ঢাকা ১১:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
চট্টগ্রাম ইপিজেডে কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট টঙ্গীতে যুবতীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ জাজিরায় মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যু তারেক রহমানের নেতৃত্বেই স্বৈরাচারের পতনের মধ্যদিয়ে দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে: মোস্তফা জামান বিচারের আগে আওয়ামী লীগের কোনো পূর্ণবাসন নয় – হাসনাত আবদুল্লাহ পাঁচবিবিতে মাওলানা ভাসানীকে নিয়ে আলোচনা সভায় গনতান্ত্রিক বাংলাদেশ ও বৈদেশিক নীতির সরলীকরণ: ভোলার হত্যা মামলার পলাতক আসামী ঢাকায় র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার কাশিমপুরে চলছে জমজমাট মেলা নষ্ট হচ্ছে বাচ্চাদের লেখাপড়া। তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও সমৃদ্ধি বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান—বেলাবতে আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল

অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক উপযুক্ত জবাব দিন”প্রধানমন্ত্রী

সরকার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের যোগ্য জবাব দিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের উন্নয়নের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে এবং বিশ্বে বাংলাদেশ যে মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করেছে তা ধরে রেখে মাথা উঁচু করে বিশ্বব্যাপী চলার আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নিউ ইয়র্কে তার অবস্থানকালীন হোটেল থেকে প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে চালানো অপপ্রচারের তাৎক্ষণিক উপযুক্ত জবাব দিন।’ যুদ্ধাপরাধী ও জাতির জনকের খুনিদের আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া অর্থপাচারকারীসহ নানা অপরাধীরা অপপ্রচারের নেপথ্যে রয়েছে বলে তিনি জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের বেশিরভাগকেই অপকর্মে জড়িত থাকার জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বা অপরাধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের কথায় কর্ণপাত করবেন না। বরং আমাদের উন্নয়ন জনগণের সামনে তুলে ধরুন।’ সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে সরকার ও বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে অন্যদের সবক দিচ্ছে, এমন ব্যক্তিদের চরিত্র ও অপকর্ম জনসমক্ষে তুলে ধরার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি তার সরকারের করা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে সব স্থানে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে আপনার এলাকার কংগ্রেসম্যান, সিনেটর ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবহিত করুন এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখুন।’যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী (ছবি: ফোকাস বাংলা)যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী (ছবি: ফোকাস বাংলা)

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাজেটের আকারের তুলনামূলক চিত্র দেখে তাদের দ্বারা কতটা উন্নয়ন হয়েছে তা বিচার করতে পারবেন। বিএনপি আমলে বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৬০ হাজার কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ বাজেট ছয় লাখ কোটি টাকার ওপরে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রেখে সারা বিশ্বে চলার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বে যে মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করেছে তা সমুন্নত রাখার জন্য আমি আপনাদের সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প থেকে তাদের তহবিল প্রত্যাহারের বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বদলে দিয়েছে এবং প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ যা বলে তা করার ক্ষমতা রাখে। প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বে আসন্ন খাদ্য সংকট সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করে ভবিষ্যতে তা থেকে বাঁচতে সবাইকে আরও বেশি করে খাদ্য উৎপাদনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যেহেতু একটি প্রকট খাদ্য সংকট আসন্ন, তাই দেশে আপনার স্বজনদের বলুন, বিভাজনের কারণে দেশের কোনও জমিই অনাবাদি রাখা যাবে না।’

ভোট কারচুপি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি গুম, খুন ও দুর্নীতি, অর্থপাচার, অস্ত্র বাণিজ্যসহ সব ধরনের অপকর্মের রাজনীতি চালু করা সত্ত্বেও নির্বাচনি প্রক্রিয়া, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য শেখ হাসিনা বিএনপির কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ভোট কারচুপিতে বিএনপি চ্যাম্পিয়ন ছিল। তারা ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল। দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য রাজনীতিতে হত্যা, গুম, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং ও ঋণখেলাপি সংস্কৃতির মতো সব খারাপ কাজের সূচনা করেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন, জিয়াউর রহমান সেই বিচার বন্ধ করে দেন এবং তাদের উপদেষ্টা ও মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া ও এইচ এম এরশাদ একই কাজ করেছেন।

খালেদা জিয়া এতিমদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতির মামলায় এবং তার ছেলে তারেক রহমান মানি লন্ডারিং ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে জিয়াউর রহমানের আরেক ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর কাছ থেকে অবৈধভাবে চুরি করা ২০ কোটি টাকা ফেরত এনেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (জিয়া পরিবার) এত বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রে তার ছেলেকে (জয়) অপহরণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহে এক এফবিআই কর্মকর্তাকে নিয়োগ করেছিল। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল সবসময় জনগণের অধিকার রক্ষায় বিশ্বাসী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্যান্টনমেন্টে বন্দি অবস্থা থেকে জনগণের ভোটাধিকারের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ এখন আর্থসামাজিকভাবে উন্নত হচ্ছে।

বিএনপি-জামায়াত জোট বারবার অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস ও হত্যার সংস্কৃতির আশ্রয় নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জনগণ কখনোই তাদের কর্মকাণ্ডে সাড়া দেয় না। কারণ, তারা হত্যা, দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং অস্ত্র ব্যবসাসহ প্রতিটি অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, তার সরকার সবসময় ন্যায়ের পক্ষে। তাই জাতির পিতা হত্যা মামলার বিচার করেছে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সূচনা করেছে।

বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার না হওয়ার অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও প্রাণবন্ত হয়েছে এবং উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের মানুষকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের একজনও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না। তারা ইতোমধ্যে ১০ লাখ পরিবারকে বিনা খরচে বাড়ি দিয়েছেন এবং জীবন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য আয়ের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন ভালো অবস্থায় আছে। তিনটি ব্যাংকসহ প্রবাসীদের সুবিধার্থে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সংকটকালীন সময়ে দেশের পাশে থাকার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিজ দেশে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। সূত্র: বাসস।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রাম ইপিজেডে কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিট

অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক উপযুক্ত জবাব দিন”প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৪:৫৪:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

সরকার ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের যোগ্য জবাব দিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের উন্নয়নের বাস্তব চিত্র তুলে ধরতে এবং বিশ্বে বাংলাদেশ যে মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করেছে তা ধরে রেখে মাথা উঁচু করে বিশ্বব্যাপী চলার আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। নিউ ইয়র্কে তার অবস্থানকালীন হোটেল থেকে প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে চালানো অপপ্রচারের তাৎক্ষণিক উপযুক্ত জবাব দিন।’ যুদ্ধাপরাধী ও জাতির জনকের খুনিদের আত্মীয়-স্বজনদের পাশাপাশি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া অর্থপাচারকারীসহ নানা অপরাধীরা অপপ্রচারের নেপথ্যে রয়েছে বলে তিনি জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের বেশিরভাগকেই অপকর্মে জড়িত থাকার জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে বা অপরাধ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের কথায় কর্ণপাত করবেন না। বরং আমাদের উন্নয়ন জনগণের সামনে তুলে ধরুন।’ সোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে সরকার ও বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে অন্যদের সবক দিচ্ছে, এমন ব্যক্তিদের চরিত্র ও অপকর্ম জনসমক্ষে তুলে ধরার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি তার সরকারের করা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে সব স্থানে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্পর্কে আপনার এলাকার কংগ্রেসম্যান, সিনেটর ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবহিত করুন এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখুন।’যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী (ছবি: ফোকাস বাংলা)যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া ভার্চুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী (ছবি: ফোকাস বাংলা)

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাজেটের আকারের তুলনামূলক চিত্র দেখে তাদের দ্বারা কতটা উন্নয়ন হয়েছে তা বিচার করতে পারবেন। বিএনপি আমলে বাজেটের আকার ছিল মাত্র ৬০ হাজার কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ বাজেট ছয় লাখ কোটি টাকার ওপরে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রেখে সারা বিশ্বে চলার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বে যে মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করেছে তা সমুন্নত রাখার জন্য আমি আপনাদের সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প থেকে তাদের তহবিল প্রত্যাহারের বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বদলে দিয়েছে এবং প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ যা বলে তা করার ক্ষমতা রাখে। প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বে আসন্ন খাদ্য সংকট সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করে ভবিষ্যতে তা থেকে বাঁচতে সবাইকে আরও বেশি করে খাদ্য উৎপাদনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যেহেতু একটি প্রকট খাদ্য সংকট আসন্ন, তাই দেশে আপনার স্বজনদের বলুন, বিভাজনের কারণে দেশের কোনও জমিই অনাবাদি রাখা যাবে না।’

ভোট কারচুপি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি গুম, খুন ও দুর্নীতি, অর্থপাচার, অস্ত্র বাণিজ্যসহ সব ধরনের অপকর্মের রাজনীতি চালু করা সত্ত্বেও নির্বাচনি প্রক্রিয়া, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য শেখ হাসিনা বিএনপির কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ভোট কারচুপিতে বিএনপি চ্যাম্পিয়ন ছিল। তারা ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করেছিল। দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার জন্য রাজনীতিতে হত্যা, গুম, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং ও ঋণখেলাপি সংস্কৃতির মতো সব খারাপ কাজের সূচনা করেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন, জিয়াউর রহমান সেই বিচার বন্ধ করে দেন এবং তাদের উপদেষ্টা ও মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। খালেদা জিয়া ও এইচ এম এরশাদ একই কাজ করেছেন।

খালেদা জিয়া এতিমদের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতির মামলায় এবং তার ছেলে তারেক রহমান মানি লন্ডারিং ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে জিয়াউর রহমানের আরেক ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর কাছ থেকে অবৈধভাবে চুরি করা ২০ কোটি টাকা ফেরত এনেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (জিয়া পরিবার) এত বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রে তার ছেলেকে (জয়) অপহরণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহে এক এফবিআই কর্মকর্তাকে নিয়োগ করেছিল। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দল সবসময় জনগণের অধিকার রক্ষায় বিশ্বাসী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্যান্টনমেন্টে বন্দি অবস্থা থেকে জনগণের ভোটাধিকারের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বাংলাদেশ এখন আর্থসামাজিকভাবে উন্নত হচ্ছে।

বিএনপি-জামায়াত জোট বারবার অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস ও হত্যার সংস্কৃতির আশ্রয় নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জনগণ কখনোই তাদের কর্মকাণ্ডে সাড়া দেয় না। কারণ, তারা হত্যা, দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং অস্ত্র ব্যবসাসহ প্রতিটি অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, তার সরকার সবসময় ন্যায়ের পক্ষে। তাই জাতির পিতা হত্যা মামলার বিচার করেছে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের সূচনা করেছে।

বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের বিচার না হওয়ার অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার পর বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও প্রাণবন্ত হয়েছে এবং উন্নয়নের পথে যাত্রা শুরু করেছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশের মানুষকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের একজনও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না। তারা ইতোমধ্যে ১০ লাখ পরিবারকে বিনা খরচে বাড়ি দিয়েছেন এবং জীবন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য আয়ের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন ভালো অবস্থায় আছে। তিনটি ব্যাংকসহ প্রবাসীদের সুবিধার্থে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। সংকটকালীন সময়ে দেশের পাশে থাকার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিজ দেশে আরও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। সূত্র: বাসস।