ঢাকা ০৭:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কৃষি প্রণোদনা ও কৃষিঋণ বিতরণ সহজীকরণের দাবি বোরহানউদ্দিনে গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগে খামারির মাছ নিধন লালমনিহাটের পাটগ্রামে টানা রেলপথ অবরোধের পাশাপাশি সড়কপথ অবরোধের ঘোষণা লালমনিরহাটে কালবৈশাখী ঝড়ে সবকিছু লন্ডভন্ড চাঁদপুরে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা সোনারগাঁয়ে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বাবাকে মারধর করলো দুই সন্তান শরীয়তপুর ভেদেরগঞ্জ পৌরসভায় দুদকের অভিযান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ এন্ড হায়ার এডুকেশন সোসাইটির নতুন কমিটির প্রথম কার্যনির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত গণহত্যার দায়ে হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করতে হবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা দাহ, কার্যালয়ে তালা

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত-২

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জসিম তালুকদার ও নুরআলম সরদার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুই শতাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের বাম হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ও আরেকজনকে রাতের আধাঁরে অতর্কিত হামলা করে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলার জয়নগরের ছাব্বিশপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জাজিরা থানা পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং দুপুরের পর ঐ এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে যৌথবাহিনী অভিযান চালায়। এসময় দেশীয় অস্ত্রসহ একজনকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন, জয়নগর ইউনিয়নের পশ্চিম ছাব্বিশপাড়া এলাকার বাসিন্দা কুদ্দুস খালাসীর ছেলে সাব্বির খালাসী (২১), একই এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম চোকদারের ছেলে সজল চোকদার (২৯)।
আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় সাব্বির ও সজলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদার ও নুরআলম সরদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এলাকায় এর আগেও একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এবারের সংঘর্ষে এক পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন ইউপি সদস্যের সমর্থক জসিম তালুকদার ও আরেক পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন নুরআলম সরদার।

স্থানীয়রা জানায়, রবিবার সকালে দুই গ্রুপের লোকজন বোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারির প্রস্তুতি নিলে নুরআলম সরদারের লোকজন বোমা নিক্ষেপ করে। এতে জসিম তালুকদারের পক্ষের লোক সাব্বিরের হাতে লেগে বোমা বিস্ফোরিত হয়। এর আগে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে বাজার থেকে বাড়ী ফেরার পথে জসিম তালুকদারের আরেক সমর্থক জাজিরা উপজেলা যুবদল নেতা মাহবুব ইসলাম রনির ভাই সজল চোকদারকে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়। এর পর রবিবার সকালে আবারো সজলের বাড়িতে নুর আলম ও তার সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায় ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। বর্তমানে আহত দুজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সংঘর্ষের সময়ের একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যায়, দু’পক্ষের লোকজন ককটেল বোমা ও দেশীয় অম নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে
সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন এবং হাতবোমা (ককটেল) বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছেন।

সংঘর্ষ ও ককটেল বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর ঐ এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করায় দুপক্ষের নেতৃত্ব দেয়া সকলে পলাতক রয়েছেন। একারনে কারো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় আহত সজল চোকদারের মা রাজিয়া বেগমের সাথে। তিনি বলেন, আমার ছেলে একজন প্রবাসী। কিছুদিনের জন্য ছুটিতে এসেছিল। ওরা আমার ছেলের কাছে মাদক সেবনের টাকা দাবী করলে আমার ছেলে টাকা না দেওয়ায় বাজার থেকে বাড়ীতে আসার সময় রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে আমার ছেলের হাত পা ভেঙে দেয়। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এদিকে কথা হয় বোমের আঘাতে আহত সাব্বিরের চাচি ফাতেমা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, আমার ভাতিজা ছোট মানুষ। মারামারির সময় নুরআলমের লোকেরা বোমা মারলে সাব্বিরের হাতের উপরে পরে ফুটে যায়। জানিনা ওর হাত টিকবে কিনা।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ বলেন, “জয়নগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এঘটনার এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কৃষি প্রণোদনা ও কৃষিঋণ বিতরণ সহজীকরণের দাবি

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত-২

আপডেট সময় ০৭:৩৮:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ছাব্বিশপাড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জসিম তালুকদার ও নুরআলম সরদার গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুই শতাধিক ককটেল (হাতবোমা) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের বাম হাত প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ও আরেকজনকে রাতের আধাঁরে অতর্কিত হামলা করে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলার জয়নগরের ছাব্বিশপাড়া এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জাজিরা থানা পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং দুপুরের পর ঐ এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে যৌথবাহিনী অভিযান চালায়। এসময় দেশীয় অস্ত্রসহ একজনকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন, জয়নগর ইউনিয়নের পশ্চিম ছাব্বিশপাড়া এলাকার বাসিন্দা কুদ্দুস খালাসীর ছেলে সাব্বির খালাসী (২১), একই এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম চোকদারের ছেলে সজল চোকদার (২৯)।
আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় সাব্বির ও সজলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য হালিম তালুকদার ও নুরআলম সরদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এলাকায় এর আগেও একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এবারের সংঘর্ষে এক পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন ইউপি সদস্যের সমর্থক জসিম তালুকদার ও আরেক পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন নুরআলম সরদার।

স্থানীয়রা জানায়, রবিবার সকালে দুই গ্রুপের লোকজন বোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারির প্রস্তুতি নিলে নুরআলম সরদারের লোকজন বোমা নিক্ষেপ করে। এতে জসিম তালুকদারের পক্ষের লোক সাব্বিরের হাতে লেগে বোমা বিস্ফোরিত হয়। এর আগে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে বাজার থেকে বাড়ী ফেরার পথে জসিম তালুকদারের আরেক সমর্থক জাজিরা উপজেলা যুবদল নেতা মাহবুব ইসলাম রনির ভাই সজল চোকদারকে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেয়া হয়। এর পর রবিবার সকালে আবারো সজলের বাড়িতে নুর আলম ও তার সমর্থকরা অতর্কিত হামলা চালায় ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। বর্তমানে আহত দুজন ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সংঘর্ষের সময়ের একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যায়, দু’পক্ষের লোকজন ককটেল বোমা ও দেশীয় অম নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে
সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন এবং হাতবোমা (ককটেল) বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছেন।

সংঘর্ষ ও ককটেল বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর ঐ এলাকায় যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করায় দুপক্ষের নেতৃত্ব দেয়া সকলে পলাতক রয়েছেন। একারনে কারো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় আহত সজল চোকদারের মা রাজিয়া বেগমের সাথে। তিনি বলেন, আমার ছেলে একজন প্রবাসী। কিছুদিনের জন্য ছুটিতে এসেছিল। ওরা আমার ছেলের কাছে মাদক সেবনের টাকা দাবী করলে আমার ছেলে টাকা না দেওয়ায় বাজার থেকে বাড়ীতে আসার সময় রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে আমার ছেলের হাত পা ভেঙে দেয়। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এদিকে কথা হয় বোমের আঘাতে আহত সাব্বিরের চাচি ফাতেমা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, আমার ভাতিজা ছোট মানুষ। মারামারির সময় নুরআলমের লোকেরা বোমা মারলে সাব্বিরের হাতের উপরে পরে ফুটে যায়। জানিনা ওর হাত টিকবে কিনা।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ বলেন, “জয়নগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এঘটনার এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।