মহিলা নাটক সাজিয়েছেন বলছেন স্থানীয় পুলিশ ফাড়ির এসআই ইসমাইল হোসেন সীমান্তবর্তী এলাকার গৃহবধু রোজিনা আক্তাকে মাদক কারবারে সাক্ষী ও অবৈধ মাদক ব্যবসা না করার জেরে ক্রমাগত নির্যাতন করছে ওই এলাকার মাদক কারবারি চক্র।
একাধিক মাদক মামলার আসামি ও এলাকায় মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত শাহজাহান মিয়ার লোকজন উপজেলার চৌমুহনী ইউপির কমলপুর সীমান্ত এলাকার স্বপন মিয়ার স্ত্রী রোজিনা(২৮) নামের ওই মেয়েকে জোরপূর্বক মাদক পাচার করাতে চায়।ওই মেয়ে রাজি না হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকেই ক্রমাগত নির্যাতন করছে শাহজাহান গ্রুপের লোকজন।
ওই নারী শাহজাহান মিয়ার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ও লাগোয়া বাড়ির বাসিন্দা হওয়ায় বিভিন্ন মাদক কারবারিরা এদের বাড়িতে রাত হলেই আনাগোনা হতে থাকে।ফলে মাদক ও চোরাচালানে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।সে তাদের মাদক কারবারে বাধা ও সাক্ষী হওয়ার কারণে তাদের কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে।
তার উপর নির্যাতনের কারনে ওই নারী বিগত ২৭-৬-২০২২ ইং তারিখে মাধপুর থানায় ১৪৬৪ নং সাধারন ডাইরীও করেন।যার কোন আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয় নি।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তাকে শাহজাহান মিয়ার লোকজন রোজিনাকে মাইরধর করে পা কেটে ফেলে রক্তাক্ত ও জখম করে।পরে স্থানীয় কালবেলা পত্রিকার সাংবাদিক ও মাধবপুর মডেল প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি মুজাহিদ মসি মেয়ের স্বামী ও ভাইয়ের কান্নাকাটিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর মাধ্যমে মেয়েটিকে উদ্ধার করে।পরে শাহজাহান গ্রুপের লোকজন স্থানীয় মনতলা বাজারে মুজাহিদ মসি-র উপরে হামলা চালায়।
এ নিয়ে থানায় তারা ডায়েরি করেছেন স্থানীয় ওই সাংবাদিক। কিছুদিন আগে ওই এলাকার দুলু মিয়া নামের এক লোক মাদক পাচার না করায় মাদক কারবারিদের হামলার শিকার হন।সে থানায় অভিযোগও করলেও কোন ফল মেলে নি।
মাধবপুরে ইউএনও মঞ্জুরুল আহসান বলেন,আহত নারীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে বিশেষভাবে বলা হচ্ছে বলে দেয়া হয়েছে এবং থানার ওসিকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য বলে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ বলেন,এলাকার মাদক কারবারীদের কোন ভাবেই দমানো যাচ্ছে না।আমরা আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে বারবার বললেও এদের কর্মকান্ড চলছে বহাল তবিয়তে। সে আরো বলেন,ভুক্তভোগী নারী উপর আক্রমণের বিষয়ে তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে আমার গ্রাম পুলিশ জমির মিয়াকে ঘটনাস্থলে প্রেরন করি এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করাই। নারীর উপর আক্রমনের ঘটনাটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাজানি হলে তাদের হস্তক্ষেপে স্থানীয় কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ি এসআই ইসমাইল হোসেন বিষয়টি তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে আসেন।ততক্ষণে মেয়েটিকে মাধবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রেরন করা হয়ে যায়।
কিন্তু ওই কর্মকর্তা বলছেন ভিন্ন কথা তিনি বলেন, সাক্ষী প্রমানে ভুক্তভোগী মেয়ের বিবৃতি পুরো মিথ্যা।আগেরবারও ওই মেয়ের উপর হামলার তদন্ত করতে আসলেও তখন তিনি তদন্তে সত্যতা পাননি।
এসআই ইসমাইল হোসেন আরো বলেন, ওই নারী রোজিনা নিজের পা নিজেই কেটে নাটক সাজিয়েছেন। স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ইবাইদুর রহমান বিলাল,কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে গোপন লেনদেনে লিপ্ত।কমলপুর সীমান্ত এলাকার রোজিনা নামের মেয়েটিকে মাদক কারবারি কর্তৃক নির্যাতনের বিষয়টি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ইসমাইল হোসেন পরিদর্শন করলেও তিনি মাদক কারবারীদের গোপন লেনদেনে করে মনগড়া রিপোর্ট পাঠিয়েছেন ও গুজব ছড়াচ্ছেন।
গতকাল ১৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগী রোজিনা বলপূর্বক মাদক পাচারে বাধ্য করা ও তার উপর অত্যাচার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসি বরাবার একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
এদিকে কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক মাদক কারবারীদের আস্কারা ও আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন উপজেলার সচেতন মহল। এলাকায় মাদক ও সীমান্তে চোরাচালান সিন্ডিকেট বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও ভুক্তভোগী রোজিনা আক্তারের জীবনের নিরাপত্তা দেয়া ও হামলাকারি মাদক কারবারিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্যে দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।