৫ই আগস্ট ২০২৪ ছাত্র – জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ ও দেশত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সেই সুযোগে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন মন্ত্রী,এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মী সহ সাধারণ মানুষের বাড়িঘর ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট চালায় একটি স্বার্থান্বেষী মহল। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের কোন রকম বিশৃঙ্খলা না করার কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে এ নির্দেশনা মানছে না বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী’রা। যেকারণে দলীয় শৃঙ্খলা অমান্য করায় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে বহিস্কার করেছে দলটি। এরপরও থামছে না বিএনপির ব্যানারে গজিয়ে ওঠা সুবিধাভোগী একটি মহল। এর ব্যতিক্রম হয় নি পাবনা জেলার আমিনপুর থানার ঢালারচর ইউনিয়নে।
সেখানকার আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণের অভিযোগ সরকার পতনের পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বিএনপির একটি অংশ। তারা সংঘটিত করছে
হামলা, ভাঙচুর, মারধর, লুটপাট, চাঁদাবাজি ও জবর- দখলের মত ঘৃণিত অপরাধ। যদিও ঢালারচর ইউনিয়ন বিএনপির বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা এসকল কর্মকাণ্ডের বিপক্ষে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢালারচর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মরহুম লাল মেম্বারের মৃত্যুর পর রাজনীতিতে সক্রিয় হয় তার স্ত্রী সেফালি (তিনি পাবনা জেলা মহিলা দলের সদস্য) ও ছেলে সেলিম। সরকার পতনের পর থেকে তাদের নেতৃত্বেই চলছে এই ত্রাসের রাজত্ব। তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ঢালারচর ইউনিয়নাধীন ০৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার শামছুল মৃধা,
কাবিল ডাক্তার, মান্নান ডাক্তার, সেন্টু,লুৎফর, উজ্জ্বল, কালাম চৌধুরী, রহিম,রায়হান মেম্বার, শাহ আলী প্রমুখ।
গত ৫ আগষ্ট রাতে দুই নং ওয়ার্ডের মেম্বার বালাজ শেখের বাড়ি ও দোকানে তারা সংঘটিত করে ভাংচুর ও লুটতরাজ।৬ আগষ্ট প্রকাশ্য দিবালোকে কাশেম মোড় হাটের এজারতদারকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে তারা হাট দখল করে। এরপর তারা চার নং ওয়ার্ডের মেম্বার গফুর মোল্লার বাড়িতে হামলা চালায়। ১৩ আগষ্ট তারা হামলা চালায় ০১ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আকরাম ফকির ও কালাম ফকিরের বাড়িতে। সেখানে তারা ভাংচুর ও মহিলারদের মারধর ও শ্লীলতাহানি করে কলা বিক্রয়ের নগদ দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা, দুটি মোটরসাইকেল ও অন্যান্য আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তারা মোটরসাইকেল দুটি ফেরত দিলেও টাকা ও অন্যান্য আসবাবপত্র ফেরত দেয় নি। ১৫ আগষ্ট দিনের বেলায় গোয়ালনগরে সেন্টু সরদার ও তার ছেলেকে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
শুধুমাত্র এখানেই শেষ নয় ১লা সেপ্টেম্বর তাদের ৪০-৫০ জন সদস্যের একটি দল অস্ত্র – সস্ত্র নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে পরিষদ ভবনে তালা আবদ্ধ করে।
এসকল ঘটনায় ঢালারচর ইউনিয়নের জনসাধারণ ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢালারচর ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি বলেন, এভাবে চলতে থাকলে এলাকায় নিরাপত্তা বলে কিছু থাকবে না। এমতাবস্থায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢালারচর ইউনিয়ন বিএনপির একজন নেতা জাতীয় দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি কে বলেন, বিএনপি কোন প্রকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বিশ্বাস করে না, যারা এধরণের কার্যকলাপ করছে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।
এবিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার ( সুজানগর -আমিনপুর সার্কেল) রবিউল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।