এখন চলছে ফুলের ভরা মৌসুম, সারা বছরই ফুল উৎপাদন ও বিক্রি হয়, তবে শীত মৌসুমে ফুল উৎপাদনও যেমন বেশি হয়, ফুল বিক্রিও তেমনি অনেক বেশি হয়, ২১ শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও ১৪ ই ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস কে সামনে রেখে চাষিরা ব্যাস্ত সময় পার করছে।
১৪ ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস উপলক্ষে গোলাপ ফুলের চাহিদা বেশি থাকে, ২১ শে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গাধা ফুলের চাহিদা হয় আকাশচুম্বী, পাশাপাশি রজনী, ভুট্টা, গ্লাডিওলাস, চন্দ্রমল্লিকা, জিপসী, রড স্টিক, সহ সকল ফুলের চাহিদা থাকে।
যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায় পানিসারা ইউনিয়ন, নাভারণ ইউনিয়ন নির্বাসখোলা ইউনিয়ন ও গদখালী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ফুলের চাষ হয়, এর মধ্যে টাওরা, সৈয়দপাড়া, পানিসারা, নিমতলা, হাড়িয়া, পটুয়া পাড়া ও গদখালী উল্লেখযোগ্য।
এবছর ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে টিউলিপ ফুল, শীত প্রধান দেশের ফুল আমাদের দেশে উৎপাদন হবে তা হয়তো কেউ ভাবেনি, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম গাজীপুরে পরীক্ষামুলক ভাবে টিউলিপ চাষ হয়, তারপরই গত বছর যশোরে টিউলিপ চাষ হয়, তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরেও যশোরে টিউলিপ চাষ হয়েছে।
গদখালীর পানিসারায় ইসমাইল হোসেনর জমিতে গত বারের ন্যায় এ বারও টিউলিপ চাষ হয়েছে, জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তার বাগানে টিউলিপ ফুল ফুটতে শুরু করে, আর এখন বাতাসে দোল খাচ্ছে টিউলিপ, দুর দুরান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীরা আসছেন টিউলিপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত পানিসারা। ফুল চাষি ইসমাইল হোসেন জানান, প্রথমে পরীক্ষামুলক ভাবে টিউলিপ চাষ করেছিলাম, আর এখন বানিজ্যিক ভাবে টিউলিপ চাষ করতে চেষ্টা করছি। এদেশে টিউলিপ ফুল ফুটলেও পরবর্তীতে চাষের জন্যে বাল্ব সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নাই, একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় টিউলিপের বাল্ব (টিউলিপের বীজ) সংরক্ষণ করে রাখতে হয়, এটা টিউলিপ চাষের বড় প্রতিবন্ধকতা।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম ফুল চাষকে আরও বেগবান করতে সকলের প্রতি আহবান জানান, বাংলাদেশে বানিজ্যিক ভাবে টিউলিপ ফুল চাষের উদ্দেশ্য, আমাদের দেশের যে তাপমাত্রা সেই তাপমাত্রায় টিউলিপের নতুন জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে, যদি আমাদের দেশে বানিজ্যিক ভাবে টিউলিপ উৎপাদন সম্ভব হয়, শুধু দেশের ফুল সেক্টর নয়, দেশ অর্থনৈতিক ভাবেও লাভবান হবে।