ঢাকা ০২:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা।

কক্সবাজারের হোটেলে নারী হত্যার ৪৮ ঘন্টার ব্যবধানে হত্যার দায়ে আটক বৃদ্ধ

বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সন্ধ্যা আনুমানিক ৭:টার দিকে কক্সবাজার পৌর শহরের বাজারঘাটা এলাকায় ‘সি বার্ড’ নামে একটি আবাসিক হোটেল থেকে একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ভিকটিম এবং আসামী মোস্তাফিজুর রহমান স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে উক্ত হোটেলে উঠে।

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ দুপুরের দিকে মোস্তাফিজুর রুমের বাইরে তালা দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে ভেতরে আলো জ্বলতে দেখে হোটেল বয় ডাকাডাকি করে। কিন্তু কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুলিশকে খবর দেয়া হলে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে সিআইডির একটি অপরাধ টিম ঘটনাস্থলে আসে এবং তথ্য নেয়া শেষ হলে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

ঘটনার পর হতে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল হতে পলাতক ছিল। এই হত্যাকান্ডের ঘটনা প্রকাশ্যে আসলে উক্ত ঘটনাটি দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। হত্যাকান্ডের ঘটনাটি প্রকাশ পেলে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ও প্রাথমিক তথ্যাদি সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে।

পরবর্তীতে এই ঘটনা সংক্রান্তে র‌্যাব-৭, র‌্যাব-১৫ ও র‌্যাব ফোর্সেস গোয়েন্দা শাখা একযোগে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করলে আসামীর অবস্থান চট্টগ্রাম হিসেবে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান এর অবস্থান চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন চৌধুরীরহাট এলাকায় বলে জানা যায় এবং র‌্যাব-৭ এর একটি চৌকষ আভিযানিক দল গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ আনুমানিক ৭: টারদিকে বর্নিত স্থান হতে উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় হত্যা মামলার একমাত্র আসামি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (৫১), পিতাঃ আব্দুল জব্বার, সাং-আতাইকাঠী, থানা-বাগেরহাট সদর, জেলা-বাগেরহাট’কে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মোস্তাফিজ ভিকটিমকে হত্যার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, নিহত নারীর সাথে সে বৈবাহিকভাবে সম্পর্কিত নয় তবে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা হোটেলে গমন করেন।

আসামীর নিজ ভাষ্যমতে, পূর্বেও কয়েকবার তিনি অন্যান্য নারীসহ ভোগবিলাসের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন হোটেলে সাময়িক সময়ের জন্য যাতায়াত করেছেন। তবে, এবার এই নারীকে নিয়ে হোটেল কক্ষে অবস্থানকালীন সময়ে বাক-বিতন্ডার সূত্র ধরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান উক্ত নারীর উপর চড়াও হন এবং একপর্যায়ে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে তাকে হত্যা করে হোটেল থেকে পালিয়ে যান।

হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ ভালোবাসা দিবসের সকাল ০৭:৫৮ ঘটিকায় সে উক্ত নারীসহ হোটেলে প্রবেশ করে। প্রবেশের মুহুর্তে নিহত নারীর পরনের কাপড় ও মৃতদেহের পরনীয় কাপড় একই বলে প্রতীয়মান। এছাড়াও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান এর চেহারা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।

গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তাফিজকে তল্লাশী করে তার পকেট থেকে আগ্রা ১০০ নামক সিলডেনাফিল গোত্রের যৌন উত্তেজক ঔষধ পাওয়া যায় এবং এ বিষয়ে তিনি বলেন, তার বয়স ৫১ বছর এবং নারীসঙ্গের জন্য এই ট্যাবলেট তার প্রয়োজন হয়।

এছাড়াও আসামী মোস্তাফিজুর রহমানের শরীরের বিভিন্নস্থানে (চোখের নীচে, ঘাড়ে ও কানের পিছনে) নখের আচড় বিদ্যমান। নিহত ভিকটিমের ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের মাধ্যমে উক্ত নারীর পরিচয় সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। নিহত নারীর অভিভাবকত্ব কেউ দাবি না করায় তার সম্পর্কে বেশিকিছু জানা সম্ভব হয়নি। নিহত নারীর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অদ্যবধি প্রস্তুত না হওয়ার কারণে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশের প্রাথমিক বক্তব্যে এটি হত্যাকান্ড হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন ও মৃত্যুর পর তার শারীরিক লক্ষণসমূহ বিবেচনা করলে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে হিসেবে ধারনা করা যায়। ময়নাতদন্তের পর নিহত নারীর অভিভাবকত্ব কেউ দাবি না করায় আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয়।

উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তাফিজুর রহমানের ক্রিমিনাল রেকর্ড যাচাই করে জানা যায় ইতোপূর্বে তিনি ০৫ বার গ্রেফতার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও কক্সবাজার জেলায় ০৪টি মামলা সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এছাড়াও পূর্বে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অন্তর্গত দক্ষিনখান থানায় ২৩ জুন ২০১৮ তারিখে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা সংক্রান্ত একটি মামলা হয় এবং উক্ত মামলায় তিনি গ্রেফতার হন। তার অপরাধ ও চরিত্র বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় তিনি পেশাগতভাবে মাদক ব্যবসায়ী ও নারীসঙ্গে আসক্ত।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি

কক্সবাজারের হোটেলে নারী হত্যার ৪৮ ঘন্টার ব্যবধানে হত্যার দায়ে আটক বৃদ্ধ

আপডেট সময় ০৪:৪৬:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র‌্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সন্ধ্যা আনুমানিক ৭:টার দিকে কক্সবাজার পৌর শহরের বাজারঘাটা এলাকায় ‘সি বার্ড’ নামে একটি আবাসিক হোটেল থেকে একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ভিকটিম এবং আসামী মোস্তাফিজুর রহমান স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে উক্ত হোটেলে উঠে।

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ দুপুরের দিকে মোস্তাফিজুর রুমের বাইরে তালা দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে ভেতরে আলো জ্বলতে দেখে হোটেল বয় ডাকাডাকি করে। কিন্তু কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুলিশকে খবর দেয়া হলে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে সিআইডির একটি অপরাধ টিম ঘটনাস্থলে আসে এবং তথ্য নেয়া শেষ হলে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়।

ঘটনার পর হতে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল হতে পলাতক ছিল। এই হত্যাকান্ডের ঘটনা প্রকাশ্যে আসলে উক্ত ঘটনাটি দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। হত্যাকান্ডের ঘটনাটি প্রকাশ পেলে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ও প্রাথমিক তথ্যাদি সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করে।

পরবর্তীতে এই ঘটনা সংক্রান্তে র‌্যাব-৭, র‌্যাব-১৫ ও র‌্যাব ফোর্সেস গোয়েন্দা শাখা একযোগে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করলে আসামীর অবস্থান চট্টগ্রাম হিসেবে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান এর অবস্থান চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন চৌধুরীরহাট এলাকায় বলে জানা যায় এবং র‌্যাব-৭ এর একটি চৌকষ আভিযানিক দল গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখ আনুমানিক ৭: টারদিকে বর্নিত স্থান হতে উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় হত্যা মামলার একমাত্র আসামি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (৫১), পিতাঃ আব্দুল জব্বার, সাং-আতাইকাঠী, থানা-বাগেরহাট সদর, জেলা-বাগেরহাট’কে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত মোস্তাফিজ ভিকটিমকে হত্যার সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, নিহত নারীর সাথে সে বৈবাহিকভাবে সম্পর্কিত নয় তবে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা হোটেলে গমন করেন।

আসামীর নিজ ভাষ্যমতে, পূর্বেও কয়েকবার তিনি অন্যান্য নারীসহ ভোগবিলাসের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন হোটেলে সাময়িক সময়ের জন্য যাতায়াত করেছেন। তবে, এবার এই নারীকে নিয়ে হোটেল কক্ষে অবস্থানকালীন সময়ে বাক-বিতন্ডার সূত্র ধরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান উক্ত নারীর উপর চড়াও হন এবং একপর্যায়ে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে তাকে হত্যা করে হোটেল থেকে পালিয়ে যান।

হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখ ভালোবাসা দিবসের সকাল ০৭:৫৮ ঘটিকায় সে উক্ত নারীসহ হোটেলে প্রবেশ করে। প্রবেশের মুহুর্তে নিহত নারীর পরনের কাপড় ও মৃতদেহের পরনীয় কাপড় একই বলে প্রতীয়মান। এছাড়াও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে আসামী মোস্তাফিজুর রহমান এর চেহারা স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।

গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তাফিজকে তল্লাশী করে তার পকেট থেকে আগ্রা ১০০ নামক সিলডেনাফিল গোত্রের যৌন উত্তেজক ঔষধ পাওয়া যায় এবং এ বিষয়ে তিনি বলেন, তার বয়স ৫১ বছর এবং নারীসঙ্গের জন্য এই ট্যাবলেট তার প্রয়োজন হয়।

এছাড়াও আসামী মোস্তাফিজুর রহমানের শরীরের বিভিন্নস্থানে (চোখের নীচে, ঘাড়ে ও কানের পিছনে) নখের আচড় বিদ্যমান। নিহত ভিকটিমের ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাইয়ের মাধ্যমে উক্ত নারীর পরিচয় সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। নিহত নারীর অভিভাবকত্ব কেউ দাবি না করায় তার সম্পর্কে বেশিকিছু জানা সম্ভব হয়নি। নিহত নারীর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অদ্যবধি প্রস্তুত না হওয়ার কারণে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশের প্রাথমিক বক্তব্যে এটি হত্যাকান্ড হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন ও মৃত্যুর পর তার শারীরিক লক্ষণসমূহ বিবেচনা করলে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে হিসেবে ধারনা করা যায়। ময়নাতদন্তের পর নিহত নারীর অভিভাবকত্ব কেউ দাবি না করায় আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয়।

উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তাফিজুর রহমানের ক্রিমিনাল রেকর্ড যাচাই করে জানা যায় ইতোপূর্বে তিনি ০৫ বার গ্রেফতার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও কক্সবাজার জেলায় ০৪টি মামলা সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এছাড়াও পূর্বে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অন্তর্গত দক্ষিনখান থানায় ২৩ জুন ২০১৮ তারিখে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা সংক্রান্ত একটি মামলা হয় এবং উক্ত মামলায় তিনি গ্রেফতার হন। তার অপরাধ ও চরিত্র বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় তিনি পেশাগতভাবে মাদক ব্যবসায়ী ও নারীসঙ্গে আসক্ত।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।