ঘরের মাঠ কিংস অ্যারেনায় আরও এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছে বসুন্ধরা কিংস। এএফসি কাপে মালদ্বীপের ক্লাব মাজিয়ার বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে তারা।
তাতে আরও মজবুত হলো গ্রুপে তাদের শীর্ষস্থান।
কিংস অ্যারেনায় আজ কিংস যে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখল তা অবিশ্বাস্য। নিজেদের দূর্গে যে তারা সেরা তা আরও একবার প্রমাণ করলেন বিশ্বনাথ-মোরসালিনরা। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে মাঠ ছাড়ে কিংস। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই কিংস চেপে ধরে মাজিয়াকে। ম্যাচে ফিরতে মরিয়া কিংসের সামনে দাঁড়াতেই পারছিল না মালদ্বীপের ক্লাবটি। তবে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মিলছিল না। ম্যাচের ৮০ মিনিটে ববুরবেকের গোলে দল সমতায় ফেরে।
সেই অবিশ্বাস্য চোখ ধাঁধানো মুহূর্ত আসে ৮৮ মিনিটে। মিগেল দামাসেনার ম্যাজিক্যাল গোল। প্রায় ত্রিশ গজ দূর থেকে করা তার গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কিংস। ফ্রেমে বাধাই করে রাখার মত এই গোল দেশের ফুটবলপ্রেমীদের মনে থাকবে বহুকাল।
আক্রমণ থেকে রক্ষণ সব বিভাগেই দারুণ ফুটবল খেলেছে কিংস। তবে নিজেদের ভুলে মাজিয়ার বিপক্ষে পিছিয়ে পরে অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই দারুন এক গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল কিংস। বক্সের ভেতর দরিয়েলতনের প্রচেষ্টা কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন মাজিয়ার ডিফেন্ডার।
ম্যাচের দশম মিনিটে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে কিংস। নিজেদের ভুলেই মাজিয়াকে গোল উপহার দিয়েছে কিংস এমনটা বললে ভুল হবে না। তারিক কাজী ব্যাকপাসে বল দেন গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণকে। তিনি বল ক্লিয়ার না করে বক্সেই সতীর্থকে পাস দিতে চেয়েছিলেন। তবে সেই পাস নিয়ন্ত্রণে নেন মাজিয়ার ভোজিস্লাভ বালাবানোভিচ। রিবাউন্ড বলে শট করে দলকে এগিয়ে দেন রিগান ওবেং।
২৭ মিনিটে আবারও বল জালে জড়িয়েছিল মাজিয়া। তবে হ্যান্ডবলের কারণে গোলের বাঁশি বাজাননি রেফারি। ৪১ মিনিটে অফসাইডের ফাঁদে পড়েন বালবানোভিচ। আরও একবার বল জালে জড়ালেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি মাজিয়া।
পরের মিনিটেই মাজিয়ার রক্ষণের কঠিন পরীক্ষা নেয় কিংস। বক্সের বাঁ প্রান্ত থেকে রাকিব ক্রস করেন এমফন উদোকে লক্ষ্য করে। তবে তিনি বল পাওয়ার আগেই ব্লক করেন মাজিয়ার ডিফেন্ডার। পরের মিনিটেই বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা ক্রসে হেড করেন সাদ উদ্দীন। ফিরতি বলে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি এমনফন।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় কিংস। শুরুর মিনিটেই দারুণ এক গোলের সুযোগ পায় তারা। সতীর্থের ক্রস থেকে বল পান এমফন উদো। বল রিসিভ করে শরীর ঘুড়িয়ে দারুণ এক শট করেন এমফন উদো। তবে সরাসরি গোলরক্ষক হুসেন শরীফের হাতে ধরা পরে। ৪৭ মিনিটে দোরিয়েলতনের পাস থেকে বল পান বিশ্বনাথ ঘোষ। বক্সের বাইরে থেকে নেয়া শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন মাজিয়ার গোলরক্ষক।
৬৭ মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পায় কিংস। মিগেল দামাসেনার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটেই দুটি বদলি করেন কোচ অস্কার ব্রুজোন। সোহেল রানার পরিবর্তে মাঠে নামেন শেখ মোরসালিন এবং রাকিব হোসের পরিবর্তে মাঠে নামেন রফিকুল ইসলাম।
ম্যাচের ৭৮ মিনিটে দারুণ এক গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন বদলি নামা শেখ মোরসালিন। বক্সের ভেতর এমফন উদো ব্যাকহিলে বল দেন মোরসালিনকে। গোলরক্ষককে একা পেয়েও দূর্বল শটে বল জালে জড়াতে পারেননি মোরসালিন। তবে পরের মিনিটেই মোরসালিনের কর্নার থেকে হেডে দলকে সমতায় ফেরান ববুরবেগ। উল্লাসে ফেটে পড়ে কিংস অ্যারেনা।
ম্যাচের ৮৭ মিনিটে অবিশ্বাস্য এক প্রত্যাবর্তনের গল্প লেখলেন মিগেল দামাসেনা। দরিয়েলতনের ব্যাকপাস থেকে প্রায় ত্রিশগজ দূর থেকে শট করে গোলরক্ষকের উপর দিয়ে বল জালে জড়ান মিগেল। কিংস অ্যারেনায় অব্যহত থাকলো কিংসের অপরাজিত যাত্রা। গ্রুপের শীর্ষে থেকেই ভারতের ক্লাব ওড়িশার বিপক্ষে মাঠে নামবে কিংস। ঐ ম্যাচে জয় পেলেই খেলবে জোনাল সেমিফাইনালে। ৫ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে তারা। ওড়িশার বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচটি খেলবে আগামী ১১ ডিসেম্বর।