ঢাকা ০৩:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১ মাস আগে বদলি হলেও চেয়ার ছাড়ছেন না প্রকৌশলী

রাজধানীর অদুরেই কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী কাজী মাহমুদ উল্লাহকে গত মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় বদলি করা হয়। আর তার স্থলে দেয়া হয় নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারের উপজেলা প্রকৌশলী আরিফ রহমানকে। অথচ এক মাস অতিবাহিত হলেও চেয়ার ছাড়তে নারাজ মাহমুদ উল্লাহ। এ দিকে, এলজিইডিতে ডোর টু ডোর ঘুরছেন প্রকৌশলী আরিফ।

জানা গেছে, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো: আলী আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ কপি যার তারিখ ২৭ -৮-২০২৪। নং ৪৬,০২,০০০,০০১,১৯,১৩০,১৭-৯৯৭৮। এতে উল্লেখ্য যে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তাকে তার নামের পাশে বর্ণিত পদবি ও কর্মস্থলে বদলি করা হলো। অথচ এক মাস অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত পদে বহাল প্রকৌশলী কাজি মাহমুদ উল্লাহ। সরকারি এ আদেশ তোয়াক্কা করছেন না তিনি। সূত্র জানায়, গত ২৭ আগস্ট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো: আলী আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশ প্রদান করা হয় এবং যথারীতি বিভিন্ন জায়গায় প্রয়োজনীয় কপি সরবরাহ করা হয় , তৎ প্রেক্ষিতে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে মোহাম্মদ আরিফুর রহমান নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে যোগদান করেন এবং যথারীতি তা গৃহীত হয় , সরকারি বদলির আদেশ পাওয়া মাত্রই সেই আদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বর্তমান কর্মস্থলে থাকার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে তদবির করে বেড়াচ্ছেন, যা সরকারি বিধিবিধান এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, সরকারি নির্দেশ পাওয়া মাত্রই নতুন প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান সাবেক প্রকৌশলীর চার্জ প্রদান করার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক দুই দিন কেরানীগঞ্জের কর্মস্থলে এসেছিলেন কিন্তু তিনি চার্জ প্রদান করেননি। যোগদান করলেও চেয়ারে বসতে পারছেন না প্রকৌশলী মো: আরিফুর রহমান।

তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, গত মাসের ২৮ আগস্ট যোগদানের জন্য কেরানীগঞ্জে যাই। আজ কাল বলে প্রায় এক মাস হলেও চেয়ার ছাড়তে নারাজ মাহমুদ উল্লাহ সাহেব। এ নিয়ে এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রধান প্রকৌশলীর দফতরে ঘুরতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি কী করবো তাও কেউ বলছে না। তিনি এও বলেন, প্রধান প্রকৌশলীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, কেরানীগঞ্জের মতো একটি উন্নয়নশীল উপজেলায় জনসম্পৃক্ত অবকাঠামে উন্নয়ন মতো একটি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য মুখিয়ে আছি। তা ছাড়া বদলিকৃত প্রকৌশলীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছিলাম কিন্তু সেই কাক্সিক্ষত দায়িত্ব হাতে পাইনি এখনো।
এ দিকে, এলজিইডি কেরানীগঞ্জের একাধিক ঠিকাদার এ প্রতিবেদককে বলেন, জুন মাসে বাজেট হয়েছে। সে অনুযায়ী এই উপজেলার ঠিকাদারি কাজ আগেই শুরু হয়েছে। তা ছাড়া ঠিকাদারের সাথে মৌখিক চুক্তিতে ঘুষ-বাণিজ্য আদায় না করে সে যাবে না বলে মনে হচ্ছে । ঠিকাদাররা বলেন, গত তিন বছর যাবত এলজিইডি কেরানীগঞ্জের দায়িত্বে ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদ উল্লাহ। এ সময় তিনি মাদারীপুরের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী শাহজাহানের পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। কোনো ঠিকাদার টুঁ শব্দ পর্যন্ত করতে পারিনি। ৫ আগস্ট পুনরায় দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিএনপি সেন্ট্রাল নেতাকে দিয়ে ফোন দেওয়াচ্ছেন মাহমুদ উল্লাহ। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতে পারে না। তা ছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী তার আত্মীয় হওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে জানান একাধিক ঠিকাদার।
অভিযুক্ত প্রকৌশলী কাজী মাহমুদ উল্লাহ নয়া দিগন্তকে বলেন, তার মা ক্যান্সারের রোগী হওয়ায় তিনি অন্যত্র বদলি হতে নারাজ। তাই এখনো বহাল রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, তার আপন চাচাত মামা সাবেক মন্ত্রী ও এমপি শাহজাহান খান। তা ছাড়া মাদারীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতিও তার আপন চাচা।

এ বিষয়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ আলম ও প্রধান প্রকৌশলীকে গত এক সপ্তাহ যাবত ফোন দিলেও তা রিসিভ করেননি তারা।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

১ মাস আগে বদলি হলেও চেয়ার ছাড়ছেন না প্রকৌশলী

আপডেট সময় ১২:৫০:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাজধানীর অদুরেই কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী কাজী মাহমুদ উল্লাহকে গত মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় বদলি করা হয়। আর তার স্থলে দেয়া হয় নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজারের উপজেলা প্রকৌশলী আরিফ রহমানকে। অথচ এক মাস অতিবাহিত হলেও চেয়ার ছাড়তে নারাজ মাহমুদ উল্লাহ। এ দিকে, এলজিইডিতে ডোর টু ডোর ঘুরছেন প্রকৌশলী আরিফ।

জানা গেছে, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো: আলী আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ কপি যার তারিখ ২৭ -৮-২০২৪। নং ৪৬,০২,০০০,০০১,১৯,১৩০,১৭-৯৯৭৮। এতে উল্লেখ্য যে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তাকে তার নামের পাশে বর্ণিত পদবি ও কর্মস্থলে বদলি করা হলো। অথচ এক মাস অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত পদে বহাল প্রকৌশলী কাজি মাহমুদ উল্লাহ। সরকারি এ আদেশ তোয়াক্কা করছেন না তিনি। সূত্র জানায়, গত ২৭ আগস্ট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো: আলী আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশ প্রদান করা হয় এবং যথারীতি বিভিন্ন জায়গায় প্রয়োজনীয় কপি সরবরাহ করা হয় , তৎ প্রেক্ষিতে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে মোহাম্মদ আরিফুর রহমান নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে যোগদান করেন এবং যথারীতি তা গৃহীত হয় , সরকারি বদলির আদেশ পাওয়া মাত্রই সেই আদেশের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বর্তমান কর্মস্থলে থাকার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে তদবির করে বেড়াচ্ছেন, যা সরকারি বিধিবিধান এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, সরকারি নির্দেশ পাওয়া মাত্রই নতুন প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান সাবেক প্রকৌশলীর চার্জ প্রদান করার প্রতিশ্রুতি মোতাবেক দুই দিন কেরানীগঞ্জের কর্মস্থলে এসেছিলেন কিন্তু তিনি চার্জ প্রদান করেননি। যোগদান করলেও চেয়ারে বসতে পারছেন না প্রকৌশলী মো: আরিফুর রহমান।

তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, গত মাসের ২৮ আগস্ট যোগদানের জন্য কেরানীগঞ্জে যাই। আজ কাল বলে প্রায় এক মাস হলেও চেয়ার ছাড়তে নারাজ মাহমুদ উল্লাহ সাহেব। এ নিয়ে এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী এবং প্রধান প্রকৌশলীর দফতরে ঘুরতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি কী করবো তাও কেউ বলছে না। তিনি এও বলেন, প্রধান প্রকৌশলীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, কেরানীগঞ্জের মতো একটি উন্নয়নশীল উপজেলায় জনসম্পৃক্ত অবকাঠামে উন্নয়ন মতো একটি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য মুখিয়ে আছি। তা ছাড়া বদলিকৃত প্রকৌশলীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছিলাম কিন্তু সেই কাক্সিক্ষত দায়িত্ব হাতে পাইনি এখনো।
এ দিকে, এলজিইডি কেরানীগঞ্জের একাধিক ঠিকাদার এ প্রতিবেদককে বলেন, জুন মাসে বাজেট হয়েছে। সে অনুযায়ী এই উপজেলার ঠিকাদারি কাজ আগেই শুরু হয়েছে। তা ছাড়া ঠিকাদারের সাথে মৌখিক চুক্তিতে ঘুষ-বাণিজ্য আদায় না করে সে যাবে না বলে মনে হচ্ছে । ঠিকাদাররা বলেন, গত তিন বছর যাবত এলজিইডি কেরানীগঞ্জের দায়িত্বে ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদ উল্লাহ। এ সময় তিনি মাদারীপুরের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী শাহজাহানের পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। কোনো ঠিকাদার টুঁ শব্দ পর্যন্ত করতে পারিনি। ৫ আগস্ট পুনরায় দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বিএনপি সেন্ট্রাল নেতাকে দিয়ে ফোন দেওয়াচ্ছেন মাহমুদ উল্লাহ। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতে পারে না। তা ছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী তার আত্মীয় হওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে জানান একাধিক ঠিকাদার।
অভিযুক্ত প্রকৌশলী কাজী মাহমুদ উল্লাহ নয়া দিগন্তকে বলেন, তার মা ক্যান্সারের রোগী হওয়ায় তিনি অন্যত্র বদলি হতে নারাজ। তাই এখনো বহাল রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, তার আপন চাচাত মামা সাবেক মন্ত্রী ও এমপি শাহজাহান খান। তা ছাড়া মাদারীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতিও তার আপন চাচা।

এ বিষয়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ আলম ও প্রধান প্রকৌশলীকে গত এক সপ্তাহ যাবত ফোন দিলেও তা রিসিভ করেননি তারা।