সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে কৃষকের চাষাবাদ করা বোরো ধানের সোনালী শীষে ভোরের উদিত সূর্যের কিরণে মুক্তা ঝরছে । সম্প্রতি একপশলা বৃষ্টিতে কৃষকের মুখে হাসি।সবুজ ধানের শীষে সোনালী আভায় বিকশিত চারপাশের প্রকৃতি।অনুকূল আবহাওয়ায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি।চারায় ধান বেরুনোর সময় বৃষ্টির হওয়ার ফলে দেদার বেরুচ্ছে ধান। হাওরজুড়ে যতটুকু চোখ যায়, শুধু দেখা যায় সোনালি ধান আর ধান। গোয়াইনঘাটের কৃষকরা লাভ বা লোকসানের কথা চিন্তা করেননা। কৃষির প্রতি ভালোবাসা থেকে প্রতিবারই ইরি ও বোরো ধানের চাষ করে থাকেন। বর্তমানে কৃষকের রোপন করা বোরো ধানের বাম্পার ফলনে লাভের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়,উপজেলার মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে সোনালী-সবুজের আভায় বোরো ধান। মৃদু বাতাসের দোলায় কৃষকের ক্লান্তিকে মিলিয়ে দিতে খেতগুলো যেন সদা তৎপর। বোরোর খেতগুলো দেখলে “ধনে ধানে পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা” কথাটির স্বার্থকতা খুজে পাওয়া যায়। হাড়ভাঙ্গা কঠোর পরিশ্রমের ফলে রোপিত ধান গাছের বুক চিরে বেরিয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। খুবই ভালো বের হচ্ছে সোনালী আভার ধানের বাইল। লক্ষ্য অর্জনের দিন গুনছেন এ অঞ্চলের হাজারো কৃষক। এদিকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাওর জুড়ে বিচ্ছিন্নভাবে শুরু হয়েছে আগাম জাতের ব্রি-২৮ জাতের ধান কাটা। দিগন্ত জোড়া সবুজ ফসলের মাঠ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরো বিকশিত করে তুলেছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত ইরি-বোরো ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোপুরি ভাবে ধান কাটা শুরু হবে। কোনো ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এবছর ভালোভাবে ফলন ঘরে তুলতে পারবেন। তখন পূরণ হবে তাদের স্বপ্ন।
গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি অফিসার রায়হান পারভেজ রনি জানান, প্রকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় এবার গোয়াইনঘাটে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলায় ৯ হাজার ৬৭২ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এখন ঠিকমত ফসল কেটে ধান গোলায় তুলার সময়। তিনি বলেন,
অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে ইরি বোরো ধানের বাম্পার ফলনে মাঠে মাঠে দোল খাওয়া নতুন ধানের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
বর্তমান সময়ের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ধানকে রক্ষা করতে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ধান পাকা মাত্রই ধান কাটার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষকদের। এছাড়া শ্রমিক সংকট মোকাবেলায় প্রতিটা ইউনিয়নে ধান কাটার কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন রয়েছে। ইউনিয়নের প্রতি কৃষক এই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। তিনি জানান, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাওরে বিচ্ছিন্নভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোপুরি ভাবে ধান কাটা শুরু হবে।