স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে নানা ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। সর্বশেষ ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার ও আদালত চত্বরে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটির সদস্যদের হাতে আইনজীবী নিহতের ঘটনা নিয়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
জম্মুতে এক দলীয় সভায় কর্মীদের উদ্দেশে মেহবুবা মুফতি বলেন, হিন্দুরা বাংলাদেশে নিপীড়নের মুখে পড়েছে। কিন্তু, আমরা যদি এখানে (ভারতে) সংখ্যালঘুদের সঙ্গে একই কাজ করি, তাহলে দুই দেশের পার্থক্য কোথায় রইলো?
বাংলাদেশের পরিস্থিতির সঙ্গে ভারতের তুলনা করায়, মেহবুবা মুফতির মন্তব্য ‘দেশবিরোধী’ বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, উত্তর প্রদেশের সাম্ভালে সংঘটিত সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় মসজিদ জরিপ বিতর্ক নিয়ে বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে এই মন্তব্য করেন মেহবুবা।
এ সময় জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজ আমি আশঙ্কা করছি যে, ১৯৪৭ সালের পরিস্থিতির দিকে আমাদের ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যুবকরা যখন চাকরির কথা বলে, তখন তারা তা পায় না। ভালো হাসপাতাল-শিক্ষাব্যবস্থা নেই। রাস্তার অবস্থা উন্নত না করে মন্দির খোঁজার জন্য মসজিদ ভাঙার চেষ্টা চলছে। সাম্ভালের ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সেখানে কেউ কেউ দোকানে কাজ করছিলেন, তাদেরও গুলি করা হয়েছে।’
উত্তর প্রদেশের সাম্ভালে মন্দির থাকার দাবির ভিত্তিতে শাহি জামে মসজিদে জরিপের সময় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে চারজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়। তাদের মধ্যে পুলিশের সদস্য ও কর্মকর্তারাও ছিলেন। রাজস্থানের আজমিরে সুফি দার্শনিক মইনুদ্দিন চিশতির দরগা ঘিরেও একই বিতর্ক শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মেহবুবা।
এ সময় বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে সাবেক এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নিপীড়ন চলছে। যদি ভারতেও সংখ্যালঘুদের ওপর একই আচরণ করা হয়, তবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আমি কোনো পার্থক্য খুঁজে পাই না।’
মেহবুবা মুফতি আরও উল্লেখ করেন, ‘আজমির শরীফ দরগাহ, যেখানে সব ধর্মের মানুষ প্রার্থনা করেন। এটা ভ্রাতৃত্বের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এখন মন্দির খোঁজার জন্য সেটির নিচেও খননের চেষ্টা চলছে।’