ঢাকা ০১:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই শতাব্দির মধ্যে ব্রিটেনের কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী ঋষির অভিষেক আজ

গত দুই শতাব্দির মধ্যে যুক্তরাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজ দায়িত্ব নেবেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ঋষি সুনাক। অর্থনৈতিক আর রাজনৈতিক সংকটে দেশটিতে যখন টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে, তখন প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসাবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি।

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নাম প্রত্যাহার ও প্রতিদ্বন্দ্বী পেনি মর্ডান্ট টোরি এমপিদের কাছ থেকে যথেষ্ট সমর্থন পেতে ব্যর্থ হওয়ায় সোমবার ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হন ঋষি।

গত দুই শতাব্দির মধ্যে যুক্তরাজ্যের কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অভিষেক হচ্ছে ৪২ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাকের। শুল্ক হ্রাসের পরিকল্পনা ঘিরে তৈরি হওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাসের কম সময়ের মধ্যে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া লিজ ট্রাসের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন তিনি।

তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে এমন এক অর্থনীতির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন যা মন্দার দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ঋষির পূর্বসূরি লিজ ট্রাসের শুল্ক হ্রাসের বাজেট ব্রিটেনের অর্থনীতিতে তীব্র ধাক্কা বয়ে এনেছে, বিপর্যস্ত করেছে পাউন্ড।

ঋষি সুনাক মঙ্গলবার আরও পরের দিকে ব্রিটেনের রাজা চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ব্রিটেনের রাজতন্ত্রের মসনদে বসা চার্লস ক্ষমতায় আসার পর প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ঋষিকে নিয়োগ দেবেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়ার মাত্র দু’দিন আগে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ট্রাসকে নিযুক্ত করেছিলেন।

ব্রিটেনের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ট্রাস। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া ৩টা) ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বিদায়ী ভাষণ দেবেন লিজ ট্রাস। তার আগে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে বিদায়ী বৈঠক করবেন তিনি।

এর এক ঘণ্টা পর ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে ভাষণ দেবেন ঋষি সুনাক। এর আগে, সোমবার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর এক ভাষণে ব্রিটেনে ‌‘স্থিতিশীলতা আর ঐক্যের’ ডাক দিয়েছেন দেশটির নতুন এই প্রধানমন্ত্রী।

১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে প্রথম বক্তৃতা দেওয়ার পর সুনাকের প্রথম কাজ হবে তার মন্ত্রিসভা গঠন। তবে ঋষি সুনাকের মন্ত্রিসভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ বরিস জনসনের মন্ত্রিসভা থেকে অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক পদত্যাগ করায় কার্যত প্রধানমন্ত্রিত্ব হারাতে হয় তাকে।

ব্রিটেনের রাজনীতিতে গত কয়েক বছর ধরেই আলোচনায় আছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। ভারতীয় বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ইনফোসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির জামাতা সুনাককে ঘিরে বিতর্কও হয়েছে বিস্তর।

কনজারভেটিভ এই নেতা পূর্ব আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমানো ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের এক পরিবারের সন্তান। অভিবাসী পরিবারের সেই ঋষি ব্রিটেনের ৫৭তম প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া ঋষি সুনাককে সোমবার উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অভিনন্দন বার্তায় ঋষি সুনাকের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আপনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় আমি বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যু ও রোডম্যাপ-২০৩০ বাস্তবায়নে একসাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

দুই শতাব্দির মধ্যে ব্রিটেনের কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী ঋষির অভিষেক আজ

আপডেট সময় ০৩:০৮:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর ২০২২

গত দুই শতাব্দির মধ্যে যুক্তরাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আজ দায়িত্ব নেবেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ঋষি সুনাক। অর্থনৈতিক আর রাজনৈতিক সংকটে দেশটিতে যখন টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে, তখন প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসাবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিচ্ছেন তিনি।

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে নাম প্রত্যাহার ও প্রতিদ্বন্দ্বী পেনি মর্ডান্ট টোরি এমপিদের কাছ থেকে যথেষ্ট সমর্থন পেতে ব্যর্থ হওয়ায় সোমবার ব্রিটেনের কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হন ঋষি।

গত দুই শতাব্দির মধ্যে যুক্তরাজ্যের কনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অভিষেক হচ্ছে ৪২ বছর বয়সী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাকের। শুল্ক হ্রাসের পরিকল্পনা ঘিরে তৈরি হওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাসের কম সময়ের মধ্যে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া লিজ ট্রাসের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন তিনি।

তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে এমন এক অর্থনীতির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন যা মন্দার দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ঋষির পূর্বসূরি লিজ ট্রাসের শুল্ক হ্রাসের বাজেট ব্রিটেনের অর্থনীতিতে তীব্র ধাক্কা বয়ে এনেছে, বিপর্যস্ত করেছে পাউন্ড।

ঋষি সুনাক মঙ্গলবার আরও পরের দিকে ব্রিটেনের রাজা চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ব্রিটেনের রাজতন্ত্রের মসনদে বসা চার্লস ক্ষমতায় আসার পর প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ঋষিকে নিয়োগ দেবেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়ার মাত্র দু’দিন আগে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ট্রাসকে নিযুক্ত করেছিলেন।

ব্রিটেনের রাজনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ট্রাস। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া ৩টা) ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বিদায়ী ভাষণ দেবেন লিজ ট্রাস। তার আগে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সাথে বিদায়ী বৈঠক করবেন তিনি।

এর এক ঘণ্টা পর ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে ভাষণ দেবেন ঋষি সুনাক। এর আগে, সোমবার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর এক ভাষণে ব্রিটেনে ‌‘স্থিতিশীলতা আর ঐক্যের’ ডাক দিয়েছেন দেশটির নতুন এই প্রধানমন্ত্রী।

১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে প্রথম বক্তৃতা দেওয়ার পর সুনাকের প্রথম কাজ হবে তার মন্ত্রিসভা গঠন। তবে ঋষি সুনাকের মন্ত্রিসভায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ বরিস জনসনের মন্ত্রিসভা থেকে অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক পদত্যাগ করায় কার্যত প্রধানমন্ত্রিত্ব হারাতে হয় তাকে।

ব্রিটেনের রাজনীতিতে গত কয়েক বছর ধরেই আলোচনায় আছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। ভারতীয় বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ইনফোসিসের সহপ্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির জামাতা সুনাককে ঘিরে বিতর্কও হয়েছে বিস্তর।

কনজারভেটিভ এই নেতা পূর্ব আফ্রিকা থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমানো ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের এক পরিবারের সন্তান। অভিবাসী পরিবারের সেই ঋষি ব্রিটেনের ৫৭তম প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হতে যাওয়া ঋষি সুনাককে সোমবার উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অভিনন্দন বার্তায় ঋষি সুনাকের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আপনি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় আমি বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যু ও রোডম্যাপ-২০৩০ বাস্তবায়নে একসাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।