নওগাঁ সদর থানায় কলেজ ছাত্রী (২০) মেয়েকে ধর্ষণ ও পূর্ণগ্রাফী মামলায় মো. উজ্জ্বল হোসেন (৪৫) নামের ওই ছাত্রীর বাবাকে আটক করেছে থানা পুলিশ। ওই ছাত্রীর মা স্কুল শিক্ষিকা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে অভিযুক্তকে আটক করে শনিবার দুপুরে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে থানা পুলিশ।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, পাশ্ববর্তী থানা রানীনগরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসাবে চাকরি করেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর মা। তার চাকুরী করার সুবাদে প্রতিদিন সকাল ৮ টা হতে ৬ টা পর্যন্ত বাড়ির বাহিরে অবস্থান করে। আসামি প্রতিনিয়ত রাতের বেলায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মাকে খাবারের সাথে ঘুমের ঔষুধ খাওয়ায়। সে ঘুমিয়ে গেলে মেয়েকে দীর্ঘদিন যাবৎ একা পেয়ে তার ঘরের মধ্যে ভয়ভীতি দেখিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষন করে আসছিল। এর এক পর্যায়ে ধর্ষনের ছবি/ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করে সংরক্ষন করে রাখে। পরবর্তীতে সে ভিডিও গুলো দেখিয়ে তার মেয়েকে ধর্ষন করতে থাকে এবং এসব কথা কাউকে বললে সে ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিবে বলে হুমকি দিয়ে মেয়েকে প্রতিনিয়ত ধর্ষন করে।
এ বিষয়ে ধর্ষণের শিকার উর্মি (২০) বলেন, আমি যখন ষষ্ঠ শ্রেণীতে লেখাপড়া করতাম তখন থেকে আমার জন্মদাতা পিতা উজ্জ্বল আমাকে ধর্ষণ করে আসছে। আমাকে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বলতো আমার শরীরের গোপন জায়গাগুলো তে বার বার নির্যাতন করেছে যাতে কেউ দেখতে না পায়। আমি আমার দাদি ও চাচাদের বললে তারা কখনো বিশ্বাস করেনি। সাহস করে আমার মামা কে জানিয়েছিলাম তাঁরাও কোন রূপ ব্যবস্থা নেয়নি। সবশেষে গত মে মাসে আমার আম্মুকে সবকিছু খুলে বলি এরপর আম্মু হাতেনাতে ধরার জন্য এতদিন চুপ ছিল কিন্তু গত ২৩ জুলাই আম্মু স্কুলে গেলে আমাকে আমার বাবা আবার ধর্ষণ করে তাই দিশেহারা হয়ে পুলিশ সুপার মহোদয়ের সরনাপন্ন হই। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর স্যার কে সবকিছু খুলে বলি তিনি উনার টিম পাঠিয়ে আমার বাবা কে গ্রেফতার করে নিয়ে আসেন এবং জেলে পাঠিয়ে দেয়। আমি আমার বাবার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, আমি স্কুলে থাকা অবস্থায় গত ২৩ জুলাই সকাল অনুমান ১০ টার দিকে আমার বসত বাড়ীর পশ্চিম দূয়ারী টিনসেড ঘরে আমার মেয়েকে আমার স্বামী পুনরায় ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষন করে। আমার মেয়ের শরীরিক ও মানসিক অবস্থা দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করলে আমার মেয়ে আমাকে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানায়। আমি তার প্রতিবাদ করলে আমার স্বামী গত ৪ জুন আমার বাড়ীর গোসলখানায় গোপনে ধারনকৃত আমার গোসলের অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। তারপরও আমি লোক লজ্জার ভয় উপেক্ষা করে থানায় মামলা দায়ের করি।