নিষিদ্ধ ঘোষিত ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করতে বাঁধা দেওয়ায় এক পরিবেশ কর্মীর প্রায় ২০ লাখ টাকার গাছ কেটে নিয়েছেন আপন চাচা। পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার বড় বিল্লা নামক এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটেছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন পঞ্চগড় শাখার সহ-সভাপতি কাজী মকছেদুর রহমান তার আপন চাচা মুক্তিযোদ্ধা কাজী মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তেতুলিয়া মডেল থানায় অভিযোগ করলেও প্রভাবশালী ড্রেজার মেশিন মালিকদের প্রভাবে সাত দিনেও তেতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করেননি। পরে তিনি বিষয়টি পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ করেছেন।
পরিবেশ আন্দোলন নেতা কাজী মকসেদ জানান ত্রিশ বছর ধরে ২৬১ খতিয়ানে ৪০১৩ দাগে জমি ভোগ দখল করে আসছি। ২০ বছর আগে এখানে আমি ও আমার বাবা ১২শ ইউক্যালিপটাস গাছ রোপন করি। ঈদের আগের দিন থেকে ১০-১২টা করে গাছ কাটা শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ২০টা থেকে ১০০ টা করে গাছ কেটে নিচ্ছি। এ পর্যন্ত দুই শতাধিক গাছ কেটে বিক্রি করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তেঁতুলিয়া উপজেলার বড়বিল্লাহ গ্রামের চা বাগান এবং আমবাগানের মাঝে কাজী মাহাবুবুর রহমানের নির্দেশে কাঠ ব্যবসায়ী রহমতুল্লাহর নেতেৃত্বে ১০-১৫ জন
ইউক্যালেপটাস গাছ কাটছেন। কাটা গাছগুলো কয়েকটি ভ্যানে লোড করে কাঠের মিলে নেওয়া হচ্ছে। কাঠ ব্যবসায়ী রহমতুল্লাহ জানান কাজী মাহাবুবুর রহমানের কাছ থেকে প্রায় তিন লাখ টাকার শতাধিক গাছ কিনেছি। ক্রমান্বয়ে গাছগুলো কেটে নিচ্ছি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) নেতা কাজী মকছেদ নিজের গাছ কাটা ঠেকাতে না পেরে প্রথমে গত ২ এপ্রিল তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশে অভিযোগ করেন এবং ৮ এপ্রিল পঞ্চগড় পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা যায় কাজী মাহাবুবুর রহমান তার জমিতে নিষিদ্ধ ড্রিল ড্রেজার দিয়ে বেশ কিছুদিন থেকে বিনা বাধায় পাথর উত্তোলন করছেন। আমি পরিবেশ আন্দোলনের নেতা হয়ে এলাকার প্রান প্রকৃতি এবং ভূমিকম্পের হাত থেকে তেঁতুলিয়াকে বাঁচাতে ড্রেজারের বিরূদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছি, জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছি। বিভিন্ন সময়ে মাহাবুব চাচার জমি থেকে ২১ টি ড্রেজার ধরে দিয়েছি। এ কারনেই ক্ষিপ্ত হয়ে চাচা কাজী মাহাবুব লোকজন দিয়ে আমার পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া জমির প্রায় কুড়ি লাখ টাকার গাছ কেটেছে। আমি একজন সচেতন মানুষ হয়েও কোথাও বিচার পাচ্ছি না।
অভিযুক্ত কাজী মাহাবুবুর রহমান জানান কাজী মকসেদ জীবনে কি সত্য কথা বলেছে? সে একজন মিথ্যাবাদী আমার জমি আমার সবকিছু। খতিয়ানের মালিকানায় কাজী মকসেদের কোন জমি নাই তবে তার বাবার জমি আছে। তিনি ড্রেজার দিয়ে পাথর উত্তোলনের কথা অস্বীকার করেছেন।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি মুসা মিঞা কাজী মকসেদ থানায় অভিযোগের কথা স্বীকার করে জানান অভিযোগের পর উপ পরিদর্শক আসাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আসলে জমির মালিকানা এবং গাছগুলোর মালিক নির্ধারনের জন্য দুই পক্ষের দালিলিক প্রমান থানায় প্রদানের কথা বলা হয়েছে। তদন্তের পর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।