ঢাকা ০৮:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
হিসাব রক্ষক আলাউদ্দিনের এক যুগের দুর্নীতি ঘোচাবে কে? গণপূর্তে সন্ত্রাসীদের দ্বারা সিন্ডিকেট গড়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী তামজিদ হোসেন কুমিল্লায় তায়কোয়ানদো প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ সম্পন্ন গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পরিকল্পনা শিল্পঘাতক: আইইএফ দেশীয় সিগারেট শিল্প বৈষম্যের শিকার জুলাই বিপ্লবে নিহত মাহবুবের পরিবারের পাশে তারেক রহমান ‘নিত্যপণ্যে ভ্যাট বসিয়ে ফ্যাসিস্টের রাস্তায় হাঁটছে সরকার’ বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ চলতি বছরেই নির্বাচন সম্পন্ন করা জরুরি ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন ষড়যন্ত্রকারী বিএনপির ক্ষতি করতে পারবে না : আমিনুল হক

‘দেশের এ সিস্টেমের কারণে মেধাবীরা বিদেশে ক্লিনার হচ্ছেন’

জনসংখ্যা, নারী, প্রতিবন্ধী ও অনুন্নত জনপদ ছাড়া রাষ্ট্রের সব স্তরের কোটা বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রিয়াশীল সাত ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেটের আমতলা চত্বর থেকে মশাল মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি ফলকের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে তারা একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

মশাল মিছিলে অংশ নেওয়া সাতটি ছাত্রসংগঠন হলো-বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র গণমঞ্চ, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদ। মশাল মিছিলে নেতাকর্মীরা ‘কোটা না সমতা’, ‘সমতা সমতা’, ‘দালালি না রাজপথ’, ‘রাজপথ রাজপথ’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধ ’, ‘লাড়াই হবে এক সঙ্গে’, ‘আপস না সংগ্রাম’, ‘সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে’, ‘লড়াই হবে একসঙ্গে’, ‘প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে’, ‘লড়াই হবে একসঙ্গে’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’,‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে শিক্ষার্থীরা যে কোটা সংস্কার আন্দোলন করছেন, সেটিকে তারা স্বাগত জানান। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে। তবে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা, নারী, প্রতিবন্ধী ও অনুন্নত জনপদের মানুষরা এখনো পিছিয়ে আছে। তাদের জন্য সংখ্যানুপাতিক হারে কোটা রাখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘বাংলাদেশে বেকার সমস্যা প্রকট। সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা একেবারে অযৌক্তিক। ১০০টি পদের মধ্যে যদি ৩০টি নির্দিষ্ট শ্রেণিকে দিয়ে দেওয়া হয়, যারা আবার সংখ্যায় ১ শতাংশেরও কম, তাহলে সেটা বাংলাদেশের মতো একটা দেশে অবশ্যই বৈষম্য সৃষ্টি করে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, নারী ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সীমিত আকারে কোটা থাকুক। সেই কোটাগুলোই বাতিল চাই, যেগুলো বৈষম্য সৃষ্টি করে।’

নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, ‘ছাত্র সমাজ ২০১৮ সালে কোটা বাতিল চায়নি, তারা সংস্কার চেয়েছিল। তবে সংসদে প্রধানমন্ত্রী রাগান্বিত হয়ে কোটা বাতিল করে দিয়েছিল। যার ফলে আবার ২০২৪ সালে এসে আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে। বর্তমানে দেশের প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি গ্রাস করেছে। দেশের এ সিস্টেমের কারণে মেধাবীরা বিদেশে গিয়ে ক্লিনার ও ড্রাইভার হচ্ছেন। পিএসসির মতো একটা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশ্নফাঁস হচ্ছে। আমাদের এসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। শুধু কোটা নয়, সব প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধেই আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামিন ত্রিপুরা বলেন, তারা পাহাড়িরা বিভিন্ন দিক দিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চেয়ে পিছিয়ে আছেন। তাদের মাতৃভাষার পাশাপাশি অন্য ভাষাতে গিয়ে পড়াশোনাসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়। যতদিন না তারা সমতায় আসতে পারেন, তাদের জন্য কোটা পদ্ধতি বহাল রাখতে হবে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার শাহরিয়ার আলিফ। এসময় আরও অনেকে বক্তব্য দেন।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

হিসাব রক্ষক আলাউদ্দিনের এক যুগের দুর্নীতি ঘোচাবে কে?

‘দেশের এ সিস্টেমের কারণে মেধাবীরা বিদেশে ক্লিনার হচ্ছেন’

আপডেট সময় ১২:৪৫:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪

জনসংখ্যা, নারী, প্রতিবন্ধী ও অনুন্নত জনপদ ছাড়া রাষ্ট্রের সব স্তরের কোটা বাতিলের দাবিতে মশাল মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রিয়াশীল সাত ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেটের আমতলা চত্বর থেকে মশাল মিছিল শুরু করেন তারা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি ফলকের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে তারা একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

মশাল মিছিলে অংশ নেওয়া সাতটি ছাত্রসংগঠন হলো-বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, নাগরিক ছাত্র ঐক্য, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র গণমঞ্চ, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদ। মশাল মিছিলে নেতাকর্মীরা ‘কোটা না সমতা’, ‘সমতা সমতা’, ‘দালালি না রাজপথ’, ‘রাজপথ রাজপথ’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধ ’, ‘লাড়াই হবে এক সঙ্গে’, ‘আপস না সংগ্রাম’, ‘সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘বৈষম্যের বিরুদ্ধে’, ‘লড়াই হবে একসঙ্গে’, ‘প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে’, ‘লড়াই হবে একসঙ্গে’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’,‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, বর্তমানে দেশে শিক্ষার্থীরা যে কোটা সংস্কার আন্দোলন করছেন, সেটিকে তারা স্বাগত জানান। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে। তবে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা, নারী, প্রতিবন্ধী ও অনুন্নত জনপদের মানুষরা এখনো পিছিয়ে আছে। তাদের জন্য সংখ্যানুপাতিক হারে কোটা রাখতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘বাংলাদেশে বেকার সমস্যা প্রকট। সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা একেবারে অযৌক্তিক। ১০০টি পদের মধ্যে যদি ৩০টি নির্দিষ্ট শ্রেণিকে দিয়ে দেওয়া হয়, যারা আবার সংখ্যায় ১ শতাংশেরও কম, তাহলে সেটা বাংলাদেশের মতো একটা দেশে অবশ্যই বৈষম্য সৃষ্টি করে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, নারী ও অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য সীমিত আকারে কোটা থাকুক। সেই কোটাগুলোই বাতিল চাই, যেগুলো বৈষম্য সৃষ্টি করে।’

নাগরিক ছাত্র ঐক্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, ‘ছাত্র সমাজ ২০১৮ সালে কোটা বাতিল চায়নি, তারা সংস্কার চেয়েছিল। তবে সংসদে প্রধানমন্ত্রী রাগান্বিত হয়ে কোটা বাতিল করে দিয়েছিল। যার ফলে আবার ২০২৪ সালে এসে আমাদের আন্দোলন করতে হচ্ছে। বর্তমানে দেশের প্রতিটি সেক্টরে দুর্নীতি গ্রাস করেছে। দেশের এ সিস্টেমের কারণে মেধাবীরা বিদেশে গিয়ে ক্লিনার ও ড্রাইভার হচ্ছেন। পিএসসির মতো একটা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশ্নফাঁস হচ্ছে। আমাদের এসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। শুধু কোটা নয়, সব প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধেই আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামিন ত্রিপুরা বলেন, তারা পাহাড়িরা বিভিন্ন দিক দিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর চেয়ে পিছিয়ে আছেন। তাদের মাতৃভাষার পাশাপাশি অন্য ভাষাতে গিয়ে পড়াশোনাসহ যাবতীয় কাজ করতে হয়। যতদিন না তারা সমতায় আসতে পারেন, তাদের জন্য কোটা পদ্ধতি বহাল রাখতে হবে।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার শাহরিয়ার আলিফ। এসময় আরও অনেকে বক্তব্য দেন।