ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আগুনের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে গিয়ে এক ভর্তি বৃদ্ধ রোগী মারা গেছেন।
নিহতের নাম মো: জসিম উদ্দিন (৬০)। কুমিল্লা জেলার তিতাস থানা এলাকায় তার গ্রামের বাড়ি। তিনি ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬০১ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৭ নম্বর বেডে ভর্তি ছিলেন।
আজ সন্ধ্যায় ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ওসি) মো. বাচ্চু মিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণ করেন।
এর আগে, আজ দুপুর আড়াইটার দিকে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের চারতলায় কিডনি বিভাগে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে হাসপাতালের কর্মচারী-কর্মকর্তারা আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
নিহতের পুত্র মফিজ সরকার জানান, আমার পিতা জসিম উদ্দিন হার্টের সমস্যা, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গতকাল শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নতুন ভবনের ৬০১ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৭ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়। আগুন লাগার সময়ও বাবার বেডে আমাট বোনের জামাই রাকিব ছিলেন।
হঠাৎ করে আজ বিকেলে চারতলা থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখে তাদের ওয়ার্ডের সবাই ছোটাছুটি শুরু করেন। এসময় জসিম উদ্দিনকে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে ৬ তলা থেকে নিচে নামছিলেন রাকিব। পাঁচতলার সিঁড়িতে আসলে আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। এ সময় তার ওপর দিয়ে অন্য লোকজন নামতে শুরু করেন। পরে তার বাবাকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হলেও সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে এবং প্রায় সবাই ভবন থেকে নেমে আসেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে ওই আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
ওসি মো. বাচ্চু মিয়া জানান, হাসপাতালের নতুন ভবনের চারতলায় কিডনি ডায়ালাইসিস রুমে ঢুকার মুখে এসির কম্প্রেসার থেকে আগুন লাগে। এতে প্রচুর ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। এসময় আতঙ্কিত হয়ে আটতলা থেকে রোগী ও রোগীর স্বজরা সিড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে নামছিল। এসময় অসুস্থ হয়ে ভর্তি বৃদ্ধ রোগী মো: জসিম উদ্দিন সিঁড়িতে মারা যায়।
এদিকে, ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সাংবাদিকদের জানান, এ রোগীর অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন ছিল। তার অক্সিজেন লাগানো ছিল। আমাদের নার্স-ডাক্তাররা তার অক্সিজেন খুলতে নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু স্বজনরা সেটি শোনেননি। তারা হয়তো নিজ দায়িত্বে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে নামানোর সময় তিনি মারা যান।
অপরদিকে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদরের উপ-সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দেখি হাসপাতালের কর্মচারীরা ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। পরে আমরা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি।