ঢাকা ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা, গুলিবিদ্ধ ৫

কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পালটা-ধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। শনিবার দুপুরে কুমিল্লা নগরীর পুলিশ লাইন ও রেসকোর্স এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় চান্দিনা উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়িতে ভাঙচুর ও পরে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর জিলা স্কুলের ফটকে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান করলে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে নগরীর পুলিশ লাইন এলাকায় অবস্থান নেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এ সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষার্থীরাও পালটা ইট-পাটকেল ছুড়ে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ইস্পাহানী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মিতুল, কুমিল্লা সরকারি কলেজ আসিফ, সৌরভসহ ৫ জন গুলিবিদ্ধ এবং ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়।

পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পুলিশ লাইন্সের ভেতর ও আশেপাশের বিভিন্ন বাসায় অবস্থান নেয়।
এর আগে সকাল থেকেই কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জিলা স্কুল, কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুল, কুমিল্লা হাই স্কুল, কুমিল্লা মডার্ন স্কুলসহ নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ইকবাল হোসেন ও জামাল উদ্দিন বলেন, এটা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। আমরা কুমিল্লা মহানগরীর সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। অন্যায়ভাবে ছাত্রলীগ আমাদের উপর হামলা ও গুলি চালিয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে গুলিবিদ্ধ ৩ ছাত্রের নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম বলেন, বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কারও মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মারা যাওয়ার বিষয়টি গুজব। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী প্রাণ ভয়ে পুলিশ লাইন্সের ভেতর আশ্রয় নেয়, আমরা তাদের উদ্ধার করে গাড়িতে বাসায় পৌঁছে দিয়েছি।

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিকুল্লাহ খোকন বলেন, কোনো শিক্ষার্থীকে গুলি করা হয়নি। তাদের কর্মসূচি পালনে আমরা সহযোগিতা করেছি। শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতিপক্ষ কিংবা টার্গেট নয়। আমরা বিএনপি জামায়াতের নাশকতা ঠেকাতে রাজপথে অবস্থান করছি।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা, গুলিবিদ্ধ ৫

আপডেট সময় ১২:৪৪:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ অগাস্ট ২০২৪

কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পালটা-ধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ৫ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। শনিবার দুপুরে কুমিল্লা নগরীর পুলিশ লাইন ও রেসকোর্স এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে দুপুর পৌনে ১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় চান্দিনা উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়িতে ভাঙচুর ও পরে আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে নগরীর জিলা স্কুলের ফটকে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান করলে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে নগরীর পুলিশ লাইন এলাকায় অবস্থান নেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এ সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে শিক্ষার্থীরাও পালটা ইট-পাটকেল ছুড়ে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে ইস্পাহানী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মিতুল, কুমিল্লা সরকারি কলেজ আসিফ, সৌরভসহ ৫ জন গুলিবিদ্ধ এবং ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়।

পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পুলিশ লাইন্সের ভেতর ও আশেপাশের বিভিন্ন বাসায় অবস্থান নেয়।
এর আগে সকাল থেকেই কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, জিলা স্কুল, কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া স্কুল, কুমিল্লা হাই স্কুল, কুমিল্লা মডার্ন স্কুলসহ নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ইকবাল হোসেন ও জামাল উদ্দিন বলেন, এটা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। আমরা কুমিল্লা মহানগরীর সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। অন্যায়ভাবে ছাত্রলীগ আমাদের উপর হামলা ও গুলি চালিয়েছে।

এদিকে ঘটনার পর থেকে গুলিবিদ্ধ ৩ ছাত্রের নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম বলেন, বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কারও মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মারা যাওয়ার বিষয়টি গুজব। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী প্রাণ ভয়ে পুলিশ লাইন্সের ভেতর আশ্রয় নেয়, আমরা তাদের উদ্ধার করে গাড়িতে বাসায় পৌঁছে দিয়েছি।

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিকুল্লাহ খোকন বলেন, কোনো শিক্ষার্থীকে গুলি করা হয়নি। তাদের কর্মসূচি পালনে আমরা সহযোগিতা করেছি। শিক্ষার্থীরা আমাদের প্রতিপক্ষ কিংবা টার্গেট নয়। আমরা বিএনপি জামায়াতের নাশকতা ঠেকাতে রাজপথে অবস্থান করছি।