ঢাকা ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সহপাঠীকে নিয়ে ‘হাসাহাসি’র জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা শত বছরের শ্রেষ্ঠ দেশপ্রেমিক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গাজায় হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত পাঁচবিবি ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত বগুড়ার গাবতলী ক্লাবে কমিটি গঠন কুমিল্লা মনোহরগঞ্জে নারীসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার সু্ন্দরবন আন্তঃ রেঞ্জ ভলিবল খেলায় খুলনা রেঞ্জ চ্যাম্পিয়ন  স্ত্রীকে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ বোরহানউদ্দিনে মাসব্যাপী তাঁত বস্ত্র ও হস্ত শিল্প মেলার উদ্ধোধন কুবিতে ভর্তি পরীক্ষায় কলম, পানি ও ফ্রি বাইক সার্ভিস নিয়ে ছাত্রদল-ছাত্রশিবির

গাজীপুরে কৃষি প্রণোদনা বিতরণে নয়ছয়, রাজনৈতিক প্রভাবে বঞ্চিত প্রকৃত কৃষক

গাজীপুর জেলার ৫টি উপজেলায় কৃষি খাতে নানা ভর্তুকি, প্রণোদনা, বরাদ্দ ও প্রকল্পে খরচ করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। তবে সেই টাকার সুফল প্রান্তিক চাষিরা পাচ্ছেন কিনা, তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।

জেলার প্রান্তিক চাষিদের অভিযোগ, তদারকি ও জবাবদিহিতা না থাকায় অনেক সময় প্রকৃত কৃষকরা সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পদে পদে হয়রানির মুখেও পড়ছেন তারা। অনেক ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের পছন্দের লোক, রাজনৈতিক নেতা, দলীয় লোকজন কিংবা বড় উদ্যোক্তা। কখনো কখনো প্রণোদনার টাকা বা সামগ্রী যথাযথ বণ্টন না করে নয়ছয়েরও অভিযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে মাঠ পর্যায়ের একটি চক্রের ঘেরাটোপে বন্দি হয়ে আছেন ক্ষুদ্র চাষিরা।

বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের অভিযোগ, জমি নেই এমন চাষিরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে নেন। এরপর বিনামূল্যে সার-বীজ উত্তোলন করে কম টাকায় ডিলারদের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে ডিলারদের কাছ থেকে চড়া দামে তাদের সেগুলো কিনতে হয়।

তথ্য বলছে, জেলার ০৫টি উপজেলায় মোট আবাদী জমির পরিমাণ ১,০৪,১৭০ হেক্টর এবং কৃষি পরিবার রয়েছে ২,৮৬,৫৯৩টি। এ জেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি। বেশির ভাগ কৃষকই জানেন না, তাঁদের জন্য সরকার কী পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে এবং কৃষকেরা পাচ্ছেন কতটুকু বা কিভাবে পাবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে এসব প্রণোদনা সুবিধা সংশ্লিষ্ট উপজেলার সুবিধাভোগী কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দিয়েছে কৃষি বিভাগ। তবে মাঠপর্যায়ের কৃষকদের অভিযোগ, সরকারি এ সহায়তার প্রায় পুরোটাই ভোগ করছেন রাজনৈতিক দলের পছন্দের লোকজন। কৃষিতে যাদের বড় অবদান রয়েছে এমন সব কৃষকদের এ প্রণোদনার আওতায় আনা হয়নি। তারা জানেনও না এসব প্রণোদনার কথা।

সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর সদর, কালিয়াকৈর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া ও কালীগঞ্জ উপজেলায় কৃষকদের জন্য বরাদ্দ বিভিন্ন প্রণোদনা, ভর্তুকি মূল্যের কৃষি যন্ত্রপাতি রাজনৈতিক প্রভাব আর ঘুষসহ নানাভাবে বাগিয়ে নিয়েছেন প্রভাবশালীরা। আর কৃষকরা বলছেন, আমরা তো এত কিছু জানিও না, আর বুঝিও না। কৃষি অফিসে বরাদ্দের পরিমাণ বা বরাদ্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে পরে আর কিছুই দেয় না। কৃষি অফিসের দুর্নীতিতে ভর্তুকিবঞ্চিত হচ্ছি আমরা। কৃষি অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কৃষক প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বরাদ্দসহ বিভিন্ন খাতের মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাঁরা কৃষকদের নিয়ে একটি ফসলের মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান করে ব্যানার টাঙিয়ে ছবি তুলে রেখেই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন। এ ছাড়া প্রতিটি বরাদ্দের কলাম ফাঁকা রেখেই স্টক-রেজিস্টারে নেওয়া হচ্ছে কৃষকদের স্বাক্ষর।

সরেজমিনে এসব অভিযোগের সত্যতার খোঁজে সদর উপজেলাসহ কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রদর্শনীতে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকদের জন্য বরাদ্দের চার ভাগের তিন ভাগই চলে যাচ্ছে কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের পকেটে ও রাজনৈতিক নেতাদের কাছে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা কৃষি অফিসগুলো বলছে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে আউশ ধান, বোরো ধান, সরিষা, চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে এবং কৃষকদের সব বরাদ্দ পূর্ণভাবে বণ্টন করা হয়েছে। কিন্তু নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েকটি সূত্র বলছে, উন্নত মানের ধান, গম, পাট ও ভুট্টার বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের নামে নানা প্রকল্প রয়েছে। কৃষকের জন্য যে পরিমাণ বীজ, সার, কীটনাশক, টাকাসহ যেসব উপকরণ দেওয়ার কথা, তা-ও দেওয়া হয় নামমাত্র। নিয়ম অনুযায়ী প্রণোদনার সার-বীজ বিতরণে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রকৃত কৃষকের তালিকা প্রস্তুত করার কথা। কিন্তু তারা সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা না বলে কিংবা মাঠ পর্যায়ে না গিয়ে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের ওপর নির্ভর করেন। মুঠোফোনেই যোগাযোগের মাধ্যমে প্রস্তুত করেন তালিকা। এতে যাচাই-বাছাই ছাড়াই জমিহীন এমনকি কোনো দিন কৃষিকাজ করেননি এমন কৃষকের নামও তালিকায় স্থান পায়। ফলে প্রকৃত কৃষকরা বঞ্চিত হওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।

এমন তথ্যের ভিত্তিতে কথা বলতে চাইলে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, প্রণোদনা বা বরাদ্দ আসলেই রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন লোকজন মুঠোফোনে তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বলে। আগেও এমন কাজ হয়েছে, বর্তমানেও এসব চলছে। তারা যেভাবে কথা বলে আমাদের করার কিছুই থাকে না। বাধ্য হয়ে তাদের নাম বা তাদের পছন্দের লোকের নাম আমাদেরকে খাতায় লিখতে হয়। রাজনৈতিক দলে যারা উচ্চ পর্যায়ে আছেন তারা যদি তাদের কর্মীদের এসব করতে নিষেধ করেন তাহলে এসব বন্ধ হবে। এসব উচ্চ পর্যায়ের নেতারাও হয়তোবা জানেন না যে, তাদের নাম ব্যবহার করে তাদের দলের লোক কৃষকদের ভাগ মেরে খাচ্ছেন। এ সমস্যা আমাদের প্রতিটি ব্লকেই হয়ে থাকে। এখন তারা এটাও বলেন যে, সতের বছরতো তাদেরকে দিয়েছেন এখন আমাদেরও দেন।

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর কার্যালয়ে গিয়েও পাওয়া যায়নি উপ-পরিচালককে। মুঠোফোনে তাকে ফোন দিলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি। বিভিন্ন উপজেলার উপজেলা কৃষি অফিসাররা জানান, তারা সঠিক নিয়মে প্রণোদনার বীজ, সার বিতরণ করেছেন এবং করেন।

এদিকে এসব বিষয়ে কথা হলে জেলার জেলা প্রশাসক জানান, প্রণোদনার বীজ-সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সহপাঠীকে নিয়ে ‘হাসাহাসি’র জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা

গাজীপুরে কৃষি প্রণোদনা বিতরণে নয়ছয়, রাজনৈতিক প্রভাবে বঞ্চিত প্রকৃত কৃষক

আপডেট সময় ০৪:২৯:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

গাজীপুর জেলার ৫টি উপজেলায় কৃষি খাতে নানা ভর্তুকি, প্রণোদনা, বরাদ্দ ও প্রকল্পে খরচ করা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। তবে সেই টাকার সুফল প্রান্তিক চাষিরা পাচ্ছেন কিনা, তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।

জেলার প্রান্তিক চাষিদের অভিযোগ, তদারকি ও জবাবদিহিতা না থাকায় অনেক সময় প্রকৃত কৃষকরা সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পদে পদে হয়রানির মুখেও পড়ছেন তারা। অনেক ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের পছন্দের লোক, রাজনৈতিক নেতা, দলীয় লোকজন কিংবা বড় উদ্যোক্তা। কখনো কখনো প্রণোদনার টাকা বা সামগ্রী যথাযথ বণ্টন না করে নয়ছয়েরও অভিযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে মাঠ পর্যায়ের একটি চক্রের ঘেরাটোপে বন্দি হয়ে আছেন ক্ষুদ্র চাষিরা।

বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের অভিযোগ, জমি নেই এমন চাষিরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করে নেন। এরপর বিনামূল্যে সার-বীজ উত্তোলন করে কম টাকায় ডিলারদের কাছে বিক্রি করে দেন। পরে ডিলারদের কাছ থেকে চড়া দামে তাদের সেগুলো কিনতে হয়।

তথ্য বলছে, জেলার ০৫টি উপজেলায় মোট আবাদী জমির পরিমাণ ১,০৪,১৭০ হেক্টর এবং কৃষি পরিবার রয়েছে ২,৮৬,৫৯৩টি। এ জেলার জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি। বেশির ভাগ কৃষকই জানেন না, তাঁদের জন্য সরকার কী পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে এবং কৃষকেরা পাচ্ছেন কতটুকু বা কিভাবে পাবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে এসব প্রণোদনা সুবিধা সংশ্লিষ্ট উপজেলার সুবিধাভোগী কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দিয়েছে কৃষি বিভাগ। তবে মাঠপর্যায়ের কৃষকদের অভিযোগ, সরকারি এ সহায়তার প্রায় পুরোটাই ভোগ করছেন রাজনৈতিক দলের পছন্দের লোকজন। কৃষিতে যাদের বড় অবদান রয়েছে এমন সব কৃষকদের এ প্রণোদনার আওতায় আনা হয়নি। তারা জানেনও না এসব প্রণোদনার কথা।

সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর সদর, কালিয়াকৈর, শ্রীপুর, কাপাসিয়া ও কালীগঞ্জ উপজেলায় কৃষকদের জন্য বরাদ্দ বিভিন্ন প্রণোদনা, ভর্তুকি মূল্যের কৃষি যন্ত্রপাতি রাজনৈতিক প্রভাব আর ঘুষসহ নানাভাবে বাগিয়ে নিয়েছেন প্রভাবশালীরা। আর কৃষকরা বলছেন, আমরা তো এত কিছু জানিও না, আর বুঝিও না। কৃষি অফিসে বরাদ্দের পরিমাণ বা বরাদ্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে পরে আর কিছুই দেয় না। কৃষি অফিসের দুর্নীতিতে ভর্তুকিবঞ্চিত হচ্ছি আমরা। কৃষি অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী কৃষক প্রশিক্ষণ, মাঠ দিবস, কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভর্তুকি ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বরাদ্দসহ বিভিন্ন খাতের মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাঁরা কৃষকদের নিয়ে একটি ফসলের মাঠ দিবসের অনুষ্ঠান করে ব্যানার টাঙিয়ে ছবি তুলে রেখেই বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন। এ ছাড়া প্রতিটি বরাদ্দের কলাম ফাঁকা রেখেই স্টক-রেজিস্টারে নেওয়া হচ্ছে কৃষকদের স্বাক্ষর।

সরেজমিনে এসব অভিযোগের সত্যতার খোঁজে সদর উপজেলাসহ কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রদর্শনীতে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকদের জন্য বরাদ্দের চার ভাগের তিন ভাগই চলে যাচ্ছে কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের পকেটে ও রাজনৈতিক নেতাদের কাছে।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা কৃষি অফিসগুলো বলছে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে আউশ ধান, বোরো ধান, সরিষা, চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে এবং কৃষকদের সব বরাদ্দ পূর্ণভাবে বণ্টন করা হয়েছে। কিন্তু নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েকটি সূত্র বলছে, উন্নত মানের ধান, গম, পাট ও ভুট্টার বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের নামে নানা প্রকল্প রয়েছে। কৃষকের জন্য যে পরিমাণ বীজ, সার, কীটনাশক, টাকাসহ যেসব উপকরণ দেওয়ার কথা, তা-ও দেওয়া হয় নামমাত্র। নিয়ম অনুযায়ী প্রণোদনার সার-বীজ বিতরণে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের প্রকৃত কৃষকের তালিকা প্রস্তুত করার কথা। কিন্তু তারা সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা না বলে কিংবা মাঠ পর্যায়ে না গিয়ে জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের ওপর নির্ভর করেন। মুঠোফোনেই যোগাযোগের মাধ্যমে প্রস্তুত করেন তালিকা। এতে যাচাই-বাছাই ছাড়াই জমিহীন এমনকি কোনো দিন কৃষিকাজ করেননি এমন কৃষকের নামও তালিকায় স্থান পায়। ফলে প্রকৃত কৃষকরা বঞ্চিত হওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে।

এমন তথ্যের ভিত্তিতে কথা বলতে চাইলে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কয়েকজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের মাতৃভূমিকে বলেন, প্রণোদনা বা বরাদ্দ আসলেই রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন লোকজন মুঠোফোনে তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বলে। আগেও এমন কাজ হয়েছে, বর্তমানেও এসব চলছে। তারা যেভাবে কথা বলে আমাদের করার কিছুই থাকে না। বাধ্য হয়ে তাদের নাম বা তাদের পছন্দের লোকের নাম আমাদেরকে খাতায় লিখতে হয়। রাজনৈতিক দলে যারা উচ্চ পর্যায়ে আছেন তারা যদি তাদের কর্মীদের এসব করতে নিষেধ করেন তাহলে এসব বন্ধ হবে। এসব উচ্চ পর্যায়ের নেতারাও হয়তোবা জানেন না যে, তাদের নাম ব্যবহার করে তাদের দলের লোক কৃষকদের ভাগ মেরে খাচ্ছেন। এ সমস্যা আমাদের প্রতিটি ব্লকেই হয়ে থাকে। এখন তারা এটাও বলেন যে, সতের বছরতো তাদেরকে দিয়েছেন এখন আমাদেরও দেন।

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর কার্যালয়ে গিয়েও পাওয়া যায়নি উপ-পরিচালককে। মুঠোফোনে তাকে ফোন দিলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি। বিভিন্ন উপজেলার উপজেলা কৃষি অফিসাররা জানান, তারা সঠিক নিয়মে প্রণোদনার বীজ, সার বিতরণ করেছেন এবং করেন।

এদিকে এসব বিষয়ে কথা হলে জেলার জেলা প্রশাসক জানান, প্রণোদনার বীজ-সার বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।