র্যাব-১৫ কর্তৃক ক্লু-লেস হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন, আলামত উদ্ধার এবং হত্যাকান্ডের মূল আসামী, সংঘবদ্ধ অটো রিকশা ছিনতাই চক্রের দলনেতাসহ ০২ সদস্যকে কক্সবাজার সদর এলাকা হতে গ্রেফতার।
গত ০৯/০২/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ সকাল ০৮.০০ ঘটিকার সময় কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের মিয়াজী পাড়া এলাকার সুপারি বাগান থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
ক্লুলেস এই হত্যা কান্ডের খবর পাওয়া মাত্র র্যাব ১৫ তদন্ত কার্যক্রম এবং গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে নিহত ব্যক্তির বিস্তারিত পরিচয় মোরশেদ আলম (২০), পিতা-মোঃ শামসুল আলম, সাং-দক্ষিণপাড়া, ০৩নং ওয়ার্ড, চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার জানা যায়। ভিকটিম মোরশেদ আলম পেশায় একজন অটো-রিকশা চালক।
ঘটনা সূত্রে জানা যায় গত ০৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ভিকটিম মোরশেদ আলম অন্যান্য দিনের মত তার নিজের অটোরিকশা নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়। পরবর্তীতে ০৯ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের রক্তাক্ত মৃতদেহ বর্ণিত সুপারি বাগানে পাওয়া যায়। কিন্তু ঘটনাস্থলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয় এটি একটি সংঘবদ্ধ অটো রিকশা ছিনতাই চক্র কর্তৃক সংঘটিত হত্যাকান্ড। র্যাব-১৫ কক্সবাজার বর্ণিত ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হওয়ার সাথে সাথে আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন কৌশলাদি অবলম্বনসহ এলাকায় গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।
পরবর্তীতে র্যাব ১৫ এর আভিযানিক দল গত ১৮/০২/২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা অনুঃ ০৬.০০ টার সময় কক্সবাজার সদর থানাধীন পৌরসভা ০৪নং ওয়ার্ড উত্তর টেকপাড়া জনতার সড়কের জনৈক বোরহান উদ্দিন এর ভাড়া বাসা হতে প্রধান আসামী মোরশেদ আলম(৩১), পিতা-আব্দু শুক্কুর, সাং-মিয়াজিপাড়া, ০৪নং ওয়ার্ড জালালাবাদ, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং তার নিকট হতে ভিকটিম কর্তৃক ব্যবহৃত মোবাইল সেটটি উদ্ধার করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি ধৃত আসামী স্বীকার করে এবং ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য সহযোগীদের নাম ঠিকানা প্রকাশ করে।
পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই তারিখ রাত ০৮.০০ টায় কক্সবাজার সদর থানাধীন ০৩নং পিএমখালী ইউনিয়নের ০৭নং ওয়ার্ডস্থ পশ্চিম মুহসিনিয়া পাড়া হতে মোঃ শাহ আলম (৪২), পিতা-ছগির আহমদ, সাং-চৌধুরীপাড়া বারুয়াখালী, পোষ্ট-গুনাপাড়া ০৯নং ওয়ার্ড, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজারকে গ্রেফতারসহ ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মোরশেদ একজন অটো-রিকশা ছিনতাইকারী চক্রের দলনেতা। বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতারকৃত মোরশেদ ও তার সহযোগী ছিনতাই চক্রের সদস্যের মাধ্যমে কক্সবাজার শহর এবং আশপাশ এলাকার অটো-রিকশা ভাড়ার কথা বলে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করতঃ সর্বোস্ব লুটে নেয় এবং ছিনতাইকৃত অটোরিকশা অন্যত্র বিক্রি করে দেয়।
ঘটনার দিন বর্ণিত ব্যক্তিরা এবং কতিপয় সহযোগীসহ ভিকটিম মোরশেদ আলমের অটো-রিকশাটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ভাড়া নেয়। পরবর্তীতে ভিকটিমকে হত্যা পূর্বক অটো-রিকশা ও ভিকটিমের মোবাইল ফোন ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর হতে এ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামীরা গ্রেফতার এড়াতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে চলে যায়।
উল্লেখ্য যে, প্রাথমিকভাবে ভিকটিমের পরিবারের ধারনা ছিল জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিবেশী কেউ শত্রুতা মূলকভাবে হত্যা করতে পারে এবং এই সংক্রান্তে কতিপয় ব্যক্তিকে বিবাদী করে ভিকটিমের পরিবার কক্সবাজার ঈদগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মোরশেদ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে বর্ণিত হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হলো। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়’কে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।