ঢাকা ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

ইডেন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃতদের আমরণ অনশনের ঘোষণা

ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ছাত্র সংগঠনটির এই শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ও ১৬ জনকে স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির দেওয়া এই আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছে সদ্য বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রীদের ১২ জন। 

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ইডেন কলেজ প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বহিষ্কৃত নেত্রীরা। এসময় তারা ধানমন্ডিতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে আমরণ অনশন করার ঘোষণা দেন। পায়ে হেঁটে ধানমন্ডির উদ্দেশে রওনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সদ্য বহিস্কৃত সহ-সভাপতি সুষ্মিতা বাড়ৈ বলেন, ‘কলেজ শাখা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাদের বহিষ্কার না করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। একজন নেত্রী পদত্যাগ করার পরেও কোনও নতুন তদন্ত কমিটি গঠন না করে কোন তদন্তের ভিত্তিতে এই প্রেস রিলিজ দেওয়া হলো?’ এসময় লিখিত বক্তব্যে বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী বলেন, ‘এখানে একটা কথা বারবার উল্লেখ করা হচ্ছে আমাদের ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাকে কেন মারধর করা হলো। যদি মারধরের ঘটনায় আসি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি রোকেয়া হলের সাবেক এজিএস ফাল্গুনী দাস তন্বীকে মারধর করার পর কেন বেনজির হোসেন নিশিকে বহিষ্কার করা হলো না, যে মামলা এখনো চলমান। আপনাদের এবং সকলের ভাষ্যমতে, দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অনিরপেক্ষভাবে শুধু একটি গ্রুপকে কেন বহিষ্কার করা হলো। এই স্থায়ী বহিষ্কারের পেছনে কে বা কারা আছে এর সুষ্ঠু জবাব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদারের ফেসবুক পেজ থেকে একরকম প্রেস রিলিজ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুক পেজ আপলোড হওয়া প্রেস রিলিজ অন্যরকম। এই ভিন্নতর রহস্য উন্মোচন করতে হবে। বিভিন্ন ইউনিটে কোনও সমস্যা হলে তার তদন্ত বা সমাধানের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে সে নিয়ম না হয়ে কেন সরাসরি স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো, তাহলে কি কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের এই অন্যায়ের সাথে সহমত পোষণ করছে? আপনারা জানেন সংবাদ সম্মেলনে আমরা ২১ জন নেত্রী উপস্থিত ছিলাম। তাহলে ১২ জনকে কেন বহিষ্কার করা হলো।’ এদিকে গত শনিবার রাতে মারধরের শিকার কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস লালবাগ থানায় মামলা করতে গেলে অভিযোগ নেওয়া হলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। এই অভিযোগ এনে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, গতকাল আমরা গিয়েছিলাম। আজকে সকালেও গিয়েছি। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি।তারা আমাদের বলছে উপর মহলের নির্দেশ আছে মামলা নেয়া যাবে না।

এসময় সুস্মিতা বাড়ৈ বলেন, তারা ভিক্টিমকেও মারলো আবার ভিক্টিমের সাথে কথা না বলেই তাকে রাতের আঁধারে একটা প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বহিষ্কার করলো। তাহলে ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি কোন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে?  সুস্মিতা আরো বলেন, রিভার নানা কুকীর্তির প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাকে বহিষ্কার না করা ছাত্রলীগের ব্যর্থতা। আমাদের বিরুদ্ধে যে প্রেস রিলিজ দেয়া হয়েছে সেটা মানি না। ছাত্রলীগের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী যেদিন থেকে আমাদের বহিষ্কার করবে সেটা আমরা মেনে নিবো কিন্তু  ছাত্রলীগের এই বহিষ্কার আমরা মানি না। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ রিভা-জাকিয়াকে প্রটেক্ট করছে। গতকালের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দুগ্রুপে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে কিন্তু আমাদের বহিষ্কার করা হলেও তাদের পক্ষের কাউকে বহিষ্কার করা হয়নি। বহিষ্কার হলে দুপক্ষেরই হবে। এটা কেন একপাক্ষিক হবে।

কলেজের সুনাম নষ্টের দায় ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে নিতে হবে উল্লেখ করে সুস্মিতা বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতি সেক্রেটারি বিতর্কিত নেতৃত্বকে কেন বাছাই করেছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একাংশ এই ষড়যন্ত্রের সাথে সরাসরি জড়িত।  এসময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সংগঠনে এত অনিয়ম কেন এটা নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আপনারা ধরুন।

জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধরের ঘটনা ও রিভা জাকিয়ার অপকর্মের সুষ্ঠু বিচার না হলে একযোগে ২৫ জন নেত্রীর পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী বলেন, আমাদের গণহারে পদত্যাগের যে ফল আসতে পারে সেটাকে ফলপ্রসূ হতে দিবে না বিধায় তারা কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই নির্দিষ্ট সংখ্যক নেত্রীকে বহিষ্কার করেছে। সংবাদ সম্মেলন শেষে বহিষ্কৃতরা ধানমন্ডি পার্টি অফিসে দিকে রওনা দেন। তারা সেখানে অনশন করবেন বলে জানান।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

ইডেন ছাত্রলীগের বহিষ্কৃতদের আমরণ অনশনের ঘোষণা

আপডেট সময় ০৪:৫১:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ছাত্র সংগঠনটির এই শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ও ১৬ জনকে স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির দেওয়া এই আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছে সদ্য বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেত্রীদের ১২ জন। 

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ইডেন কলেজ প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন বহিষ্কৃত নেত্রীরা। এসময় তারা ধানমন্ডিতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে আমরণ অনশন করার ঘোষণা দেন। পায়ে হেঁটে ধানমন্ডির উদ্দেশে রওনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সদ্য বহিস্কৃত সহ-সভাপতি সুষ্মিতা বাড়ৈ বলেন, ‘কলেজ শাখা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ও প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাদের বহিষ্কার না করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। একজন নেত্রী পদত্যাগ করার পরেও কোনও নতুন তদন্ত কমিটি গঠন না করে কোন তদন্তের ভিত্তিতে এই প্রেস রিলিজ দেওয়া হলো?’ এসময় লিখিত বক্তব্যে বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী বলেন, ‘এখানে একটা কথা বারবার উল্লেখ করা হচ্ছে আমাদের ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাকে কেন মারধর করা হলো। যদি মারধরের ঘটনায় আসি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজির হোসেন নিশি রোকেয়া হলের সাবেক এজিএস ফাল্গুনী দাস তন্বীকে মারধর করার পর কেন বেনজির হোসেন নিশিকে বহিষ্কার করা হলো না, যে মামলা এখনো চলমান। আপনাদের এবং সকলের ভাষ্যমতে, দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অনিরপেক্ষভাবে শুধু একটি গ্রুপকে কেন বহিষ্কার করা হলো। এই স্থায়ী বহিষ্কারের পেছনে কে বা কারা আছে এর সুষ্ঠু জবাব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদারের ফেসবুক পেজ থেকে একরকম প্রেস রিলিজ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুক পেজ আপলোড হওয়া প্রেস রিলিজ অন্যরকম। এই ভিন্নতর রহস্য উন্মোচন করতে হবে। বিভিন্ন ইউনিটে কোনও সমস্যা হলে তার তদন্ত বা সমাধানের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে সে নিয়ম না হয়ে কেন সরাসরি স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো, তাহলে কি কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের এই অন্যায়ের সাথে সহমত পোষণ করছে? আপনারা জানেন সংবাদ সম্মেলনে আমরা ২১ জন নেত্রী উপস্থিত ছিলাম। তাহলে ১২ জনকে কেন বহিষ্কার করা হলো।’ এদিকে গত শনিবার রাতে মারধরের শিকার কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস লালবাগ থানায় মামলা করতে গেলে অভিযোগ নেওয়া হলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। এই অভিযোগ এনে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, গতকাল আমরা গিয়েছিলাম। আজকে সকালেও গিয়েছি। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি।তারা আমাদের বলছে উপর মহলের নির্দেশ আছে মামলা নেয়া যাবে না।

এসময় সুস্মিতা বাড়ৈ বলেন, তারা ভিক্টিমকেও মারলো আবার ভিক্টিমের সাথে কথা না বলেই তাকে রাতের আঁধারে একটা প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বহিষ্কার করলো। তাহলে ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি কোন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে চলছে?  সুস্মিতা আরো বলেন, রিভার নানা কুকীর্তির প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাকে বহিষ্কার না করা ছাত্রলীগের ব্যর্থতা। আমাদের বিরুদ্ধে যে প্রেস রিলিজ দেয়া হয়েছে সেটা মানি না। ছাত্রলীগের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী যেদিন থেকে আমাদের বহিষ্কার করবে সেটা আমরা মেনে নিবো কিন্তু  ছাত্রলীগের এই বহিষ্কার আমরা মানি না। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ রিভা-জাকিয়াকে প্রটেক্ট করছে। গতকালের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় দুগ্রুপে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে কিন্তু আমাদের বহিষ্কার করা হলেও তাদের পক্ষের কাউকে বহিষ্কার করা হয়নি। বহিষ্কার হলে দুপক্ষেরই হবে। এটা কেন একপাক্ষিক হবে।

কলেজের সুনাম নষ্টের দায় ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে নিতে হবে উল্লেখ করে সুস্মিতা বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতি সেক্রেটারি বিতর্কিত নেতৃত্বকে কেন বাছাই করেছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের একাংশ এই ষড়যন্ত্রের সাথে সরাসরি জড়িত।  এসময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সংগঠনে এত অনিয়ম কেন এটা নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আপনারা ধরুন।

জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারধরের ঘটনা ও রিভা জাকিয়ার অপকর্মের সুষ্ঠু বিচার না হলে একযোগে ২৫ জন নেত্রীর পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী বলেন, আমাদের গণহারে পদত্যাগের যে ফল আসতে পারে সেটাকে ফলপ্রসূ হতে দিবে না বিধায় তারা কোনোরকম তদন্ত ছাড়াই নির্দিষ্ট সংখ্যক নেত্রীকে বহিষ্কার করেছে। সংবাদ সম্মেলন শেষে বহিষ্কৃতরা ধানমন্ডি পার্টি অফিসে দিকে রওনা দেন। তারা সেখানে অনশন করবেন বলে জানান।