ঢাকা ০৯:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদ খনন কাজে অনিয়মের অভিযোগ

যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদ খনন কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। খননকৃত মাটি নদের মধ্যেই ফেলা হচ্ছে। ফলে নদের প্লাবনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সরজমিনে ঝিকরগাছা পৌরসদরের সড়কসেতু ও রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন স্থানের দু’পাশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, কপোতাক্ষ নদ খননে নানা অনিয়ম হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশেষ সুবিধা নিয়ে নদের উত্তর পাশের (বাজার) সংলগ্ন বেশ কয়েকটি মালিকানার পুকুর ও অসংখ্য নিচু জমি ভরাট করতে দেখা গেছে। এ কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নদের ম্যাপ অনুযায়ী মাঝখান বরাবর খননের পরিবর্তে এক শ্রেণির প্রভাবশালী কিছু অসাধু মানুষের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে দক্ষিণ (পুরানন্দরপুর সাদ্দামপাড়ার) দিকে সরিয়ে নদ খনন করা হচ্ছে বলে কপোতাক্ষ পাড়ের অসংখ্য মানুষের অভিযোগ রয়েছে। ফলে মোবারকপুর নিমতলা এলাকার পৌরসভার নির্মিত সিঁড়ি ঘাটটি বর্তমানে পানি থেকে অন্তত ৫০ ফুট ওপরে পড়ে রয়েছে।

এ বিষয়ে কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের স্থানীয় নেতারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডর গাফিলতি ও কর্মকর্তাদের ঠিকমত তদারকি  না করার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো খননকৃত মাটি নদের মধ্যেই ফেলছে। সে কারণে নদের চেহারা সরু খালে পরিণত হচ্ছে। নদ খননের আগে এর যে প্রশস্থতা ছিল, খননের পরে তা আরও ছোট সরু খালে পরিণত হচ্ছে। এসব বিষয়ে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম মমিনুল ইসলাম দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।

ঠিকাদার আব্দুল মান্নান  বলেন, কপোতাক্ষ খননে কোন অনিয়ম করা হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সীমানা বরারব খনন করা হচ্ছে। তবে মালিরা জমি ও পুকুর ভরাটের বিষয় নিয়ে বলেন, খননের শুরুতে কয়েকটি পুকুর ভরাট করা হয়েছিল। বর্তমানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে গত দু’দিনে পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের কোন প্রতিনিধিকে কপোতাক্ষ খননের স্থানে পাওয়া যায়নি।

কপোতাক্ষ নদ খনন প্রকল্পের আওতায় ১১জন ঠিকাদারের মাধ্যমে যশোরের চৌগাছা উপজেলার তাহেরপুর থেকে ঝিকরগাছা উপজেলা ও মণিরামপুর উপজেলার চাকলা পর্যন্ত মোট ৭৯ কিলোমিটার কপোতাক্ষ নদ পুনঃখনন কাজ চলমান। ২০২১ সালের আগস্ট থেকে খনন কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পানি বেশি থাকায় দেরিতে শুরু হয়েছিল। ২০২২ সালের প্রথমদিকে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

কপোতাক্ষ নদের উৎপত্তিস্থল চুয়াডাঙ্গা জেলার মাথাভাঙ্গা নদী থেকে। নদটি যশোরের চৌগাছা উপজেলায় ভৈরব ও কপোতাক্ষ দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কাছে শিবসা নদীতে গিয়ে মিশে গেছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদ খনন কাজে অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট সময় ০৪:০০:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুন ২০২৩

যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় কপোতাক্ষ নদ খনন কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। খননকৃত মাটি নদের মধ্যেই ফেলা হচ্ছে। ফলে নদের প্লাবনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সরজমিনে ঝিকরগাছা পৌরসদরের সড়কসেতু ও রেলওয়ে সেতু সংলগ্ন স্থানের দু’পাশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, কপোতাক্ষ নদ খননে নানা অনিয়ম হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশেষ সুবিধা নিয়ে নদের উত্তর পাশের (বাজার) সংলগ্ন বেশ কয়েকটি মালিকানার পুকুর ও অসংখ্য নিচু জমি ভরাট করতে দেখা গেছে। এ কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নদের ম্যাপ অনুযায়ী মাঝখান বরাবর খননের পরিবর্তে এক শ্রেণির প্রভাবশালী কিছু অসাধু মানুষের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নিয়ে দক্ষিণ (পুরানন্দরপুর সাদ্দামপাড়ার) দিকে সরিয়ে নদ খনন করা হচ্ছে বলে কপোতাক্ষ পাড়ের অসংখ্য মানুষের অভিযোগ রয়েছে। ফলে মোবারকপুর নিমতলা এলাকার পৌরসভার নির্মিত সিঁড়ি ঘাটটি বর্তমানে পানি থেকে অন্তত ৫০ ফুট ওপরে পড়ে রয়েছে।

এ বিষয়ে কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের স্থানীয় নেতারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডর গাফিলতি ও কর্মকর্তাদের ঠিকমত তদারকি  না করার কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো খননকৃত মাটি নদের মধ্যেই ফেলছে। সে কারণে নদের চেহারা সরু খালে পরিণত হচ্ছে। নদ খননের আগে এর যে প্রশস্থতা ছিল, খননের পরে তা আরও ছোট সরু খালে পরিণত হচ্ছে। এসব বিষয়ে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম মমিনুল ইসলাম দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।

ঠিকাদার আব্দুল মান্নান  বলেন, কপোতাক্ষ খননে কোন অনিয়ম করা হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত সীমানা বরারব খনন করা হচ্ছে। তবে মালিরা জমি ও পুকুর ভরাটের বিষয় নিয়ে বলেন, খননের শুরুতে কয়েকটি পুকুর ভরাট করা হয়েছিল। বর্তমানে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে গত দু’দিনে পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের কোন প্রতিনিধিকে কপোতাক্ষ খননের স্থানে পাওয়া যায়নি।

কপোতাক্ষ নদ খনন প্রকল্পের আওতায় ১১জন ঠিকাদারের মাধ্যমে যশোরের চৌগাছা উপজেলার তাহেরপুর থেকে ঝিকরগাছা উপজেলা ও মণিরামপুর উপজেলার চাকলা পর্যন্ত মোট ৭৯ কিলোমিটার কপোতাক্ষ নদ পুনঃখনন কাজ চলমান। ২০২১ সালের আগস্ট থেকে খনন কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পানি বেশি থাকায় দেরিতে শুরু হয়েছিল। ২০২২ সালের প্রথমদিকে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

কপোতাক্ষ নদের উৎপত্তিস্থল চুয়াডাঙ্গা জেলার মাথাভাঙ্গা নদী থেকে। নদটি যশোরের চৌগাছা উপজেলায় ভৈরব ও কপোতাক্ষ দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কাছে শিবসা নদীতে গিয়ে মিশে গেছে।