কাতারের ফুটবল বিশ্বকাপ মাঠে গড়াতে বাকি মাত্র দুই দিন। বিশ্ব আসরকে ঘিরে সব প্রস্তুতি যখন শেষের দিকে, তখন নতুন এক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে হাজির কাতারি রাজপরিবার। বিশ্বকাপের স্টেডিয়ামগুলোতে মদ্যপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে চায় দেশটির সরকার প্রধান ।
ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে এবারই প্রথম এশিয়ার কোনো মুসলিম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজন করছে কাতার। মুসলিম দেশ হওয়ায় দেশটিতে রয়েছে ধর্মীয় নানা বিধিনিষেধ। বিদেশি পর্যটকদের জন্য দেশটিতে লাইসেন্স প্রাপ্ত কিছু রেস্তোরাঁয় অ্যালকোহল সেবনের অনুমতি থাকলেও মুসলিমদের ক্ষেত্রে রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা।
তবে বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে বেশকিছু বিষয়ে নিয়ম-কানুন কিছুটা শিথীল করেছিল কাতার। অনুমোদন পেয়েছিল স্টেডিয়ামে বিয়ার বিক্রির বিষয়টিও। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে বেঁকে বসেছে দেশটির রাজপরিবার। স্টেডিয়ামে বিয়ার বিক্রি বন্ধের জন্য ফিফাকে চাপ দিচ্ছে কাতারি রাজপরিবার।
কাতারি রাজপরিবারের এমন সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে ফিফা। কারণ স্টেডিয়ামে বিয়ার বিক্রির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠান ‘বুঁদউইজার’ এবারের বিশ্বকাপে বেশ বড়সড় স্পন্সর। এখন শেষ মুহূর্তের এই ঘটনায় যদি তারা বিশ্বকাপে অর্থ বিনিয়োগ করতে না চায়, তাহলে বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে ফিফাকে।
ফিফার পক্ষ থেকে এখনও অবশ্য কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি এ ব্যাপারে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুঁদউইজার কোম্পানিটির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় বসবে আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে কাতারি রাজপরিবারের নিষেধাজ্ঞা ঠেলে বিয়ারকে বৈধতা দেওয়াটা ফিফার পক্ষেও সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে কাতারকে নিয়ে শুরু থেকেই ছিল ব্যাপক সমালোচনা। বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার বেশকিছু দেশ কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের ঘোর বিরোধিতা করেছে। ফিফার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সেপ ব্লাটারও কাতারকে আয়োজক বানানো ভুল সিদ্ধান্ত বলেছেন। সেই সমালোচনায় একটু হলেও ঘি ঢালতে পারে এবার রাজপরিবারের এমন সিদ্ধান্ত। তবে এতোকিছু সত্ত্বেও বিশ্বকাপের সফল আয়োজনের পথে একটু একটু করে এগোচ্ছে কাতার। আগামী ২০ তারিখ স্বাগতিকদের সঙ্গে ইকুয়েডরের ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থখ্যাত এ বিশ্বকাপের।