ঢাকা ১১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

৩০ শতাংশ নিয়োগকারী কর্মী ছাঁটাই করল এয়ারবিএনবি

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বৈশ্বিক বড় বড় নানা প্রতিষ্ঠানে যেন কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক পড়েছে। টুইটার, মেটা, অ্যামাজনসহ একের পর এক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করছে। আর তাই অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ছাঁটাই আতঙ্ক।

আর এই পরিস্থিতিতে কোম্পানির ৩০ শতাংশ নিয়োগকারী কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেছে সানফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক মার্কিন আবাসন সেবাদাতা কোম্পানি এয়ারবিএনবি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে রোববার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বল্পমেয়াদে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সুবিধা প্রদানকারী সংস্থা এয়ারবিএনবি চলতি সপ্তাহে তার নিয়োগকারী কর্মীদের ৩০ শতাংশকে ছাঁটাই করেছে বলে ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মার্কিন এই কোম্পানির মোট কর্মী সংখ্যা ৬ হাজার ৮০০ জন এবং ছাঁটাইয়ের এই সিদ্ধান্তে তাদের ০.৪ শতাংশ প্রভাবিত হবে।

কোম্পানির একজন মুখপাত্র ব্লুমবার্গকে বলেছেন, ‘গত তিন বছরে আমরা একটি ক্ষীণ এবং আরও বেশি মনোযোগী কোম্পানিতে পরিণত হয়েছি। কোম্পানিটি এই বছর তার কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির আশা করছে।’

তবে তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের নিয়োগ কর্মকাণ্ডের সম্ভাব্য সংখ্যা পূরণের জন্য কোম্পানির নিয়োগকারী দলের আকার পুনর্গঠন এবং কমানোর বিষয়ে আমাদের সংস্থা একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

এয়ারবিএনবি বলছে, নিয়োগকারী কর্মীদের ৩০ শতাংশকে সরিয়ে দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত আরও ব্যাপক কোনও ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত নয়। গত বছর ১১ শতাংশ বৃদ্ধির বিপরীতে মার্কিন এই কোম্পানিটি ২০২৩ সালে ২ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে কর্মী বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। এছাড়া চলতি বছর নিজেদের সামগ্রিক কর্মী সংখ্যা আরও প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে এয়ারবিএনবি।

যদিও প্রতিযোগী অনেক প্রতিষ্ঠান বর্ধিত ঋণ হার এবং আতিথেয়তা শিল্পে সামগ্রিক মন্দার কারণে নিজেদের মুনাফা বা বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস করেছে, তারপরও যে কয়েকটি আইটি কোম্পানি বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে তাদের মধ্যে এয়ারবিএনবিও রয়েছে। মূলত করোনা মহামারির পরে বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে ভ্রমণের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভ্রমণ শিল্পের বেশিরভাগই স্থিতিশীল রয়েছে।

গত মাসে মার্কিন কোম্পানিটি তার প্রথম বার্ষিক মুনাফার খবর সামনে আনে। তারা জানায়, ২০২২ সালের শেষ তিন মাসে ট্রাভেল বুকিং রিবাউন্ড হওয়ায় রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়ি-ভাড়া সেবা দেওয়া এই প্ল্যাটফর্মটি বলেছে, তারা গত বছর প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। আর গত বছরের শেষ প্রান্তিকে সংস্থাটির মুনাফার পরিমাণ ৩১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সান ফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালে নেট আয় করেছে ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যদিও আগের বছরে তাদের ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৫২ মিলিয়ন ডলার।

অবশ্য করোনা মহামারির সময় এয়ারবিএনবি তার কর্মীদের ২৫ শতাংশ ছাঁটাই করেছিল। সংখ্যায় যা প্রায় ১ হাজার ৯০০ কর্মী। কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর বৈশ্বিক নানা বিধিনিষেধের জেরে ভ্রমণসহ বাড়ি ভাড়ার মতো কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গেলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ৬ থেকে ৭ মাসে বিশ্বের অনেক বড় কোম্পানি তাদের কর্মী ছাঁটাই করেছে। এর মধ্যে টুইটার, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের মতো অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

এছাড়া সম্প্রতি অ্যালফাবেট’র সেলফ ড্রাইভিং প্রযুক্তি ইউনিট ওয়েমো থেকে দ্বিতীয় দফায় কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই প্রতিষ্ঠান থেকে দ্বিতীয় দফায় ১৩৭ জন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এখন পর্যন্ত ওই কোম্পানির মোট কর্মীর ৮ শতাংশ অর্থাৎ ২০৯ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে

৩০ শতাংশ নিয়োগকারী কর্মী ছাঁটাই করল এয়ারবিএনবি

আপডেট সময় ০৪:৩১:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বৈশ্বিক বড় বড় নানা প্রতিষ্ঠানে যেন কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক পড়েছে। টুইটার, মেটা, অ্যামাজনসহ একের পর এক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করছে। আর তাই অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ছাঁটাই আতঙ্ক।

আর এই পরিস্থিতিতে কোম্পানির ৩০ শতাংশ নিয়োগকারী কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেছে সানফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক মার্কিন আবাসন সেবাদাতা কোম্পানি এয়ারবিএনবি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে রোববার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বল্পমেয়াদে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সুবিধা প্রদানকারী সংস্থা এয়ারবিএনবি চলতি সপ্তাহে তার নিয়োগকারী কর্মীদের ৩০ শতাংশকে ছাঁটাই করেছে বলে ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মার্কিন এই কোম্পানির মোট কর্মী সংখ্যা ৬ হাজার ৮০০ জন এবং ছাঁটাইয়ের এই সিদ্ধান্তে তাদের ০.৪ শতাংশ প্রভাবিত হবে।

কোম্পানির একজন মুখপাত্র ব্লুমবার্গকে বলেছেন, ‘গত তিন বছরে আমরা একটি ক্ষীণ এবং আরও বেশি মনোযোগী কোম্পানিতে পরিণত হয়েছি। কোম্পানিটি এই বছর তার কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধির আশা করছে।’

তবে তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের নিয়োগ কর্মকাণ্ডের সম্ভাব্য সংখ্যা পূরণের জন্য কোম্পানির নিয়োগকারী দলের আকার পুনর্গঠন এবং কমানোর বিষয়ে আমাদের সংস্থা একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

এয়ারবিএনবি বলছে, নিয়োগকারী কর্মীদের ৩০ শতাংশকে সরিয়ে দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত আরও ব্যাপক কোনও ছাঁটাইয়ের ইঙ্গিত নয়। গত বছর ১১ শতাংশ বৃদ্ধির বিপরীতে মার্কিন এই কোম্পানিটি ২০২৩ সালে ২ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে কর্মী বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। এছাড়া চলতি বছর নিজেদের সামগ্রিক কর্মী সংখ্যা আরও প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে এয়ারবিএনবি।

যদিও প্রতিযোগী অনেক প্রতিষ্ঠান বর্ধিত ঋণ হার এবং আতিথেয়তা শিল্পে সামগ্রিক মন্দার কারণে নিজেদের মুনাফা বা বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস করেছে, তারপরও যে কয়েকটি আইটি কোম্পানি বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে তাদের মধ্যে এয়ারবিএনবিও রয়েছে। মূলত করোনা মহামারির পরে বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে ভ্রমণের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভ্রমণ শিল্পের বেশিরভাগই স্থিতিশীল রয়েছে।

গত মাসে মার্কিন কোম্পানিটি তার প্রথম বার্ষিক মুনাফার খবর সামনে আনে। তারা জানায়, ২০২২ সালের শেষ তিন মাসে ট্রাভেল বুকিং রিবাউন্ড হওয়ায় রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। বাড়ি-ভাড়া সেবা দেওয়া এই প্ল্যাটফর্মটি বলেছে, তারা গত বছর প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। আর গত বছরের শেষ প্রান্তিকে সংস্থাটির মুনাফার পরিমাণ ৩১৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

সংবাদমাধ্যম বলছে, সান ফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠান ২০২২ সালে নেট আয় করেছে ১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যদিও আগের বছরে তাদের ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩৫২ মিলিয়ন ডলার।

অবশ্য করোনা মহামারির সময় এয়ারবিএনবি তার কর্মীদের ২৫ শতাংশ ছাঁটাই করেছিল। সংখ্যায় যা প্রায় ১ হাজার ৯০০ কর্মী। কোভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর বৈশ্বিক নানা বিধিনিষেধের জেরে ভ্রমণসহ বাড়ি ভাড়ার মতো কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গেলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গত ৬ থেকে ৭ মাসে বিশ্বের অনেক বড় কোম্পানি তাদের কর্মী ছাঁটাই করেছে। এর মধ্যে টুইটার, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের মতো অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

এছাড়া সম্প্রতি অ্যালফাবেট’র সেলফ ড্রাইভিং প্রযুক্তি ইউনিট ওয়েমো থেকে দ্বিতীয় দফায় কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই প্রতিষ্ঠান থেকে দ্বিতীয় দফায় ১৩৭ জন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এখন পর্যন্ত ওই কোম্পানির মোট কর্মীর ৮ শতাংশ অর্থাৎ ২০৯ জনকে ছাঁটাই করা হয়েছে।