৌকায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। কোনো অপশক্তি চা শ্রমিকদের কিনতে পারবে না। একই দিন বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাধবপুরে বিভিন্ন নির্বাচনী সভা করেছেন ব্যারিস্টার সুমন। বিকালে উপজেলার ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় তার ঈগল মার্কার সমর্থনে মিছিল বের হয়। জনসভায় সুমন বলেন, ‘আমার এলাকার মানুষ ও আমার আশঙ্কা সন্ধ্যার পর ভোট কারচুপি হতে পারে। এলাকার মানুষ নৌকা না নৌকার মাঝি পরিবর্তন চায়। বঙ্গবন্ধু যেভাবে বলেছিলেন আমিও বলি, তোমরা আমাদের ভাই, এমন কাজ করিওনা যাতে আমাদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা নৌকার বিরুদ্ধে না, মাঝি পরিবর্তন করতে চাই। তাই আওয়ামী লীগের ভাইদের বলি, অযথা কারচুপি কইরা নৌকারে ক্ষতিগ্রস্থ করবেন না। জনগণের ভোট জনগণের উপর ছেড়ে দিন। তারা যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।’

অন্যান্য প্রার্থীর অবস্থা: হবিগঞ্জ-৪ আসনের নির্বাচনে অন্য প্রার্থীরা হচ্ছেন ইসলামী ঐক্য জোটের আবু ছালেহ (মিনার মার্কা), জাতীয় পার্টির আহাদ উদ্দিন চৌধুরী শাহীন (লাঙল), ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ আব্দুল মমিন (চেয়ার), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আল আমিন (ডাব), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের(বিএনএম) মো. মোখলেছুর রহমান (নোঙর) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো.রাশেদুল ইসলাম খোকন (ছড়ি)। তবে তাদের কেউই ভোটের আলোচনায় নেই।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

ব্যারিস্টার সুমনকে নিয়ে বিপদে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী

আপডেট সময় ০২:৪৮:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার নির্বাচনী সভায় ব্যক্তবে বলেন, দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা মাহবুব ভাইকে দিয়েছেন নমিনেশন আর আমাকে দিয়েছেন পারমিশন”। অনেকেই বলাবলি করছে এবারের নির্বাচন হল ”নমিনেশন আর পারমিশন”এর নির্বাচন। গত দুই নির্বাচনে সহজে জয় পেলেও এবারই তিনি প্রথম ভোটের লড়াইয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। এবার একটু বেকায়দায় পড়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।

সংসদ মাহবুব আলী এলাকার উন্নয়নে কী ভুমিকা রেখেছেন, কী করেননি তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে। প্রতিদ্বন্ধী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন সব বয়সী ভোটারদের নিয়ে যেভাবে ঈগল প্রতীকের প্রচার শুরু করেছেন, এবার মাহবুব আলীর নৌকা ঘাটে ভিড়তে কিনা, এ নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে মো. মাহবুব আলী প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। পরে ও ২০১৮ সালেও তিনি জয়ী হন। মাহবুব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি টানা দুবারের এমপি এবং দ্বিতীয় দফায় প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন কিন্তুু স্থানীয় নেতা কর্মীদের সাথে অনেকটা গ্যাপ ছিল।

এলাকাবাসীর পাশে যেভাবে থাকার কথা, সেভাবে থাকেননি। মুষ্টিমেয় কিছু নেতা ছাড়া দলীয় নেতাকর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতা শাহ সৈয়দ হাবিবুল্লাহ সূচন। বিএনপি নেতার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত কলেজকে হঠাৎ মাহবুব আলী তার বাবার নামে নামকরণ করেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে তার আমলের সার্বিক উন্নয়নের কথা বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় তুলে ধরছেন এড.মাহবুব আলী। তার বাবা তৎকালিন এমপি মাওলানা আছাদ আলীর সাদাসিধে জীবনে অভ্যস্থ ছিলেন, যিনি এমপিএ হয়েও জনগণের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে পাঞ্জাবির পকেটে সিল নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। এই অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে তার বাবার অবদানের কথা তুলে ধরছেন। তার বাবার পরামর্শেই তিনি এলাকার জনগণের সেবা করতে এসেছেন বলেন। এ ছাড়া অতীতে এ আসনে নির্বাচনী ফলাফলের প্রতিফলনই আসন্ন নির্বাচনে দেখতে পাবেন বলে মনে করছেন।

অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহানো জনগণের কষ্ট লাঘবে ইতোমধ্যে সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার ব্যক্তিগত অর্থ ব্যয়ে কওে চুনারুঘাটে ৪৯টি ব্রীজ নির্মাণ করেছেন। বিতরণ করেছেন ৩৭ হাজার আমগাছ। চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে তাদের পাশে দাঁড়ান ও খাবার সরবরাহ করেন। নিজের নামে ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে এলাকার তরুণদের সংগঠিত করেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে তার একাডেমি একাদশের সঙ্গে প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করে এর সুনাম সারাদেশে ছড়িয়ে দেন। ওই সব ম্যাচে তিনি নিজে অংশ নিয়ে এবং মাঠে আগত দর্শকের উদ্দেশে মনোমুগ্ধকর বক্তব্য দিয়ে উন্মাদনার সৃষ্টি করেছেন। করোনাকালে ও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ান এবং বিপুল অর্থ সংগ্রহ করে বিতরণ করেন। এসব বিষয়ে এলাকার ভোটাররা আলোচনা করছেন।

ব্যারিস্টার সুমন তার নির্বাচনী প্রচারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে জোরালোভাবে কাজে লাগাচ্ছেন। সুমনের ফেসবুক ফলোয়ার রয়েছেন ৫.৫ মিলিয়ন। নির্বাচনী প্রচারে সুমন প্রতিপক্ষের দুর্বল দিক তুলে ধরে সমালোচনা করলেও নৌকার প্রার্থী এড.মাহবুব আলী সরাসরি কোনো সমালোচনা করা থেকে বিরত রয়েছেন। এলাকায় এড.মাহবুব তবে তার সমর্থকদের কেউ কেউ সুমনকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।

চা বাগান অধ্যুষিত হওয়ায় হবিগঞ্জ-৪ আসনে নৌকার প্রার্থীই এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রায় সব নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসছেন। ব্যতিক্রম শুধু ১৯৭৯, ১৯৮৬ ও ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারী) নির্বাচন। ১৯৭৯ সালে চুনারুঘাট উপজেলা বাহুবল উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। আর মাধবপুর উপজেলা নিয়ে একটি পৃথক আসন ছিল। ১৯৮৬ নির্বাচনের আগে মাধবপুর ও চুনারুঘাট উপজেলা সংযুক্ত করে সীমানা পুনঃনির্ধারণ করা হয়। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ছয়বারের জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তুুফা শহীদ।

এই আসনে জয়-পরাজয়ে চা শ্রমিকদের ভোটই নিয়ামক হিসেবে কাজ করে আসছে। অতীতের নির্বাচনের ভোট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়,চা শ্রমিকরা বরাবার নৌকাতেই ভোট দিয়ে আসছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারে ব্যারিস্টার সুমন এগিয়ে থাকলেও ভোটের সমীকরণ কি হবে, এ জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষক মহল। সরেজমিনে গত মঙ্গলবার দিন গিয়ে দেখা যায়,দিন থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন চা বাগান ও পাড়া মহল্লায় জনসভা করেছেন এড.মাহবুব আলী। দুপুরে চুনারুঘাটের আমু চা বাগানের নাচ ঘরে চা শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন তিনি। সভায় এড.মাহবুব আলী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চা শ্রমিকদের ভোটের অধিকার দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর থেকেই আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে আসছেন। তাই এবারও নৌকায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন। কোনো অপশক্তি চা শ্রমিকদের কিনতে পারবে না। একই দিন বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাধবপুরে বিভিন্ন নির্বাচনী সভা করেছেন ব্যারিস্টার সুমন। বিকালে উপজেলার ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকায় তার ঈগল মার্কার সমর্থনে মিছিল বের হয়। জনসভায় সুমন বলেন, ‘আমার এলাকার মানুষ ও আমার আশঙ্কা সন্ধ্যার পর ভোট কারচুপি হতে পারে। এলাকার মানুষ নৌকা না নৌকার মাঝি পরিবর্তন চায়। বঙ্গবন্ধু যেভাবে বলেছিলেন আমিও বলি, তোমরা আমাদের ভাই, এমন কাজ করিওনা যাতে আমাদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা নৌকার বিরুদ্ধে না, মাঝি পরিবর্তন করতে চাই। তাই আওয়ামী লীগের ভাইদের বলি, অযথা কারচুপি কইরা নৌকারে ক্ষতিগ্রস্থ করবেন না। জনগণের ভোট জনগণের উপর ছেড়ে দিন। তারা যাকে খুশি তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।’

অন্যান্য প্রার্থীর অবস্থা: হবিগঞ্জ-৪ আসনের নির্বাচনে অন্য প্রার্থীরা হচ্ছেন ইসলামী ঐক্য জোটের আবু ছালেহ (মিনার মার্কা), জাতীয় পার্টির আহাদ উদ্দিন চৌধুরী শাহীন (লাঙল), ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ আব্দুল মমিন (চেয়ার), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আল আমিন (ডাব), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের(বিএনএম) মো. মোখলেছুর রহমান (নোঙর) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো.রাশেদুল ইসলাম খোকন (ছড়ি)। তবে তাদের কেউই ভোটের আলোচনায় নেই।