আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে মানিকগঞ্জ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সেনবাগে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতার করা পৃথক চার মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১৮০ জনের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। বিষয়টি দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি কে নিশ্চিত করেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। আদালতে এদিন তাদের জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান আহমেদ ভূঁইয়া।
মানিকগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৬০ জন নেতাকর্মীকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। ছয় সপ্তাহ পর বিচারিক আদালতে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপি শহরের সেওতা এলাকা থেকে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি খালপাড় এলাকায় পৌঁছালে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
ওই রাতেই সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল লিটন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের আড়াই হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। মামলায় পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৩৩ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া বাকিদের অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
এদিকে, বেগমগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৮০-৯০ জন বিএনপির নেতাকর্মীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। গত বুধবার (৩১ আগস্ট) রাতে উপ-পরিদর্শক মাহবুব বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানার মামলাটি করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলমকে। ওই মামলার ৬০ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৬০ জন নেতাকর্মীকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। ছয় সপ্তাহ পর বিচারিক আদালতে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, গত ২৯ আগস্ট নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ডমুরুয়া ইউনিয়নের গাজীরহাট মোড় এলাকায় বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে রাতে থানায় একটি মামলা করেছে। মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানসহ ২২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা হিসেবে আরও ৪০০ থেকে ৪৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আবার একই সময় আওয়ামী লীগের মারধর ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা-ভাংচুরের ঘটনায় ডমুরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা সাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেছেন। এ মামলায়ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমানসহ ২২৩ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া এ মামলায় আরও ৪০০ থেকে ৪৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে। পৃথক দুটি মামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৬০জন নেতাকর্মীর ছয় সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। ছয় সপ্তাহ পর বিচারিক আদালতে তাদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।