ঢাকা ১১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিবচরে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের অভিযান,৯ জন গ্রেফতার

মাদারীপুর জেলার শিবচরের আড়িয়াল খাঁ নদসহ বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে এমন অভিযোগে আভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী।

রোববার(১১ জুন) দুপুরে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদের বিভিন্ন অংশে অভিযান পরিচালনা করা হয়।এসময় অবৈধভাবে বালু তোলার অপরাধে ৯ জনকে আটকও করা হয়।

এ ঘটনায় সোমবার(১২ জুন) সকালে শিবচর উপজেলার কলাতলা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আটককৃতদের নামে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আটককৃতরা হলো, আনসার আলী সরকার, খোকন আহম্মদ, মো.আজিজুল হক, হায়দুল ইসলাম কাজল, রাসেল মাদবর, কাজল খান, সিরাজুল ইসলাম, রতন মন্ডল ও আলিমুর রহমান জনি। তাদের বাড়ি মাদারীপুরের শিবচর, কালকিনিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

তবে অভিযানকালে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন,’এই(মাদারীপুর) দূর্বল প্রশাসন নদ-নদী রক্ষা করতে পারবে না!’

এ সময় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সবাইকে নিয়ে এই অভিযানে যাবো। শিবচর থানার ওসি সাহেব অসুস্থ্য। জেলা প্রশাসনকে বলার পরেও তারা কেউ আসেন নাই।’

মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদের সঙ্গে তিনটি সেতু। একটি রেল সেতু এবং একটি নতুন অন্যটি পুরাতন সেতু। সেতুর চারপাশ খুবই সংবেদনশীল জায়গা। আড়িয়াল খাঁ অত্যন্ত ভাঙন প্রবনিত একটি নদ। এখানে একটি চক্র বিভিন্ন রকমের ধোঁকাবাজি করে নদীতে ড্রেজিং করে বালু বিক্রি করছে। নদে এমন ড্রেজিং এর ফলে রেল সেতুর ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এটা ভেবেই মূলত আমরা এখানে অভিযানে এসেছি।’

তিনি বলেন,’এটা আমরা কয়েকদিন আগে জানতে পেরেছি। জানার পরেই আমরা সেই ভিডিও উপজেলা প্রশাসনের ইউএনওকে দিয়েছিলাম। পরে ইউএনও এসিল্যান্ডকে পাঠিয়েছিল সেখানে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। চক্রটি ড্রেজিং করেই গেছে।’

অভিযানকালে শিবচর থানার পুলিশ সদস্য ও উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রিয়াজুল রহমান উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রিয়াজুল রহমান বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু তোলায় অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা থানায় আছেন।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রশাসনকে দুর্বল বলার কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে মো. রিয়াজুল রহমান বলেন, ‘তিনি কি বলছেন জানি না। তবে আমরা তার সব কথাই গুরুত্বের সঙ্গে দেখি ও অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি অভিযোগ দেওয়ায় এক ড্রেজার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছি। ১৫ জনের মত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছি। এখন তারা জামিনে গেলে সেটা তো আদালতের ব্যাপার। তারপর তিনি এমন কথা কেন বলেছে তা ইউএনও ও ডিসি স্যার বলতে পারবেন।’

এদিকে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরীর নিজ বাড়ি শিবচরের দত্তপাড়ায় তার একটি পুকুর থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে একটি চক্র বালু উত্তোলন করার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে তেমন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃতদের আজ সকালে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।’

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিবচরে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের অভিযান,৯ জন গ্রেফতার

আপডেট সময় ০৪:৫৪:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩

মাদারীপুর জেলার শিবচরের আড়িয়াল খাঁ নদসহ বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে এমন অভিযোগে আভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী।

রোববার(১১ জুন) দুপুরে শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদের বিভিন্ন অংশে অভিযান পরিচালনা করা হয়।এসময় অবৈধভাবে বালু তোলার অপরাধে ৯ জনকে আটকও করা হয়।

এ ঘটনায় সোমবার(১২ জুন) সকালে শিবচর উপজেলার কলাতলা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আটককৃতদের নামে শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আটককৃতরা হলো, আনসার আলী সরকার, খোকন আহম্মদ, মো.আজিজুল হক, হায়দুল ইসলাম কাজল, রাসেল মাদবর, কাজল খান, সিরাজুল ইসলাম, রতন মন্ডল ও আলিমুর রহমান জনি। তাদের বাড়ি মাদারীপুরের শিবচর, কালকিনিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।

তবে অভিযানকালে স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন,’এই(মাদারীপুর) দূর্বল প্রশাসন নদ-নদী রক্ষা করতে পারবে না!’

এ সময় জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সবাইকে নিয়ে এই অভিযানে যাবো। শিবচর থানার ওসি সাহেব অসুস্থ্য। জেলা প্রশাসনকে বলার পরেও তারা কেউ আসেন নাই।’

মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘শিবচরে আড়িয়াল খাঁ নদের সঙ্গে তিনটি সেতু। একটি রেল সেতু এবং একটি নতুন অন্যটি পুরাতন সেতু। সেতুর চারপাশ খুবই সংবেদনশীল জায়গা। আড়িয়াল খাঁ অত্যন্ত ভাঙন প্রবনিত একটি নদ। এখানে একটি চক্র বিভিন্ন রকমের ধোঁকাবাজি করে নদীতে ড্রেজিং করে বালু বিক্রি করছে। নদে এমন ড্রেজিং এর ফলে রেল সেতুর ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে এটা ভেবেই মূলত আমরা এখানে অভিযানে এসেছি।’

তিনি বলেন,’এটা আমরা কয়েকদিন আগে জানতে পেরেছি। জানার পরেই আমরা সেই ভিডিও উপজেলা প্রশাসনের ইউএনওকে দিয়েছিলাম। পরে ইউএনও এসিল্যান্ডকে পাঠিয়েছিল সেখানে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। চক্রটি ড্রেজিং করেই গেছে।’

অভিযানকালে শিবচর থানার পুলিশ সদস্য ও উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রিয়াজুল রহমান উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রিয়াজুল রহমান বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু তোলায় অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা থানায় আছেন।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রশাসনকে দুর্বল বলার কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে মো. রিয়াজুল রহমান বলেন, ‘তিনি কি বলছেন জানি না। তবে আমরা তার সব কথাই গুরুত্বের সঙ্গে দেখি ও অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি অভিযোগ দেওয়ায় এক ড্রেজার মালিককে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছি। ১৫ জনের মত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছি। এখন তারা জামিনে গেলে সেটা তো আদালতের ব্যাপার। তারপর তিনি এমন কথা কেন বলেছে তা ইউএনও ও ডিসি স্যার বলতে পারবেন।’

এদিকে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরীর নিজ বাড়ি শিবচরের দত্তপাড়ায় তার একটি পুকুর থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে একটি চক্র বালু উত্তোলন করার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে তেমন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, গ্রেফতারকৃতদের আজ সকালে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।’