ঢাকায় মাসে প্রায় ১৫ থেকে ২০টি খুন হয় বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি আরও জানায়, সম্প্রতি কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত আবার বেড়েছে। পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবু কিছু ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। রাজধানীর থানা, ওয়ার্ড, বিভিন্ন বস্তির অলিগলি সহ বছরে ঘটছে শত শত খুন ঘটনা।
দেশে কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে গফরগাঁও, হাফিজ উদ্দিনের কিশোর গ্যাং বাহিনী কৃষক কামাল হোসেনকে গুম করে টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মোঃ বুলবুল মিয়া (৩৮), পিতা- মৃত মনির উদ্দিন, মাতা- মোছাঃ হামিদা খাতুন, সাং- চরমছলন্দ মাইচপাড়া, তাহের আলী বাড়ী, থানা- গফরগাঁও, জেলা- ময়মনসিংহ। বিবাদী ১। মোঃ হাফিজ মিয়া (৩৮), পিতা- মোহাম্মদ আলী, ২। হৃদয় মিয়া (২০), পিতা- হাফিজ উদ্দিন, ৩। রিপন মিয়া (২২), পিতা- হাজিফ উদ্দিন, সাং- চরমছলন্দ কান্দারবাড়ী, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ সহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন।
উল্লেখিত বিবাদীগণ কিশোরগ্যাং হিসেবে চিহ্নিত। স্থানীয়ভাবে বিবাদীদের স্বভাব চরিত্র খারাপ বলিয়া জনশ্রোতী রহিয়াছে। এমতাবস্থায় অদ্য ০৮-০২-২০২৩ ইং তারিখ বুলবুলের ভাই কামাল বিদেশে টাকা জমা দেওয়ার জন্য ঢাকা মহাখালী যাওয়ার উদ্দেশ্যে বলাকা ট্রেন ধরার জন্য শপিং ব্যাগের ভিতরে নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়া একটি অটোগাড়ী যোগে যাচ্ছিল। হঠাৎ আলোচিত বিতর্কিত কিশোর গ্যাং লিডার হাফিজ উদ্দিন ও হৃদয় বাহিনীদের নিয়ে এসে অটোর সামনে দাঁড় করিয়ে জোরপূর্বক কামালকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। নির্দিষ্ট জায়গায় গামছা দিয়ে হাত মুখ বেঁধে রড হাতুড়ি দিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে এবং নির্যাতনের মাত্রা এমনই ছিল পরবর্তীতে তার জ্ঞান হারিয়ে যায়। লিডার হাফিজ-হৃদয়ের হুকুমে তাদের গুন্ডা বাহিনীকে বলে ব্রিজ থেকে তাকে ফেলে দেওয়ার জন্য। তারই মাঝে এই সময় কামালের হাতের ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় হাফিজ ও হৃদয়।
পরবর্তীতে কামালের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন শুনতে পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে হাফিজ তার বাহিনী নিয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে উধাও হয়ে যায়। কর্মস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রশাসন আসলে কামালের অবস্থা অবনতি হওয়ার কারণে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা শেষ তাকে বাসা আনা হয়। ঢাকা মেডিকেল হসপিটালে চিকিৎসা শেষে পুলিশ রিপোর্ট সার্টিফিকেট সহ আইনের আশ্রয় নিতে বলেন মেডিকেলের দায়িত্ব কর্মকর্তারা। নানা অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে।