ঢাকা ০২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেরানীগঞ্জে স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় কনস্টেবলসহ গ্রেফতার-৮

ঢাকার কেরানীগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে ৯৮ ভরি স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় লালবাগ থানার কনস্টেবল মুন্সি কামরুজ্জামানসহ ৮ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার অন্য সাতজন হলেন- মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে সুমন, মো. রহমান, উত্তম মজুমদার, মো. জাকির হোসেন, মো. শরীফ, আনন্দ পাল ও নাহিদা নাহার মেমী। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫১ ভরি ৬ রতি স্বর্ণ এবং স্বর্ণ বিক্রয়ের ১৫ লাখ টাকাসহ বেশকিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়াও ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হেল কাফী, কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ। আসাদুজ্জামান বলেন, গত ২ আগস্ট মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার গোবিন্দল জামটি বাজারের সোলাইমান জুয়েলার্সের কর্মচারী বরুন ঘোষ ৮টি স্বর্ণের বার (যেগুলোর মোট ওজন ৯৮ ভরি) নিয়ে পুরান ঢাকার তাঁতিবাজারের এক স্বর্ণের দোকানে বিভিন্ন গহনা তৈরির জন্য আসেন।

কিন্তু তাঁতিবাজারের ওই দোকানটি বন্ধ থাকায় বরুন সেখান থেকে সিংগাইর ফিরে যাওয়ার জন্য একই পথে রওয়ানা করেন। ফিরতি পথে জিনজিরা জনি টাওয়ারের সামনে পুলিশের পোশাক পরিহিত একদল ডাকাত বরুনের কাছে অবৈধ মালামাল আছে এমন অভিযোগে তাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। ডাকাতরা গাড়িতে তুলে তাকে চোখ মুখ বেঁধে ফেলে এবং মারতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ডাকাতরা বরুনের কাছে থাকা ৮টি স্বর্ণের বার, স্বর্ণ চালানের কাগজপত্র ও নগদ ৩ হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল আবাসন প্রকল্পের নির্জন স্থানে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন স্বর্ণের মালিক হাবু মিয়া বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেন।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রথমে আমরা ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি শনাক্ত করতে সক্ষম হই। এরপর আশুলিয়া, সাভার ও ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডাকাতদলে একজন পুলিশ সদস্য ও এক নারী রয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ডাকাতিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন, পুলিশ সদস্য কামরুজ্জামান কিভাবে ডাকাত দলের সঙ্গে যুক্ত হলেন, এই দলটি অন্য কোনো ডাকাতিতে জড়িত কী না এবং দলে কারা কারা আছেন এসব বিষয়ে জানতে গ্রেপ্তারকৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে। যে কারণে আসামিদের আদালতে উপস্থাপন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কেরানীগঞ্জে স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় কনস্টেবলসহ গ্রেফতার-৮

আপডেট সময় ০৬:২৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

ঢাকার কেরানীগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে ৯৮ ভরি স্বর্ণ ডাকাতির ঘটনায় লালবাগ থানার কনস্টেবল মুন্সি কামরুজ্জামানসহ ৮ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে মডেল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার অন্য সাতজন হলেন- মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে সুমন, মো. রহমান, উত্তম মজুমদার, মো. জাকির হোসেন, মো. শরীফ, আনন্দ পাল ও নাহিদা নাহার মেমী। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫১ ভরি ৬ রতি স্বর্ণ এবং স্বর্ণ বিক্রয়ের ১৫ লাখ টাকাসহ বেশকিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়াও ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হেল কাফী, কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর, কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ। আসাদুজ্জামান বলেন, গত ২ আগস্ট মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার গোবিন্দল জামটি বাজারের সোলাইমান জুয়েলার্সের কর্মচারী বরুন ঘোষ ৮টি স্বর্ণের বার (যেগুলোর মোট ওজন ৯৮ ভরি) নিয়ে পুরান ঢাকার তাঁতিবাজারের এক স্বর্ণের দোকানে বিভিন্ন গহনা তৈরির জন্য আসেন।

কিন্তু তাঁতিবাজারের ওই দোকানটি বন্ধ থাকায় বরুন সেখান থেকে সিংগাইর ফিরে যাওয়ার জন্য একই পথে রওয়ানা করেন। ফিরতি পথে জিনজিরা জনি টাওয়ারের সামনে পুলিশের পোশাক পরিহিত একদল ডাকাত বরুনের কাছে অবৈধ মালামাল আছে এমন অভিযোগে তাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। ডাকাতরা গাড়িতে তুলে তাকে চোখ মুখ বেঁধে ফেলে এবং মারতে শুরু করে। এক পর্যায়ে ডাকাতরা বরুনের কাছে থাকা ৮টি স্বর্ণের বার, স্বর্ণ চালানের কাগজপত্র ও নগদ ৩ হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল আবাসন প্রকল্পের নির্জন স্থানে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন স্বর্ণের মালিক হাবু মিয়া বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা করেন।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রথমে আমরা ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি শনাক্ত করতে সক্ষম হই। এরপর আশুলিয়া, সাভার ও ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডাকাতদলে একজন পুলিশ সদস্য ও এক নারী রয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ডাকাতিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন, পুলিশ সদস্য কামরুজ্জামান কিভাবে ডাকাত দলের সঙ্গে যুক্ত হলেন, এই দলটি অন্য কোনো ডাকাতিতে জড়িত কী না এবং দলে কারা কারা আছেন এসব বিষয়ে জানতে গ্রেপ্তারকৃতদের আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে। যে কারণে আসামিদের আদালতে উপস্থাপন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।