ঢাকা ০২:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গরু ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন এনজিও মাঠকর্মীরা রংপুরের মিঠাপুকুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ভোলায় শহীদ পরিবারদের কোটি টাকার সহায়তা দিল- জামায়াতে ইসলাম জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশন যোগ দিতে নিউইয়র্কে দৈনিক তরুণ কণ্ঠ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শান্ত বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর যুবদলের সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি প্রসঙ্গ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশকে বিভিন্ন মহল থেকে অযৌক্তিক রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ তুলে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাঠানো এই চিঠি জাতিসংঘ এখনো দেখেনি বলে জানিয়েছেন বৈশ্বিক সংস্থাটির মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সংস্থাটির নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য জানান।

স্টিফেন ডুজারিক বলেন, আমি চিঠিটি দেখেনি। আমি বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা সম্পর্কে এরই মধ্যে যা বলেছি তাই পুনর্ব্যক্ত করব।

জানা গেছে, নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশকে বিভিন্ন মহল থেকে অযৌক্তিক রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ তুলে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের অফিসে পাঠানো চিঠিতে এ আহ্বান জানান তিনি। গত ১৯ নভেম্বর জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে এ চিঠিটি আন্তোনিও গুতেরেসের অফিসে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের একজন ক্রুসেডার। তিনি দেশের মানুষের ভোট, খাদ্য ও সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক কষ্ট করেছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে সংকল্পবদ্ধ। কিন্তু একই সঙ্গে বিক্ষোভের নামে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি পোড়ানো ও মানুষকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনাগুলো তিনি সহ্য করবেন না, যা বিরোধী দল নিয়মিত করে আসছে।

ড. মোমেন তার চিঠিতে আরও লিখেছেন, শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের মেয়াদে হাজারো নির্বাচন, উপনির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আঞ্চলিক নির্বাচন ও মেয়র নির্বাচনের আয়োজন করেছেন। খুবই ছোটখাটো কিছু ঘটনা ছাড়া সবগুলো নির্বাচনই ছিল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। জাতিসংঘ মহাসচিবকে তিনি আরও লেখেন, বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানুষের সম্মান রক্ষায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে এসব মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে ৩০ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তা স্বত্বেও আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে ‘অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত রাজনৈতিক চাপের’ মুখোমুখি হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, আমরা আশা করব জাতিসংঘ ও তার সেক্রেটারিয়েট, সংস্থা ও স্থানীয় কার্যালয়গুলো বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যেতে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি উদ্যমী ও সহযোগিতামূলক মনোভাবসম্পন্ন সদস্য রাষ্ট্র। আমরা প্রবলভাবে আশাবাদী যে, জাতিসংঘ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রগতি ও জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতা ও সহায়তা অব্যাহত রাখবে। এ ছাড়াও, বাংলাদেশ আশাবাদী যে, জাতিসংঘ ও তার সব অঙ্গসংগঠন ও সংস্থা জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য অংশীদারের ভূমিকা অব্যাহত রাখবে। আমরা আরও প্রত্যাশা করব যে, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা পক্ষপাতহীনতা, সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সর্বোচ্চ মানদণ্ড মেনে চলে সংস্থাটির গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, যদি তাদের (জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের) প্রতিবেদনগুলোতে ভুল তথ্য ও বস্তুনিষ্ঠতার অভাব থাকে এবং এগুলো যদি উপাত্ত-নির্ভর না হয়, তাহলে তারা তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারাতে পারে, যা সংস্থাটির সামগ্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি এক অশনিসংকেত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গরু ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন এনজিও মাঠকর্মীরা

জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি প্রসঙ্গ

আপডেট সময় ১১:০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশকে বিভিন্ন মহল থেকে অযৌক্তিক রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ তুলে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাঠানো এই চিঠি জাতিসংঘ এখনো দেখেনি বলে জানিয়েছেন বৈশ্বিক সংস্থাটির মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সংস্থাটির নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য জানান।

স্টিফেন ডুজারিক বলেন, আমি চিঠিটি দেখেনি। আমি বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা সম্পর্কে এরই মধ্যে যা বলেছি তাই পুনর্ব্যক্ত করব।

জানা গেছে, নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশকে বিভিন্ন মহল থেকে অযৌক্তিক রাজনৈতিক চাপের অভিযোগ তুলে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের অফিসে পাঠানো চিঠিতে এ আহ্বান জানান তিনি। গত ১৯ নভেম্বর জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের পক্ষ থেকে এ চিঠিটি আন্তোনিও গুতেরেসের অফিসে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের একজন ক্রুসেডার। তিনি দেশের মানুষের ভোট, খাদ্য ও সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক কষ্ট করেছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে সংকল্পবদ্ধ। কিন্তু একই সঙ্গে বিক্ষোভের নামে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি পোড়ানো ও মানুষকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনাগুলো তিনি সহ্য করবেন না, যা বিরোধী দল নিয়মিত করে আসছে।

ড. মোমেন তার চিঠিতে আরও লিখেছেন, শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের মেয়াদে হাজারো নির্বাচন, উপনির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আঞ্চলিক নির্বাচন ও মেয়র নির্বাচনের আয়োজন করেছেন। খুবই ছোটখাটো কিছু ঘটনা ছাড়া সবগুলো নির্বাচনই ছিল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। জাতিসংঘ মহাসচিবকে তিনি আরও লেখেন, বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানুষের সম্মান রক্ষায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে এসব মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে ৩০ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। তা স্বত্বেও আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ বিভিন্ন মহলের কাছ থেকে ‘অযাচিত, অযৌক্তিক ও আরোপিত রাজনৈতিক চাপের’ মুখোমুখি হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, আমরা আশা করব জাতিসংঘ ও তার সেক্রেটারিয়েট, সংস্থা ও স্থানীয় কার্যালয়গুলো বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যেতে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি উদ্যমী ও সহযোগিতামূলক মনোভাবসম্পন্ন সদস্য রাষ্ট্র। আমরা প্রবলভাবে আশাবাদী যে, জাতিসংঘ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রগতি ও জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতা ও সহায়তা অব্যাহত রাখবে। এ ছাড়াও, বাংলাদেশ আশাবাদী যে, জাতিসংঘ ও তার সব অঙ্গসংগঠন ও সংস্থা জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রগতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ার ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য অংশীদারের ভূমিকা অব্যাহত রাখবে। আমরা আরও প্রত্যাশা করব যে, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা পক্ষপাতহীনতা, সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সর্বোচ্চ মানদণ্ড মেনে চলে সংস্থাটির গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, যদি তাদের (জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের) প্রতিবেদনগুলোতে ভুল তথ্য ও বস্তুনিষ্ঠতার অভাব থাকে এবং এগুলো যদি উপাত্ত-নির্ভর না হয়, তাহলে তারা তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারাতে পারে, যা সংস্থাটির সামগ্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি এক অশনিসংকেত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।