বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে কোরিয়ান কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন, কোরিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (কেবিসিসিআই) এবং কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এজেন্সি (কোট্রা) যৌথভাবে ‘কোরিয়া সপ্তাহ-২০২৩’ আয়োজন করতে যাচ্ছে। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত চলবে এটি।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) কোরিয়া দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ইয়ং ওহ ইউ এসব তথ্য জানান।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অর্থনৈতিক সাফল্য উদযাপন এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের জন্য কোরিয়ান কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে ‘কোরিয়া সপ্তাহ-২০২৩’ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ‘স্টে স্ট্রং মার্চ টুগেদার’ এ শ্লোগান নিয়ে আগামী ৩ মার্চ পর্যন্ত চলবে এটি।
দুই ভ্যেনুতে অনুষ্ঠেয় সপ্তাহব্যাপী আয়োজনে থাকছে-শো-কেস কোরিয়া, কোরিয়া-কাপ গলফ টুর্নামেন্ট, কে-পপ কনসার্ট, তায়কোয়ান্দো পারফরম্যান্স এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি শোকেস কোরিয়াতে ৪০টিরও বেশি কোম্পানি অংশগ্রহণ করবে। এতে এলজি প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে কাজ করবে। স্যামসাং গ্যালাক্সি স্পন্সরশিপের মাধ্যমে ২৫ ফেব্রুয়ারি টিম লাইভ কনসার্ট, এবং গার্লগ্রুপ ও কোরিয়ান মার্শাল আর্ট তায়কোয়ান্দো পারফরম্যান্স টিম বাংলাদেশের কেপ ভক্তদের বিনোদন দিতে ঢাকায় আসবে।
এছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, কোরিয়ান খাবার, ইলেকট্রনিক পণ্য, কোরিয়ান পর্যটন সম্পর্কিত তথ্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে। কোরিয়া কাপ গলফ টুর্নামেন্ট ১ ও ২ মার্চ এবং ৩ মার্চ অ্যাওয়ার্ড শো কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব, ঢাকা সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুসংহত হবে। একইসঙ্গে এটি দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।
রাষ্ট্রদূত লি জাং-কুন বলেন, কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ঐতিহাসিক ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশে কোরিয়ান সম্প্রদায়ের এ রকম বিশাল আয়োজন দেখে খুবই ভালো লাগছে।
গত বছর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ সর্বকালের সর্বোচ্চ ৩.৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত লি জাং-কুন বলেন, কোরিয়া দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং উভয় দেশের ব্যবসায়িক সমাজ আরও সহযোগিতা পেতে শোকেস কোরিয়া একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে কোরিয়ান কমিউনিটির চেয়ারম্যান ইয়ং ওহ ইউ বলেন, কোরিয়া ১৯৭২ সালের মে মাসে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় এবং ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বরে কনস্যুলার সংযোগ ও ডিসেম্বরে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়া স্যামসাং এবং হুন্ডাইয়ের মতো বড় কোরিয়ান কোম্পানিগুলিকে বাংলাদেশে নির্মাণ, প্রকৌশল, ইলেকট্রনিক্স এবং অটোতে যুক্ত করার কথা বিবেচনা করছে। কারণ বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত ও বাজার প্রসারিত করছে।
তিনি বলেন, কোরিয়ান কোম্পানি স্যামসাং নরসিংদীতে একটি উৎপাদন কারখানা স্থাপন করেছে। সেখানে মোবাইল ফোন, ফ্রিজ, টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ও ওয়াশিং মেশিন তৈরি করা হচ্ছে।