২১ নভেম্বর না ফেরার দেশে চলে গেলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। তার এই অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারেননি পরিবার থেকে শুরু করে অনুরাগীরা। সম্প্রতি এক জীবনবিমা কর্মচারী কমিটির পক্ষ থেকে ঐন্দ্রিলা শর্মার একটি স্মরণসভার আয়োজন করেছিল। সেখানেই উপস্থিত হয়ে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেন ঐন্দ্রিলার মা শিখা শর্মা। তার অভিযোগ, এক চিকিৎসকের ইগোর কারণেই ঐন্দ্রিলা ডিপ কোমায় চলে যান।
এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন অভিনেত্রীর মা। পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, ‘দু’বার ক্যানসার থেকে ফিরে এসেছে ঐন্দ্রিলা, অনেক কষ্ট পেয়েছে কিন্তু কখনও চোখে জল দেখিনি ওর। খুবই কম কাঁদতে দেখেছি ওকে। সেদিন আমার পাশে শোয়া ছিল মেয়েটা। হঠাৎ যে কী হলো, হাত নড়ল না পা লড়ল না, ১০ মিনিটে কীরকম হয়ে গেল। আমরা চেষ্টা করেছি। ওটি হয়েছে। জ্ঞানও ফিরেছিল কিন্তু তারপর কোমায় চলে গেল। জানি না কী চিকিৎসা করেছে! নার্সিং কেয়ার খুবই ভালো ছিল। আমরা প্লিজড ছিলাম কিন্তু পোস্ট অপারেটিভ ট্রিটমেন্ট নিয়ে একটা প্রশ্নচিহ্ন থেকেই গেল। ঐন্দ্রিলার জন্য আরও কিছু করা যেত, কিন্তু হয়নি।’
চোখে জল নিয়েই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন ঐন্দ্রিলার মা শিখা শর্মা। তার দাবি, ‘সেইসময় দুজন ডাক্তারের ইগোর সমস্যা চলছিল। আমরা তো চাইব মেয়েকে বাঁচাতে? যিনি অপারেশন করেছেন, সেই ডা. মল্লিক অমায়িক। উনি খুব সহযোগিতা করেছেন। ডা. পিয়া ঘোষ করেননি, সেটা আমাদের মনের মধ্যে থেকে যাবে। এমআরআই করাটাই ওর পক্ষে ঠিক হয়নি। আমরা এই নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি। সবাই কো-অপারেট করেছেন কিন্তু একজন ইগোর কারণে সহযোগিতা করেননি। তিনি দায়িত্ব নিয়ে ঐন্দ্রিলাকে ডিপ কোমায় পৌঁছে দিলেন। ডা. পিয়া ঘোষ কতটুকু চিকিৎসক, কতটুকু মানবিক জানি না। কিন্তু ডা. পিয়া ঘোষ কোনো সহযোগিতা করেননি।’
শিখা শর্মার সংযোজন, ‘অনেক ডাক্তার ওকে দেখেছেন কিন্তু সেই ট্রিটমেন্ট ফলো করা হয়নি। আমার বড় মেয়ে ডাক্তার, অনেক অনুরোধ করেছে কিন্তু উনি শোনেননি। ঐন্দ্রিলা বাঁচতে পারত। ওই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতো না। যদিও হতো ও রিভার্স করত। ওর হার্ট-লাং-কিডনি স্ট্রং ছিল। আমি তো বলবই, সবাই আসছে সাজেশন দিচ্ছেন এটা ওর ইগোতে লাগল। একবারও ভাবল না, আমার মেয়েটাকে বাঁচানো দরকার। একটা ২৪ বছরের মেয়ের ক্ষেত্রে এটা করা উচিত হয়নি। এই দুঃখ নিয়েই আমরা বাঁচব।’
ঐন্দ্রিলার মায়ের কথায়, ‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। গ্রিন করিডোর করে নিয়ে যেতে হলেও স্টেবল হওয়ার দরকার ছিল। সেটা ছিল না ও। অরিজিৎ সিং আমাদের সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন। মুম্বাইয়ের ডাক্তারের সঙ্গেও কথা হয়েছিল। ডা. বিশ্বাস বলেছিলেন, একটু টাইম পেলে আমরা এয়ারবাসে করে নিয়ে চলে যাব। যিনি হাসপাতালে ইনচার্জ ছিলেন ঝটপট করে হেলথ সাপোর্টগুলো খুলে দিয়েছিলেন। উনি যে কতটুকু দক্ষ সে বিষয়ে আমাদের সন্দেহ আছে। ডা. পিয়া ঘোষ যেন ঐন্দ্রিলাকে ডিপ কোমায় পাঠানোর দায়িত্ব নিয়ে নিল।’