ঢাকা ০৪:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে সুখবর জেলা প্রশাসককে গাছের চারা উপহার দিলেন ইউএনও টঙ্গীতে সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরনের ফাঁসীর দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের নামে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মমিন মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে লেক ভিউ আবাসিক হোটেলের নামে চলছে নারী জুয়া ও মাদক ব্যবসা যাত্রাবাড়িতে দেহব্যবসার মহারানী রেখার রঙিন জগৎ ২১ নভেম্বর বাংলাদেশ কেবল শিল্প কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচন উত্তরায় চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করছেন ইমরান খান নন্দনপুর সরকারি রাস্তা কেটে ইট পোড়াচ্ছেন আজাদ ব্রিকসের মালিক ইসহাক সরদার জামাই-শশুর মিইল্লা পদ্মা অয়েল খাইল গিল্লা! বখতিয়ারের কোটি টাকার রহস্য কী?

টানা বৃষ্টিতে মৌলভীবাজারে প্রাণ ফিরে পেয়েছে চা গাছ

চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলে দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহের পর টানা বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে চা গাছগুলো। বৃষ্টির পানি গায়ে লাগিয়ে দুটি পাতা একটি কুঁড়িতে ভরে উঠেছে চা গাছগুলো। কদিন আগের তীব্র তাপদাহের কারণে চা পাতা গুলো ঝলসে বিবর্ণ হয়ে উঠেছিল। বৃষ্টির ছোয়ায় যেন আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে সবুজের এই সাম্রাজ্য।

বৃষ্টি চা বাগানের জন্য আশীর্বাদ হলেও অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টির মতোই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান চা উৎপাদন সংশ্লিষ্টরা।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত ২৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ মাঝারি রয়েছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি চা বাগান ঘুরে দেখা গেছে, অনাবৃষ্টি আর অত্যাধিক তাপমাত্রায় বিবর্ণ হয়ে যাওয়া চা গাছ প্রাণ ফিরে পেয়েছে। চা বাগান গুলোর গাছে গাছে এসেছে নতুন কুঁড়ি, বৃষ্টিস্নাত চা পাতা গুলো ফিরে পেয়েছে তার সৌন্দর্য। তবে ঝড় বৃষ্টিতে অনেক গাছপালা ভেঙে পরেছে। চা শ্রমিকরা চা-পাতা তোলার পাশাপাশি ভেঙে পরা এসব গাছ পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সময় পার করছে।

ইস্পাহানি জেরিন চা বাগানের উপমহাব্যবস্থাপক সেলিম রেজা জানান, চা উৎপাদনে বৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। কিছুদিন আগেও আমরা চা বাগানে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করেছি। বৃষ্টি না থাকায় বিকল্প পদ্ধতিতে পানি দিতে হয়েছে। তীব্র তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে চা গাছ গুলোতে নতুন কুঁড়ি বের হচ্ছিল না, বরং পাতা গুলো বিবর্ণ রঙ হয়ে গেছিল। নতুন কুঁড়ি না আসা, পানির সংকট, লাল মাকড়সার আক্রমণ প্রায় সব চা বাগানেই ছিল। এই বৃষ্টির ফলে চা গাছগুলো সজীবতা ফিরে এসেছে চা বাগানে। এখন পর্যন্ত বৃষ্টি ঠিক আছে। তবে অধিক বৃষ্টিও চা বাগানের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এখন চা উৎপাদন ভালো হচ্ছে, তবে বিদ্যুতের কারণে কিছুটা শঙ্কিত চা শিল্প।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক জানান, চা বাগানের জন্য প্রাকৃতিক বৃষ্টি অনেক উপকারী এর কোন বিকল্প নাই। সম্প্রতি দীর্ঘদিন তীব্র তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির পর এখন যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তা চা গাছের জন্য উপকারী ও আশীর্বাদ স্বরূপ। তবে অতিবৃষ্টি চা গাছের জন্য ক্ষতিকর। চা গাছের গোড়ায় পানি জমলে তা চা গাছের জন্য ক্ষতিকর হবে। চা গাছের নিচে যেন পানি না জমে, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এদিকে প্রচন্ড ঝড় ও বজ্রপাতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চা শ্রমিকরাও পরেছেন বিপাকে। অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ছে, বজ্রপাতে একজন চা শ্রমিক নিহত ও ৪/৫ জন আহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চা শ্রমিকদের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পুনঃনির্মাণ ও তাদের কর্মস্থলের নিরাপত্তার দাবী জানিয়েছেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন ও চা বাগান কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বজ্রপাতের সময় সতর্কতার বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে, দূর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজীব মাহমুদ মিঠুন

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে সুখবর

টানা বৃষ্টিতে মৌলভীবাজারে প্রাণ ফিরে পেয়েছে চা গাছ

আপডেট সময় ০৩:৩৫:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ জুন ২০২৩

চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলে দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদাহের পর টানা বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে চা গাছগুলো। বৃষ্টির পানি গায়ে লাগিয়ে দুটি পাতা একটি কুঁড়িতে ভরে উঠেছে চা গাছগুলো। কদিন আগের তীব্র তাপদাহের কারণে চা পাতা গুলো ঝলসে বিবর্ণ হয়ে উঠেছিল। বৃষ্টির ছোয়ায় যেন আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে সবুজের এই সাম্রাজ্য।

বৃষ্টি চা বাগানের জন্য আশীর্বাদ হলেও অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টির মতোই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান চা উৎপাদন সংশ্লিষ্টরা।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত ২৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ পর্যন্ত বৃষ্টির পরিমাণ মাঝারি রয়েছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি চা বাগান ঘুরে দেখা গেছে, অনাবৃষ্টি আর অত্যাধিক তাপমাত্রায় বিবর্ণ হয়ে যাওয়া চা গাছ প্রাণ ফিরে পেয়েছে। চা বাগান গুলোর গাছে গাছে এসেছে নতুন কুঁড়ি, বৃষ্টিস্নাত চা পাতা গুলো ফিরে পেয়েছে তার সৌন্দর্য। তবে ঝড় বৃষ্টিতে অনেক গাছপালা ভেঙে পরেছে। চা শ্রমিকরা চা-পাতা তোলার পাশাপাশি ভেঙে পরা এসব গাছ পরিষ্কার করতে ব্যস্ত সময় পার করছে।

ইস্পাহানি জেরিন চা বাগানের উপমহাব্যবস্থাপক সেলিম রেজা জানান, চা উৎপাদনে বৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। কিছুদিন আগেও আমরা চা বাগানে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করেছি। বৃষ্টি না থাকায় বিকল্প পদ্ধতিতে পানি দিতে হয়েছে। তীব্র তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে চা গাছ গুলোতে নতুন কুঁড়ি বের হচ্ছিল না, বরং পাতা গুলো বিবর্ণ রঙ হয়ে গেছিল। নতুন কুঁড়ি না আসা, পানির সংকট, লাল মাকড়সার আক্রমণ প্রায় সব চা বাগানেই ছিল। এই বৃষ্টির ফলে চা গাছগুলো সজীবতা ফিরে এসেছে চা বাগানে। এখন পর্যন্ত বৃষ্টি ঠিক আছে। তবে অধিক বৃষ্টিও চা বাগানের জন্য মঙ্গলজনক নয়। এখন চা উৎপাদন ভালো হচ্ছে, তবে বিদ্যুতের কারণে কিছুটা শঙ্কিত চা শিল্প।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক জানান, চা বাগানের জন্য প্রাকৃতিক বৃষ্টি অনেক উপকারী এর কোন বিকল্প নাই। সম্প্রতি দীর্ঘদিন তীব্র তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির পর এখন যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তা চা গাছের জন্য উপকারী ও আশীর্বাদ স্বরূপ। তবে অতিবৃষ্টি চা গাছের জন্য ক্ষতিকর। চা গাছের গোড়ায় পানি জমলে তা চা গাছের জন্য ক্ষতিকর হবে। চা গাছের নিচে যেন পানি না জমে, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এদিকে প্রচন্ড ঝড় ও বজ্রপাতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চা শ্রমিকরাও পরেছেন বিপাকে। অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ছে, বজ্রপাতে একজন চা শ্রমিক নিহত ও ৪/৫ জন আহত হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চা শ্রমিকদের ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পুনঃনির্মাণ ও তাদের কর্মস্থলের নিরাপত্তার দাবী জানিয়েছেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন ও চা বাগান কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বজ্রপাতের সময় সতর্কতার বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে, দূর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজীব মাহমুদ মিঠুন