ঢাকা ০২:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব ডাক দিবস আজ

একদিকে ডাক বিভাগের বিভিন্ন সেবা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে, অন্যদিকে ডাক সেবার মানোন্নয়নে প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এ পটভূমিতে আজ রোববার (৯ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডাক দিবস।

জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইউনিভার্সাল পোস্টাল ইউনিয়ন (ইউপিইউ) প্রতিবছরের ৯ অক্টোবর ডাক দিবস হিসেবে পালন করে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ডাক অধিদপ্তর এ দিবসটি পালন করছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘পোস্ট ফর প্ল্যানেট’ বা ‘বিশ্বের জন্য ডাকঘর’।

ইউপিইউ গতকাল ৮ অক্টোবর সমন্বিত ডাক উন্নয়ন সূচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বিশ্বের ১৭২টি দেশের ডাক উন্নয়ন পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে আস্থা, পৌঁছানো, প্রাসঙ্গিকতা ও সহনশীলতা—এ চার সূচকের ভিত্তি করে একেকটি দেশের স্কোর ও ধাপ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সমন্বিত ডাক উন্নয়ন সূচকে ১৩ দশমিক ৯ পেয়েছে এবং দ্বিতীয় ধাপে অবস্থান করছে। আস্থায় ১৬ দশমিক ৩, পৌঁছানোয় ১৫ দশমিক ১, প্রাসঙ্গিকতায় ১ দশমিক ৭ ও সহনশীলতায় ২০ দশমিক ৭ পেয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে প্রতিবেশী নেপাল (১৪ দশমিক ৮), মিয়ানমার (১৫ দশমিক ১), পাকিস্তান (৪৬ দশমিক ২), ভারত (৫৭ দশমিক ৩) ও শ্রীলঙ্কা (৩৩ দশমিক ৬)। দ্বিতীয় ধাপে থাকা দেশগুলো সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দেশ মূলত অপারেশনে (কার্যক্রম) বেশি মনোযোগ দেয়। কিন্তু সামনের দশকে ভালো করতে হলে তাদের ডাক পরিষেবা ও ব্যবসায়িক মডেলের উন্নতি করতে হবে।

এদিকে, বিশ্ব ডাক দিবস উপলক্ষে ডাক অধিদফতরের উদ্যোগে আলোচনা সভা, পত্রলিখন প্রতিযোগিতা এবং বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল চিঠিপত্রের যুগ শেষ হওয়ায় দুর্দশাগ্রস্ত ডাক সার্ভিসকে একটা ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। আমরা ইতোমধ্যে সেটা অনেকটা পেরেছি। ই-কমার্সের জন্য ডাকঘর এখন একটা নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

দেশব্যাপী ডাকঘরের যে বিশাল অবকাঠামো ও জনবল আছে তা দেশের অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, হিমায়িত খাবার থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিতে ডাকঘরের বিকল্প নেই।

করোনাকালে কৃষকের ফল, সবজি পরিবহন থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে ডাক সেবার অবদান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, জরুরি সেবার আওতায় ডাকঘর একদিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের অভিযাত্রায় প্রেরক এবং গ্রাহকরা ডাকদ্রব্যের সর্বশেষ অবস্থান বা বিতরণের তথ্য ট্রেক করেই জানতে পারছেন।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সরকার ঘোষিত ‘মুজিববর্ষ-২০২০’ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের অংশ হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ প্রণীত কর্মসূচিতে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের ওপর স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনিয়র শিট, অ্যালবাম ও শিটলেট প্রকাশ করে ডাক বিভাগ ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারায় আমি গর্ববোধ করছি।

বিবৃতিতে তিনি বিশ্ব ডাক দিবস -২০২২’র সার্বিক সফলতা কামনা করেন। ১৮৭৪ সালের ৯ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে ২২টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গঠিত হয় ‘ইউনির্ভাসেল পোস্টাল ইউনিয়ন’। পরবর্তী সময়ে এ সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে উত্থাপিত একটি প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে ৯ অক্টোবরকে বিশ্ব ডাক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ইউনিভার্সেল পোস্টাল ইউনিয়ন (ইউপিইউ) এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদস্য পদ লাভ করে। এরপর থেকে দেশে প্রতিবছর বিশ্ব ডাক দিবস পালিত হয়ে আসছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিশ্ব ডাক দিবস আজ

আপডেট সময় ০২:৫৩:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ অক্টোবর ২০২২

একদিকে ডাক বিভাগের বিভিন্ন সেবা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে, অন্যদিকে ডাক সেবার মানোন্নয়নে প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এ পটভূমিতে আজ রোববার (৯ অক্টোবর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডাক দিবস।

জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইউনিভার্সাল পোস্টাল ইউনিয়ন (ইউপিইউ) প্রতিবছরের ৯ অক্টোবর ডাক দিবস হিসেবে পালন করে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ডাক অধিদপ্তর এ দিবসটি পালন করছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘পোস্ট ফর প্ল্যানেট’ বা ‘বিশ্বের জন্য ডাকঘর’।

ইউপিইউ গতকাল ৮ অক্টোবর সমন্বিত ডাক উন্নয়ন সূচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বিশ্বের ১৭২টি দেশের ডাক উন্নয়ন পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে আস্থা, পৌঁছানো, প্রাসঙ্গিকতা ও সহনশীলতা—এ চার সূচকের ভিত্তি করে একেকটি দেশের স্কোর ও ধাপ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সমন্বিত ডাক উন্নয়ন সূচকে ১৩ দশমিক ৯ পেয়েছে এবং দ্বিতীয় ধাপে অবস্থান করছে। আস্থায় ১৬ দশমিক ৩, পৌঁছানোয় ১৫ দশমিক ১, প্রাসঙ্গিকতায় ১ দশমিক ৭ ও সহনশীলতায় ২০ দশমিক ৭ পেয়েছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে প্রতিবেশী নেপাল (১৪ দশমিক ৮), মিয়ানমার (১৫ দশমিক ১), পাকিস্তান (৪৬ দশমিক ২), ভারত (৫৭ দশমিক ৩) ও শ্রীলঙ্কা (৩৩ দশমিক ৬)। দ্বিতীয় ধাপে থাকা দেশগুলো সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দেশ মূলত অপারেশনে (কার্যক্রম) বেশি মনোযোগ দেয়। কিন্তু সামনের দশকে ভালো করতে হলে তাদের ডাক পরিষেবা ও ব্যবসায়িক মডেলের উন্নতি করতে হবে।

এদিকে, বিশ্ব ডাক দিবস উপলক্ষে ডাক অধিদফতরের উদ্যোগে আলোচনা সভা, পত্রলিখন প্রতিযোগিতা এবং বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল চিঠিপত্রের যুগ শেষ হওয়ায় দুর্দশাগ্রস্ত ডাক সার্ভিসকে একটা ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। আমরা ইতোমধ্যে সেটা অনেকটা পেরেছি। ই-কমার্সের জন্য ডাকঘর এখন একটা নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

দেশব্যাপী ডাকঘরের যে বিশাল অবকাঠামো ও জনবল আছে তা দেশের অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, হিমায়িত খাবার থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিতে ডাকঘরের বিকল্প নেই।

করোনাকালে কৃষকের ফল, সবজি পরিবহন থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে ডাক সেবার অবদান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, জরুরি সেবার আওতায় ডাকঘর একদিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের অভিযাত্রায় প্রেরক এবং গ্রাহকরা ডাকদ্রব্যের সর্বশেষ অবস্থান বা বিতরণের তথ্য ট্রেক করেই জানতে পারছেন।

মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সরকার ঘোষিত ‘মুজিববর্ষ-২০২০’ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের অংশ হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ প্রণীত কর্মসূচিতে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের ওপর স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনিয়র শিট, অ্যালবাম ও শিটলেট প্রকাশ করে ডাক বিভাগ ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারায় আমি গর্ববোধ করছি।

বিবৃতিতে তিনি বিশ্ব ডাক দিবস -২০২২’র সার্বিক সফলতা কামনা করেন। ১৮৭৪ সালের ৯ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে ২২টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গঠিত হয় ‘ইউনির্ভাসেল পোস্টাল ইউনিয়ন’। পরবর্তী সময়ে এ সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে উত্থাপিত একটি প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে ৯ অক্টোবরকে বিশ্ব ডাক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ইউনিভার্সেল পোস্টাল ইউনিয়ন (ইউপিইউ) এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদস্য পদ লাভ করে। এরপর থেকে দেশে প্রতিবছর বিশ্ব ডাক দিবস পালিত হয়ে আসছে।