ঢাকা ০৫:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এস আলম গ্রুপের সব স্থাবর সম্পদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ বঙ্গভ্যাক্স ভ্যাকসিনে অনীহা নজর ছিল আমদানিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম সদরঘাট থানা’র উদ্যোগে সিরাতুন্নবী (সঃ) মাহফিল অনুষ্ঠিত এমন গরম আর কতদিন ? কোরআন পড়ে বাড়ি ফেরা হলো না চার শিশুর দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, বড় হুজুর গ্রেফতার রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া গণপূর্তের সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ছয় প্রকল্প বাতিল দাউদকান্দিতে অবৈধভাবে এলপিজি গ্যাস বোতলজাতকরণের দায়ে ৩ জনকে সাজা প্রদান চাঁপাইনবাবগঞ্জে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসে আলোচনা সভা বোরহানউদ্দিনে উত্তর-টবগী রাস্তার মাথা জামে মসজিদের সভাপতি বাচ্চু পন্ডিত- সম্পাদক- আলম ফরাজি

বাংলাদেশে সমাহিত হতে চান পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এক বিচারপতি

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চেয়ে এবং বাংলাদেশের মাটিতে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছেন সৈয়দ আসিফ শাহকার নামে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত একজন সুইডিশ নাগরিক, যিনি ২০১৭ সালে সুইডিশ হাইকোর্ট বিভাগ থেকে বিচারপতি হিসেবে অবসর নিয়েছেন।  

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। কবে চিঠিটি লেখা হয়েছে প্রতিবেদনে সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা না হলেও ‘আমরা একাত্তর’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এ সপ্তাহে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠিতে পৌঁছে দেবে বলে জানিয়েছে।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘটানো অপারেশনে গণহত্যার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন বিচারপতি শাহকার। ১৯৭২ সালে তিনি মুক্তি পান।

বিবিসিকে বিচারপতি শাহকার বলেছেন, জেলখানা থেকে ছাড়া পেলেও নিজ দেশ পাকিস্তানে তিনি বিশ্বাসঘাতকের উপাধি পান এবং প্রবল ঘৃণার শিকার হতে থাকেন। অতিষ্ঠ হয়ে ১৯৭৭ সালে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে সুইডেনে চলে যান তিনি। তবে সুইডেনেও তার জীবন কঠিন ছিল।

তিনি বলেন, পাকিস্তানে কেবল পাকিস্তানিদের ঘৃণার মুখোমুখি হয়েছিলাম আমি, কিন্তু সুইডেনে এসে দেখা গেল সেখানকার বাংলাদেশি কম্যুনিটির মানুষেরা আমাকে পাকিস্তান এবং পাঞ্জাবের বাসিন্দা হিসেবে ১৯৭১ সালের জন্য ঘৃণা করছে। আমি তাদের (সুইডেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের) বোঝাতেই পারছিলাম না আমি বাংলাদেশের জন্য জেল খেটেছি এবং বাংলাদেশের পক্ষ নেওয়ায় আমার নিজের দেশে আমি কী পরিমাণ অপমান, নির্যাতন এবং যন্ত্রণার শিকার হয়েছি।

এরপর ২০০০ সালে সুইডেনে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের একজন কর্মকর্তার সাথে তার পরিচয়ের সূত্রে তিনি প্রথমবার সেখানকার বাংলাদেশিদের মুখোমুখি হয়ে তাদের ভুল ধারণা ভাঙার উদ্যোগ নেন। সে বছরই তিনি বাংলাদেশে আসার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু ২০০১ সালে চারদলীয় জোটের অধীনে নতুন সরকার আসার পর তার সে চেষ্টা থেমে যায়।

বিচারপতি শাহকার বলেছেন, এরপর ২০১০ সালে তিনি নতুন করে সুইডেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সাথে যোগাযোগ করেন। ২০১২ সালে বাংলাদেশের সরকার ১৯৭১ সালে তার ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার’ সম্মাননা দেয়।

বিবিসিকে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের নাগরিক না হলে যেহেতু সেখানে সমাধিস্থ হতে পারব না, তাই, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চেয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি লিখেছি।

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ সম্মাননা দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, যে বিদেশি স্বাধীনতা যুদ্ধকে সমর্থন করেছিল তিনিও একজন মুক্তিযোদ্ধা। আপনার কথা আমাকে সরাসরি আপনার কাছে আবেদন করতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

তিনি আরও বলেনম, আমি বাংলাদেশে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যেতে চাই না, আমি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চাই, কারণ আমি অন্তর থেকে অনুভব করি পাকিস্তান আমার দেশ না। বাংলাদেশই আমার দেশ।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

এস আলম গ্রুপের সব স্থাবর সম্পদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ

বাংলাদেশে সমাহিত হতে চান পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এক বিচারপতি

আপডেট সময় ০১:৪৪:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২

বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চেয়ে এবং বাংলাদেশের মাটিতে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছেন সৈয়দ আসিফ শাহকার নামে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত একজন সুইডিশ নাগরিক, যিনি ২০১৭ সালে সুইডিশ হাইকোর্ট বিভাগ থেকে বিচারপতি হিসেবে অবসর নিয়েছেন।  

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। কবে চিঠিটি লেখা হয়েছে প্রতিবেদনে সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা না হলেও ‘আমরা একাত্তর’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এ সপ্তাহে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠিতে পৌঁছে দেবে বলে জানিয়েছে।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘটানো অপারেশনে গণহত্যার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন বিচারপতি শাহকার। ১৯৭২ সালে তিনি মুক্তি পান।

বিবিসিকে বিচারপতি শাহকার বলেছেন, জেলখানা থেকে ছাড়া পেলেও নিজ দেশ পাকিস্তানে তিনি বিশ্বাসঘাতকের উপাধি পান এবং প্রবল ঘৃণার শিকার হতে থাকেন। অতিষ্ঠ হয়ে ১৯৭৭ সালে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে সুইডেনে চলে যান তিনি। তবে সুইডেনেও তার জীবন কঠিন ছিল।

তিনি বলেন, পাকিস্তানে কেবল পাকিস্তানিদের ঘৃণার মুখোমুখি হয়েছিলাম আমি, কিন্তু সুইডেনে এসে দেখা গেল সেখানকার বাংলাদেশি কম্যুনিটির মানুষেরা আমাকে পাকিস্তান এবং পাঞ্জাবের বাসিন্দা হিসেবে ১৯৭১ সালের জন্য ঘৃণা করছে। আমি তাদের (সুইডেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের) বোঝাতেই পারছিলাম না আমি বাংলাদেশের জন্য জেল খেটেছি এবং বাংলাদেশের পক্ষ নেওয়ায় আমার নিজের দেশে আমি কী পরিমাণ অপমান, নির্যাতন এবং যন্ত্রণার শিকার হয়েছি।

এরপর ২০০০ সালে সুইডেনে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের একজন কর্মকর্তার সাথে তার পরিচয়ের সূত্রে তিনি প্রথমবার সেখানকার বাংলাদেশিদের মুখোমুখি হয়ে তাদের ভুল ধারণা ভাঙার উদ্যোগ নেন। সে বছরই তিনি বাংলাদেশে আসার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু ২০০১ সালে চারদলীয় জোটের অধীনে নতুন সরকার আসার পর তার সে চেষ্টা থেমে যায়।

বিচারপতি শাহকার বলেছেন, এরপর ২০১০ সালে তিনি নতুন করে সুইডেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সাথে যোগাযোগ করেন। ২০১২ সালে বাংলাদেশের সরকার ১৯৭১ সালে তার ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার’ সম্মাননা দেয়।

বিবিসিকে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের নাগরিক না হলে যেহেতু সেখানে সমাধিস্থ হতে পারব না, তাই, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চেয়ে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি লিখেছি।

চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ সম্মাননা দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, যে বিদেশি স্বাধীনতা যুদ্ধকে সমর্থন করেছিল তিনিও একজন মুক্তিযোদ্ধা। আপনার কথা আমাকে সরাসরি আপনার কাছে আবেদন করতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

তিনি আরও বলেনম, আমি বাংলাদেশে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যেতে চাই না, আমি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব চাই, কারণ আমি অন্তর থেকে অনুভব করি পাকিস্তান আমার দেশ না। বাংলাদেশই আমার দেশ।