ঢাকা ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

রুশ হামলার পর বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরাতে সংগ্রাম করছে ইউক্রেন

টানা নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা হলো- ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে রাশিয়ার একের পর এক হামলা।

আর এতেই অনেকটা কাবু হয়ে পড়ছে ইউক্রেন। রুশ হামলার পর সৃষ্ট পানি ও বিদ্যুতের সংকট থেকে মুক্ত হতে কার্যত সংগ্রাম করছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে ব্যাপক রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দেশের বিদ্যুতের চাহিদার ৫০ শতাংশ বর্তমানে পূরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির পাওয়ার অপারেটর ইউক্রেনারগো বলেছে, মূল অবকাঠামো ঠিক করার অগ্রাধিকার থাকলেও এগুলোর মেরামত এখন আরও বেশি সময় নিচ্ছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাজধানী কিয়েভসহ ১৫টি অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ নিয়ে ‘সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি’ দেখা দিয়েছে।

বিবিসি বলছে, ইউক্রেনজুড়ে তুষারপাত এবং সাব-জিরো বা শূন্য ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রার ঠান্ডা আবহাওয়া-সহ দেশটিতে এখন শীত মৌসুম শুরু হচ্ছে। এতে করে হাইপোথার্মিয়ায় সারা দেশে মানুষ মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে, কিয়েভের প্রায় ৭০ শতাংশ বাসিন্দা বিদ্যুৎ ছাড়াই ঘুম থেকে জেগে ওঠে।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বিবিসি ইউক্রেনীয়কে বলেছেন, রুশ হামলার জেরে ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির’ শিকার হওয়ার সম্ভানাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। আর তেমন কিছু হলে ইউক্রেনের রাজধানী এই শহরটিকে বিদ্যুৎ, তাপ এবং পানি ছাড়াই থাকতে হবে।

পরে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ধীরে ধীরে দেশের সকল অঞ্চলে বিদ্যুৎ এবং পানি সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার কাজ করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় কিয়েভের বাসিন্দা রোমান বিবিসিকে বলেন, ‘পানি ধীরে ধীরে আসছে। এখনও বিদ্যুৎ নেই।’

পরে বেশ কয়েক ঘণ্টা পর তিনি আরও বলেন, ‘অবশেষে, তারা (কর্তৃপক্ষ) বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে – সেটিও ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে।’

টোনিয়া নামে কিয়েভের আরেক বাসিন্দা ​​বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিবিসিকে বলেন, ৪৮ ঘণ্টা ধরে তার বিদ্যুৎ নেই। তার ভাষায়, ‘আজ আমার কাছে পানি আছে, এবং সেটিও বেশ দুর্বল সংযোগ। কিন্তু এখনও বিদ্যুৎ এবং তাপ নেই।’

সংবাদমাধ্যম বলছে, রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে। মূলত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া।

এর মধ্যে গত মাসে অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বৃহত্তম বন্দরনগরী সেভাস্তোপলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর বেশ কয়েক দফায় ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রাশিয়া কার্যত ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি চালায়।

বিবিসি বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর গত সপ্তাহেই ইউক্রেনে সবচেয়ে ভারী বিমান হামলা চালায় রাশিয়া। ওই হামলায়ও ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামো এবং বেসামরিক ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।

মূলত সম্মুখসারির যুদ্ধে ব্যর্থতার পর রাশিয়ার সাম্প্রতিক এসব হামলা একটি বিস্তৃত কৌশলের অংশ এবং শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে ইউক্রেনে রুশ এই কৌশলের প্রভাব আরও তীব্রভাবে অনুভূত হতে শুরু করেছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

রুশ হামলার পর বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরাতে সংগ্রাম করছে ইউক্রেন

আপডেট সময় ০৩:০৫:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০২২

টানা নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা হলো- ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে রাশিয়ার একের পর এক হামলা।

আর এতেই অনেকটা কাবু হয়ে পড়ছে ইউক্রেন। রুশ হামলার পর সৃষ্ট পানি ও বিদ্যুতের সংকট থেকে মুক্ত হতে কার্যত সংগ্রাম করছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে ব্যাপক রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর দেশের বিদ্যুতের চাহিদার ৫০ শতাংশ বর্তমানে পূরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির পাওয়ার অপারেটর ইউক্রেনারগো বলেছে, মূল অবকাঠামো ঠিক করার অগ্রাধিকার থাকলেও এগুলোর মেরামত এখন আরও বেশি সময় নিচ্ছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাজধানী কিয়েভসহ ১৫টি অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ নিয়ে ‘সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি’ দেখা দিয়েছে।

বিবিসি বলছে, ইউক্রেনজুড়ে তুষারপাত এবং সাব-জিরো বা শূন্য ডিগ্রির নিচের তাপমাত্রার ঠান্ডা আবহাওয়া-সহ দেশটিতে এখন শীত মৌসুম শুরু হচ্ছে। এতে করে হাইপোথার্মিয়ায় সারা দেশে মানুষ মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে, কিয়েভের প্রায় ৭০ শতাংশ বাসিন্দা বিদ্যুৎ ছাড়াই ঘুম থেকে জেগে ওঠে।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বিবিসি ইউক্রেনীয়কে বলেছেন, রুশ হামলার জেরে ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির’ শিকার হওয়ার সম্ভানাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। আর তেমন কিছু হলে ইউক্রেনের রাজধানী এই শহরটিকে বিদ্যুৎ, তাপ এবং পানি ছাড়াই থাকতে হবে।

পরে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ধীরে ধীরে দেশের সকল অঞ্চলে বিদ্যুৎ এবং পানি সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার কাজ করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় কিয়েভের বাসিন্দা রোমান বিবিসিকে বলেন, ‘পানি ধীরে ধীরে আসছে। এখনও বিদ্যুৎ নেই।’

পরে বেশ কয়েক ঘণ্টা পর তিনি আরও বলেন, ‘অবশেষে, তারা (কর্তৃপক্ষ) বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে – সেটিও ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে।’

টোনিয়া নামে কিয়েভের আরেক বাসিন্দা ​​বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিবিসিকে বলেন, ৪৮ ঘণ্টা ধরে তার বিদ্যুৎ নেই। তার ভাষায়, ‘আজ আমার কাছে পানি আছে, এবং সেটিও বেশ দুর্বল সংযোগ। কিন্তু এখনও বিদ্যুৎ এবং তাপ নেই।’

সংবাদমাধ্যম বলছে, রাশিয়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বাড়িয়েছে। মূলত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ অক্টোবর থেকে ইউক্রেনের জ্বালানি নেটওয়ার্ক ও অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া।

এর মধ্যে গত মাসে অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের বৃহত্তম বন্দরনগরী সেভাস্তোপলের কাছে কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌবহরে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর বেশ কয়েক দফায় ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে রাশিয়া কার্যত ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টি চালায়।

বিবিসি বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর গত সপ্তাহেই ইউক্রেনে সবচেয়ে ভারী বিমান হামলা চালায় রাশিয়া। ওই হামলায়ও ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামো এবং বেসামরিক ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।

মূলত সম্মুখসারির যুদ্ধে ব্যর্থতার পর রাশিয়ার সাম্প্রতিক এসব হামলা একটি বিস্তৃত কৌশলের অংশ এবং শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে ইউক্রেনে রুশ এই কৌশলের প্রভাব আরও তীব্রভাবে অনুভূত হতে শুরু করেছে।