ঢাকা ০৭:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্গাপুরে গোপনে চারটি আম গাছ কেটে বিক্রি করলেন কলেজ অধ্যক

রাজশাহীর দুর্গাপুরের দাওকান্দি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গোপনে কলেজের চারটি আমগাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গত ১০ জুন শনিবার সবার অজান্তে ভোর রাতে কলেজ ভবনের প্রধান ফটকের পাশে থাকা চারটি আমগাছ কেটে ফেলেন। এর পরে সেই কাটা গাজগুলো সকাল ১০টার আগেই গোপনে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক ও হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল মতিন যোগসাজশ করে কাউকে কিছু না জানিয়ে গাছ গুলো কেটে বিক্রি করা হয়। স্থানীয়দের ধারণা চারটি আমগাছের আনুমানিক মূল্য প্রায় অর্ধলাখ টাকা।

বিধিমতে, তাজা গাছ কাটার নিয়ম না থাকলেও তা মানা হয়নি। ঝড়ে ভেঙে পড়া বা মরে যাওয়া গাছ কাটার নিয়ম থাকলেও সভা আহবান করে রেজুলেশনের মাধ্যমে বন বিভাগের অনুমতির জন্য আবেদনের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। অধ্যক্ষ তার দলীয় পদকে বল প্রয়োগ করে তিনি গাছগুলো কেটে বিক্রি করেছেন। অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদ।

দাওকান্দি কলেজের একজন শিক্ষক এবং ওই কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দাওকান্দি কলেজের নিজস্ব ভূসম্পত্তি, পুকুর ও আমবাগান রয়েছে। এগুলো নামমাত্র লীজ দিয়ে সেই অর্থ কলেজ ফান্ডে জমা না রেখে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক। কলেজের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীকে হাত করে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে অধ্যক্ষ মগেরমুল্লকে পরিণত করেছেন। নিজের খেয়াল খুশিমতো পরিচালনা করেন কলেজের সার্বিক কার্যক্রম। অভিযোগ উঠেছে, কলেজের আমবাগান বা আমগাছ গুলো কাঁটাখালি এলাকার জনৈক উজ্জ্বল নামের এক ব্যাক্তির কাছে লীজ দেয়া হয়েছিলো। আর ক’দিন বাদেই গাছে থাকা আম গুলো পেড়ে নিতেন ব্যবসায়ী          উজ্জ্বল। লীজ দেয়া গাছ গুলোর মধ্যে ওই চারটি আমগাছও ছিলো। আম গুলো পেড়ে নেয়ার সুযোগও দেয়া হয়নি তাকে।

ব্যবসায়ী উজ্জ্বল অভিযোগ করেন, দাওকান্দি সরকারি কলেজের আম গাছগুলো এবার লীজ নিয়েছিলেন তিনি। কেটে নেয়া গাছ গুলোতেও আম ছিলো। কিন্তু তাকে না জানিয়েই গোপনে কলেজ কর্তৃপক্ষ গাছ গুলো কেটে নেয়ায় তাঁর কিছু লোকসান গুনতে হবে।

জানতে চাইলে দাওকান্দি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক গাছ কাটার কথা প্রথমে স্বীকার করেন এর পরে বলেন গাছ গুলো আকারে ছোট। কলেজের পাশেই মসজিদ নির্মাণের জন্য গাছ গুলো কাটা হয়েছে। উপজেলা বন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, দাওকান্দি কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার দপ্তরে গাছ কাটার কোনো আবেদন করেননি। এমনকি এই বিষয়টি আমার জানাও নাই।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্গাপুরে গোপনে চারটি আম গাছ কেটে বিক্রি করলেন কলেজ অধ্যক

আপডেট সময় ১২:২১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুন ২০২৩

রাজশাহীর দুর্গাপুরের দাওকান্দি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গোপনে কলেজের চারটি আমগাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গত ১০ জুন শনিবার সবার অজান্তে ভোর রাতে কলেজ ভবনের প্রধান ফটকের পাশে থাকা চারটি আমগাছ কেটে ফেলেন। এর পরে সেই কাটা গাজগুলো সকাল ১০টার আগেই গোপনে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক ও হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল মতিন যোগসাজশ করে কাউকে কিছু না জানিয়ে গাছ গুলো কেটে বিক্রি করা হয়। স্থানীয়দের ধারণা চারটি আমগাছের আনুমানিক মূল্য প্রায় অর্ধলাখ টাকা।

বিধিমতে, তাজা গাছ কাটার নিয়ম না থাকলেও তা মানা হয়নি। ঝড়ে ভেঙে পড়া বা মরে যাওয়া গাছ কাটার নিয়ম থাকলেও সভা আহবান করে রেজুলেশনের মাধ্যমে বন বিভাগের অনুমতির জন্য আবেদনের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। অধ্যক্ষ তার দলীয় পদকে বল প্রয়োগ করে তিনি গাছগুলো কেটে বিক্রি করেছেন। অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদ।

দাওকান্দি কলেজের একজন শিক্ষক এবং ওই কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দাওকান্দি কলেজের নিজস্ব ভূসম্পত্তি, পুকুর ও আমবাগান রয়েছে। এগুলো নামমাত্র লীজ দিয়ে সেই অর্থ কলেজ ফান্ডে জমা না রেখে কয়েক কোটি টাকা লোপাট করেছেন অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক। কলেজের কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীকে হাত করে এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে অধ্যক্ষ মগেরমুল্লকে পরিণত করেছেন। নিজের খেয়াল খুশিমতো পরিচালনা করেন কলেজের সার্বিক কার্যক্রম। অভিযোগ উঠেছে, কলেজের আমবাগান বা আমগাছ গুলো কাঁটাখালি এলাকার জনৈক উজ্জ্বল নামের এক ব্যাক্তির কাছে লীজ দেয়া হয়েছিলো। আর ক’দিন বাদেই গাছে থাকা আম গুলো পেড়ে নিতেন ব্যবসায়ী          উজ্জ্বল। লীজ দেয়া গাছ গুলোর মধ্যে ওই চারটি আমগাছও ছিলো। আম গুলো পেড়ে নেয়ার সুযোগও দেয়া হয়নি তাকে।

ব্যবসায়ী উজ্জ্বল অভিযোগ করেন, দাওকান্দি সরকারি কলেজের আম গাছগুলো এবার লীজ নিয়েছিলেন তিনি। কেটে নেয়া গাছ গুলোতেও আম ছিলো। কিন্তু তাকে না জানিয়েই গোপনে কলেজ কর্তৃপক্ষ গাছ গুলো কেটে নেয়ায় তাঁর কিছু লোকসান গুনতে হবে।

জানতে চাইলে দাওকান্দি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক গাছ কাটার কথা প্রথমে স্বীকার করেন এর পরে বলেন গাছ গুলো আকারে ছোট। কলেজের পাশেই মসজিদ নির্মাণের জন্য গাছ গুলো কাটা হয়েছে। উপজেলা বন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, দাওকান্দি কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার দপ্তরে গাছ কাটার কোনো আবেদন করেননি। এমনকি এই বিষয়টি আমার জানাও নাই।