কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আর বাকি মাত্র ৪ দিন। মধ্যপ্রাচ্যের বুকে ফুটবলের এই মহাযজ্ঞ দেখতে ইতোমধ্যেই সারা বিশ্ব থেকে দেশটিতে জড়ো হচ্ছেন ভক্ত-সমর্থকরা। তবে চার আর্জেন্টাইন রীতিমতো অদ্ভুত পাগলামিই করে বসেছেন। ৬ মাস সাইকেলে চালিয়ে গিয়ে হাজির হয়েছেন কাতারে।
গল্পের শুরুটা হয় দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনে। চার বন্ধু লুকাস, সিলভিও, লিয়ান্দ্রো ও মাতিয়াসের মাথায় আসে আইডিয়াটা। তবে চাইলেই তো এতটা পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব নয়। প্রেমটা যখন ফুটবলের প্রতি, তখন এত সব ভাবলে হবে না!
মাতিয়াসরা ভাবেনও নি। গত মে মাসে শুরু করেছেন এই যাত্রা। এরপর টানা ১৮০ দিন চালিয়েছেন প্যাডেল, প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়েছেন; শেষ দিকে এসে বেড়ে গেছে গতিও, ২০০ কিলোমিটার পর্যন্তও সাইকেল চালানো হয়েছে কোনো কোনো দিন, জানান সিলভিও।
৬ মাসে চার বন্ধু মিলে পাড়ি দিয়েছেন ২ মহাদেশ। মাঝে পেরিয়ে গেছে ১৩টি দেশ, ১০ হাজার কিলোমিটার। পথে বাধাও পেয়েছেন অজস্র। তবে বিশ্বকাপ দেখার নেশার কাছে সব নস্যি। সব শেষে তাই দীর্ঘ সফরের ক্লান্তির চেয়ে আনন্দটাই বেশি লুকাস, সিলভিও, লিয়ান্দ্রো ও মাতিয়াসের।
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে সিলভিও জানান তাদের এই আনন্দ। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, অন্যরকম সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা হলো। অসাধারণ! কখনোই ভোলার মতো নয় এটা। ক্লান্তিকর এক সফর ছিল। আমরা অবশেষে লক্ষ্যে আমাদের পৌঁছাতে পেরেছি, খুব গর্ব হচ্ছে তাই।’
মাতিয়াস ভিয়ারুয়েলের কথা, ‘সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জটা ছিল সৌদি আরবের মরুভূমি পাড়ি দেয়া। আমাদের ২ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। প্রতিদিন আমাদের দেড়’শ কিলোমিটারের মতো সাইকেল চালাতে হয়েছে।’
তবে এই যাত্রায় চার বন্ধু একা ছিলেন না। পৃষ্ঠপোষক দল ছিল তাদের। যারা তাদের সুবিধামতো জায়গায় হোটেলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমর্থন পেয়েছেন চার বন্ধু।
এই যাত্রা কেবলই ক্লান্তির ছিল না। ১৩ দেশ পেরিয়েছেন, পথে নানা ধরনের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন, সেখানের খাবার চেখে দেখেছেন। যদিও দীর্ঘ ভ্রমণের কথা ভেবে খাবার খেতে হয়েছে বেছে বেছে।
তবে বিশ্বকাপের জন্য এত তোড়জোড় করলেও টিকিটের ব্যবস্থা এখনো হয়নি তাদের। এজন্যে এখন কর্তপক্ষের সহায়তা আশা করছেন চার বন্ধু।