ঢাকা ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

এতিমদের টাকা পরিচালকের পকেটে

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানায় এতিম নেই। ভূয়া এতিমদের তালিকা তৈরী করে সরকারি অনুদানের অর্থ আর্তসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই এতিমখানার পরিচালক হাফেজ ইদ্রিস আলীর নামে।

২০০৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ওই এতিমখানার ২০ জন এতিমের নামে সরকারী অনুদানের টাকা দেওয়া হচ্ছে ওই এতিমখানায়। প্রকৃত পক্ষে ওই এতিমখানায় নিয়মিত এতিম রয়েছে মাত্র ৪-৫জন। তাদের ভাগ্যেও জুটছেনা সরকারি ভাতার টাকার সুযোগ সুবিধা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানাটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। এ এতিমখানাটি প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে কিছু এতিম ও স্থানীয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে হেফজ ও নুরানী শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৫৫ জন। সে সময় থেকেই গ্রামবাসীদের অনুদানে চলে আসছে এতিমখানাটি।

২০০৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ওই এতিমখানার ২০ জন এতিমের নামে সরকারি ভাতা প্রদান শুরু হয়। সে সরকারি অনুদানের টাকা গ্রহন করেন এতিমখানা পরিচালক হাফেজ মো. ইদ্রিস আলী। কিন্ত সে টাকা এতিমখানাটির এতিমদের পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে না। সরকারি অনুদানের পরেও গ্রামবাসীদের অনুদানের উপর নির্ভরশীল ওই এতিমখানাটি। প্রতি এতিমের জন্য মাসিক সরকারি ভাতা বরাদ্দ হয় ২ হাজার টাকা। সে হিসেবে ২০ জন এতিমের নামে প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হয় সরকারি ভাবে।

প্রতি ছয় মাসে ২০ এতিমের নামে ২লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ভাতার টাকা উত্তোলন করছেন এতিমখানটির পরিচালক হাফেজ মো. ইদ্রিস আলী। অভিযোগ রয়েছে, ২০ জন এতিমের নামে ভাতা গ্রহন করলেও ওই এতিমখানায় নিয়মিত এতিম রয়েছে মাত্র ৪-৫জন। কিন্তু সে টাকা ওই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এতিমদের পেছনে সরকারি বরাদ্দকৃত খাতে ব্যয় করছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাতা প্রাপ্ত এতিমদের খাওয়া, কাপড়-চোপর, লেখাপড়া ও চিকিৎসা খাতে ভাতার টাকা ব্যয়ের নির্দেশনা থাকলেও তা করা হচ্ছেনা। এতিমখানার ৪-৫ জন এতিম ও অন্যান্য দরিদ্র শিক্ষার্থীরা গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গের বাড়িতে জাইগির থাকেন। জাইগির গ্রহণকারী ব্যক্তিরা বিনা টাকায় বিনা শর্তে এতিমসহ দরিদ্র অসহায় শিক্ষার্থীদের তিন বেলা খাওয়ান।

সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ওই এতিমখানায় এতিমদের কোনো প্রকার খাওয়া দেওয়া হচ্ছেনা। যদিও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ বলছেন, মাঝে মাঝে এতিমসহ অসহায় শিক্ষার্থীদের ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে খাওয়ানো হয়। তবে এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জাইগির রেখে খাওয়ানোর বিষয়টি স্বিকার করেন ওই এতিমখানার পরিচালক হাফেজ মো. ইদ্রিস আলীসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও অন্যরা।

সরেজমিনে কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানাটি বন্ধ পাওয়া যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, এতিমখানায় নিয়মিত কোনো এতিম নেই। ৪-৫ জন এতিম রয়েছে মাত্র। সরকারি অনুদানের টাকা তাদের খাওয়ার পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে না। তাদের পোষাক ও চিকিৎসার যৎসামান্য ব্যয় করা হলেও বাকি টাকার কোনো হদিস নেই। পরিচালক এতিমখানা ব্যবস্থাপনা কমিটিতে নিজস্ব লোক রেখেছেন। সে কারণে পরিচালকের কোনো কাজের জবাবদিহিতা নেই। পরিচালক ইচ্ছে মতো এতিমখানাটি পরিচালনা করছেন।

এতিমখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এতিমসহ শিক্ষার্থীরা গ্রামের বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে জাইগির খান। তার বাড়িতেও একজন থাকেন। তারা এতিম ও অসহায় শিক্ষার্থীদের বিনা টাকায় বিনা শর্তে তিনবেলা খাওয়ান। এতিমখানার পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে খাওয়ানো হয়। সরকারি অনুদানের টাকায় ছাদ ঢালাই করা পাকা এতিমখানা ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এরপরও যদি সরকার অনুদান বন্ধ করেন তবে এখনকার মতই গ্রামবাসীদের অনুদানে এতিমখানাটি চালানো হবে। কারখানা পাড়া গ্রামের জিয়াউল ইসলাম জানান, কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানার এতিমরা গ্রামের মানুষদের বাড়িতে একজন করে জাইগির থাকেন। তারা তাদের নিয়মিত খাওয়ান। তার বাড়িতেও একজনকে খাওয়াচ্ছেন। মাদ্রাসার পরিচালক এতিমদের পোষাক পরিচ্ছেদ ও চিকিৎসার ব্যয় বহন করেন।

কারখানাপাড়ার শামছুল হক জানান, এতিমখানায় অসহায় এতিম নেই। শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা এতিমখানা ও মাদ্রাসায় লেখাপাড়া করে। তারা গ্রামের মানুষের বাড়ি বাড়ি খায়। এতিমখানার পরিচালক হাফেজ মো. ইদ্রিস আলীর ভাষ্য, বর্তমানে হেফজ ও নুরানী শাখায় ৫৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে এতিমখানায় ৫-৬জন নিয়মিত এতিমও রয়েছে। তারা গ্রামের মানুষের বাড়িতে জাইগির খান। মাঝে মাঝে এতিমখানার পক্ষ থেকেও তাদেরকে খাওয়ানো হয়। তবে শিক্ষকদের মাসিক বেতন ও এতিমদের পোষাক ও চিকিৎসার ব্যয় এতিমখানা পক্ষ থেকে বহন করা হয়। সরকারি অনুদানের টাকায় এতিমাখানার ছাদ ঢালাই পাকা ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। সরকারি অনুদান বন্ধ হলেও তিনি গ্রামবাসীদের অনুদানে এতিমখানাটি চালাবেন বলে জানান তিনি।

ডাংধরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান বলেন, সরকারি টাকা অপব্যবহার হোক তা চান না তিনি। সরকার এতিমদের খাওয়া, লেখাপড়া, কাপড়-চোপড় ও চিকিৎসা খাতে যে টাকা কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানায় দিচ্ছেন তার অপব্যবহার হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জয় কৃষ্ণ সরকার বলেন, অভিযোগের ভিক্তিতে সম্প্রতি এতিমখানাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। আমার সাথে ছিলেন ডিডি মহোদয়। পরিদর্শনে এতিমখানাটি কোনো এতিম পাওয়া যায়নি, এতিমখানাটি বন্ধ পাওয়া যায়। সাক্ষ্য প্রমাণে প্রতীয়মান হয়েছে ওই এতিমখানায় এতিম নেই। মাত্র ৪-৫জন এতিম রয়েছে। অথচ পরিচালক সরকারের কাছ থেকে ২০জন এতিমের জন্য মাসিক ৪০ হাজার (যা সান্মাসিক ভাবে দেওয়া হচ্ছে ২লক্ষ ৪০ হাজার) টাকা অনুদান পেলেও তা এতিমদের পেছনে ব্যয় করছেন না। এ করণে এতিমখানা অনুদান বন্ধ করা হয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

এতিমদের টাকা পরিচালকের পকেটে

আপডেট সময় ০৯:১৪:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাংধরা ইউনিয়নের কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানায় এতিম নেই। ভূয়া এতিমদের তালিকা তৈরী করে সরকারি অনুদানের অর্থ আর্তসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই এতিমখানার পরিচালক হাফেজ ইদ্রিস আলীর নামে।

২০০৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ওই এতিমখানার ২০ জন এতিমের নামে সরকারী অনুদানের টাকা দেওয়া হচ্ছে ওই এতিমখানায়। প্রকৃত পক্ষে ওই এতিমখানায় নিয়মিত এতিম রয়েছে মাত্র ৪-৫জন। তাদের ভাগ্যেও জুটছেনা সরকারি ভাতার টাকার সুযোগ সুবিধা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানাটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। এ এতিমখানাটি প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে কিছু এতিম ও স্থানীয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে হেফজ ও নুরানী শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থী রয়েছে ৫৫ জন। সে সময় থেকেই গ্রামবাসীদের অনুদানে চলে আসছে এতিমখানাটি।

২০০৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ওই এতিমখানার ২০ জন এতিমের নামে সরকারি ভাতা প্রদান শুরু হয়। সে সরকারি অনুদানের টাকা গ্রহন করেন এতিমখানা পরিচালক হাফেজ মো. ইদ্রিস আলী। কিন্ত সে টাকা এতিমখানাটির এতিমদের পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে না। সরকারি অনুদানের পরেও গ্রামবাসীদের অনুদানের উপর নির্ভরশীল ওই এতিমখানাটি। প্রতি এতিমের জন্য মাসিক সরকারি ভাতা বরাদ্দ হয় ২ হাজার টাকা। সে হিসেবে ২০ জন এতিমের নামে প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হয় সরকারি ভাবে।

প্রতি ছয় মাসে ২০ এতিমের নামে ২লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ভাতার টাকা উত্তোলন করছেন এতিমখানটির পরিচালক হাফেজ মো. ইদ্রিস আলী। অভিযোগ রয়েছে, ২০ জন এতিমের নামে ভাতা গ্রহন করলেও ওই এতিমখানায় নিয়মিত এতিম রয়েছে মাত্র ৪-৫জন। কিন্তু সে টাকা ওই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক এতিমদের পেছনে সরকারি বরাদ্দকৃত খাতে ব্যয় করছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভাতা প্রাপ্ত এতিমদের খাওয়া, কাপড়-চোপর, লেখাপড়া ও চিকিৎসা খাতে ভাতার টাকা ব্যয়ের নির্দেশনা থাকলেও তা করা হচ্ছেনা। এতিমখানার ৪-৫ জন এতিম ও অন্যান্য দরিদ্র শিক্ষার্থীরা গ্রামের ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গের বাড়িতে জাইগির থাকেন। জাইগির গ্রহণকারী ব্যক্তিরা বিনা টাকায় বিনা শর্তে এতিমসহ দরিদ্র অসহায় শিক্ষার্থীদের তিন বেলা খাওয়ান।

সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ওই এতিমখানায় এতিমদের কোনো প্রকার খাওয়া দেওয়া হচ্ছেনা। যদিও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ বলছেন, মাঝে মাঝে এতিমসহ অসহায় শিক্ষার্থীদের ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে খাওয়ানো হয়। তবে এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জাইগির রেখে খাওয়ানোর বিষয়টি স্বিকার করেন ওই এতিমখানার পরিচালক হাফেজ মো. ইদ্রিস আলীসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও অন্যরা।

সরেজমিনে কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানাটি বন্ধ পাওয়া যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, এতিমখানায় নিয়মিত কোনো এতিম নেই। ৪-৫ জন এতিম রয়েছে মাত্র। সরকারি অনুদানের টাকা তাদের খাওয়ার পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে না। তাদের পোষাক ও চিকিৎসার যৎসামান্য ব্যয় করা হলেও বাকি টাকার কোনো হদিস নেই। পরিচালক এতিমখানা ব্যবস্থাপনা কমিটিতে নিজস্ব লোক রেখেছেন। সে কারণে পরিচালকের কোনো কাজের জবাবদিহিতা নেই। পরিচালক ইচ্ছে মতো এতিমখানাটি পরিচালনা করছেন।

এতিমখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এতিমসহ শিক্ষার্থীরা গ্রামের বিভিন্ন মানুষের বাড়িতে জাইগির খান। তার বাড়িতেও একজন থাকেন। তারা এতিম ও অসহায় শিক্ষার্থীদের বিনা টাকায় বিনা শর্তে তিনবেলা খাওয়ান। এতিমখানার পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে খাওয়ানো হয়। সরকারি অনুদানের টাকায় ছাদ ঢালাই করা পাকা এতিমখানা ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এরপরও যদি সরকার অনুদান বন্ধ করেন তবে এখনকার মতই গ্রামবাসীদের অনুদানে এতিমখানাটি চালানো হবে। কারখানা পাড়া গ্রামের জিয়াউল ইসলাম জানান, কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানার এতিমরা গ্রামের মানুষদের বাড়িতে একজন করে জাইগির থাকেন। তারা তাদের নিয়মিত খাওয়ান। তার বাড়িতেও একজনকে খাওয়াচ্ছেন। মাদ্রাসার পরিচালক এতিমদের পোষাক পরিচ্ছেদ ও চিকিৎসার ব্যয় বহন করেন।

কারখানাপাড়ার শামছুল হক জানান, এতিমখানায় অসহায় এতিম নেই। শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা এতিমখানা ও মাদ্রাসায় লেখাপাড়া করে। তারা গ্রামের মানুষের বাড়ি বাড়ি খায়। এতিমখানার পরিচালক হাফেজ মো. ইদ্রিস আলীর ভাষ্য, বর্তমানে হেফজ ও নুরানী শাখায় ৫৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে এতিমখানায় ৫-৬জন নিয়মিত এতিমও রয়েছে। তারা গ্রামের মানুষের বাড়িতে জাইগির খান। মাঝে মাঝে এতিমখানার পক্ষ থেকেও তাদেরকে খাওয়ানো হয়। তবে শিক্ষকদের মাসিক বেতন ও এতিমদের পোষাক ও চিকিৎসার ব্যয় এতিমখানা পক্ষ থেকে বহন করা হয়। সরকারি অনুদানের টাকায় এতিমাখানার ছাদ ঢালাই পাকা ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। সরকারি অনুদান বন্ধ হলেও তিনি গ্রামবাসীদের অনুদানে এতিমখানাটি চালাবেন বলে জানান তিনি।

ডাংধরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান বলেন, সরকারি টাকা অপব্যবহার হোক তা চান না তিনি। সরকার এতিমদের খাওয়া, লেখাপড়া, কাপড়-চোপড় ও চিকিৎসা খাতে যে টাকা কারখানাপাড়া গ্রামীণ এতিমখানায় দিচ্ছেন তার অপব্যবহার হয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জয় কৃষ্ণ সরকার বলেন, অভিযোগের ভিক্তিতে সম্প্রতি এতিমখানাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। আমার সাথে ছিলেন ডিডি মহোদয়। পরিদর্শনে এতিমখানাটি কোনো এতিম পাওয়া যায়নি, এতিমখানাটি বন্ধ পাওয়া যায়। সাক্ষ্য প্রমাণে প্রতীয়মান হয়েছে ওই এতিমখানায় এতিম নেই। মাত্র ৪-৫জন এতিম রয়েছে। অথচ পরিচালক সরকারের কাছ থেকে ২০জন এতিমের জন্য মাসিক ৪০ হাজার (যা সান্মাসিক ভাবে দেওয়া হচ্ছে ২লক্ষ ৪০ হাজার) টাকা অনুদান পেলেও তা এতিমদের পেছনে ব্যয় করছেন না। এ করণে এতিমখানা অনুদান বন্ধ করা হয়েছে।