ঢাকা ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নরসিংদী বাজারে মাছ কেটে সংসার চালায় শতাধিক পরিবার

নরসিংদীর বিভিন্ন হাটে, বাজারে মাছ কেটে সাংসার চালায় শতাধিক পরিবার। বাজারে মাছ কাটাকে এখন অনেকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন। এই পেশায় অনেকেই অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বাজার থেকে মাছ কেনার পর সেই মাছ বাসায় নিয়ে কাটা একটি ঝামেলা পূর্ণ কাজ মনে করে বাজারে টাকা দিয়ে  মাছ কেটে বাসায় নিয়ে যায়। টাকা দিয়ে হলেও ক্রেতারা  বাজার থেকেই মাছ কেটে নিতে পারছেন । মাছ কাটাকে পেশা হিসেবে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে নরসিংদীর বাজার, মনোহরদী বাজার, শিবপুর বাজার, বেলাব বাজার, রায়পুরা বাজার, পলাশ বাজারাসহ  বিভিন্ন বাজারের শতাধিক নারী পুরুষ। মাছ কাটা পেশা হিসেবে নিয়ে একদিকে যেমন অর্থনৈতিকভাবে তাদেরকে স্বাবলম্বী করছে অন্যদিকে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে ।
কাঁটা মাছের বিভিন্ন উচ্ছিষ্ট অংশ নানা ধরণের শিল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে বাড়ছে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা। এক সারিতে বসে বৃহদাকৃতির বটি দিয়ে ছোট বড় প্রায় সব ধরণের মাছ কাটতে দেখা গেছে এই পেশাজীবীদের।
পলাশ উপজেলায় ছোটবড় বাজারের সংখ্যা প্রায়  ৫০টি । এর মধ্যে বড় বাজার ১৪টি। ঘোড়াশাল বাজার, পলাশ বাজার, খানেপুর বাজার, ডাংগা বাজার, সাধুরবাজার, কালীবাজার, তালতলি, ওয়াপদা নয়া বাজার, পন্ডিতপাড়া বাজার, পারুলিয়া বাজার, পাকড়াগঞ্জ, চরসিন্দুর বাজার, সাদ্দাম বাজার, গজারিয়া বাজার, চরনগরদী বাজার উল্লেখযোগ্য ।
প্রতিটি বাজারের মাছ কাটার জন্য পাশে ধারালো বটি নিয়ে বসে মাছ কাটতে দেখা যায়। ক্রেতাদের মাছ কেনার পরই মাছ কাটানীদের কাছে ছুটে যায়। ক্রেতাদের ইচ্ছামত তারা মাছ কেটে, পরিষ্কার করে পলিথিন ব্যাগে ভরে দিচ্ছে। কাটানীরা বড় মাছ কেজি ১০-২০ টাকা ও ছোট মাছ প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা নিচ্ছে।
ঘোড়াশাল বাজারে মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহকারী হরিদাস রায় ও লিটন দাস বলেন, প্রতিটি গদিতে মাছ কাটার কাজে মোট তিনজন লোক কাজ করে। এদের মধ্যে এক জন বটি ওয়ালা, একজন আইশারি ও একজন করে কাস্টমার ডেকে আনার কাজ। বিকেল থেকে রাত  পর্যন্ত ক্রেতাদের ক্রয়কৃত মাছ তাদের চাহিদা অনুযায়ী কেটে দিয়ে থাকেন। প্রতিদিন বিভিন্ন জাতের মাছ কাটে তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাছ কেটে প্রতিদিনই গড়ে ৬ শত টাকা থেকে হাজার টাকা আয় হয় । সংসারও ভালই চলে। অনেক বেকার ছেলে  কোন কাজ না পেয়ে মাছ কাটায় নেমে পড়েছে।
বাজারে এক দম্পতি মাছ কাটে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিলাকে তার স্বামী সাহায্য করে। এ দম্পতির আয় দৈনিক আটশত হতে বারশত টাকা। ভাগ্য ভালো হলে হাটের দুদিন ১৫০০ টাকাও হয়। এই আয় দিয়েই তাদের সংসার ভালোই চলছে। সপ্তাহে ছুটির দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়।
অনেক দম্পতি দুজনই চাকরি করেন বাজার থেকে মাছ কেটে নিয়ে গেলে তাদের সময়টা বেঁচে যায়। বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্যও রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

দেশের বেকারত্বের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে চলছে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্হা না থাকায় বাজারে মাছ কাটাকে অনেকেই নতুন কর্মসংস্থান হিসেবে বেঁচে নিয়েছেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নরসিংদী বাজারে মাছ কেটে সংসার চালায় শতাধিক পরিবার

আপডেট সময় ০৭:৪৪:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

নরসিংদীর বিভিন্ন হাটে, বাজারে মাছ কেটে সাংসার চালায় শতাধিক পরিবার। বাজারে মাছ কাটাকে এখন অনেকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন। এই পেশায় অনেকেই অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বাজার থেকে মাছ কেনার পর সেই মাছ বাসায় নিয়ে কাটা একটি ঝামেলা পূর্ণ কাজ মনে করে বাজারে টাকা দিয়ে  মাছ কেটে বাসায় নিয়ে যায়। টাকা দিয়ে হলেও ক্রেতারা  বাজার থেকেই মাছ কেটে নিতে পারছেন । মাছ কাটাকে পেশা হিসেবে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে নরসিংদীর বাজার, মনোহরদী বাজার, শিবপুর বাজার, বেলাব বাজার, রায়পুরা বাজার, পলাশ বাজারাসহ  বিভিন্ন বাজারের শতাধিক নারী পুরুষ। মাছ কাটা পেশা হিসেবে নিয়ে একদিকে যেমন অর্থনৈতিকভাবে তাদেরকে স্বাবলম্বী করছে অন্যদিকে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে ।
কাঁটা মাছের বিভিন্ন উচ্ছিষ্ট অংশ নানা ধরণের শিল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে বাড়ছে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা। এক সারিতে বসে বৃহদাকৃতির বটি দিয়ে ছোট বড় প্রায় সব ধরণের মাছ কাটতে দেখা গেছে এই পেশাজীবীদের।
পলাশ উপজেলায় ছোটবড় বাজারের সংখ্যা প্রায়  ৫০টি । এর মধ্যে বড় বাজার ১৪টি। ঘোড়াশাল বাজার, পলাশ বাজার, খানেপুর বাজার, ডাংগা বাজার, সাধুরবাজার, কালীবাজার, তালতলি, ওয়াপদা নয়া বাজার, পন্ডিতপাড়া বাজার, পারুলিয়া বাজার, পাকড়াগঞ্জ, চরসিন্দুর বাজার, সাদ্দাম বাজার, গজারিয়া বাজার, চরনগরদী বাজার উল্লেখযোগ্য ।
প্রতিটি বাজারের মাছ কাটার জন্য পাশে ধারালো বটি নিয়ে বসে মাছ কাটতে দেখা যায়। ক্রেতাদের মাছ কেনার পরই মাছ কাটানীদের কাছে ছুটে যায়। ক্রেতাদের ইচ্ছামত তারা মাছ কেটে, পরিষ্কার করে পলিথিন ব্যাগে ভরে দিচ্ছে। কাটানীরা বড় মাছ কেজি ১০-২০ টাকা ও ছোট মাছ প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা নিচ্ছে।
ঘোড়াশাল বাজারে মাছ কেটে জীবিকা নির্বাহকারী হরিদাস রায় ও লিটন দাস বলেন, প্রতিটি গদিতে মাছ কাটার কাজে মোট তিনজন লোক কাজ করে। এদের মধ্যে এক জন বটি ওয়ালা, একজন আইশারি ও একজন করে কাস্টমার ডেকে আনার কাজ। বিকেল থেকে রাত  পর্যন্ত ক্রেতাদের ক্রয়কৃত মাছ তাদের চাহিদা অনুযায়ী কেটে দিয়ে থাকেন। প্রতিদিন বিভিন্ন জাতের মাছ কাটে তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাছ কেটে প্রতিদিনই গড়ে ৬ শত টাকা থেকে হাজার টাকা আয় হয় । সংসারও ভালই চলে। অনেক বেকার ছেলে  কোন কাজ না পেয়ে মাছ কাটায় নেমে পড়েছে।
বাজারে এক দম্পতি মাছ কাটে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিলাকে তার স্বামী সাহায্য করে। এ দম্পতির আয় দৈনিক আটশত হতে বারশত টাকা। ভাগ্য ভালো হলে হাটের দুদিন ১৫০০ টাকাও হয়। এই আয় দিয়েই তাদের সংসার ভালোই চলছে। সপ্তাহে ছুটির দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়।
অনেক দম্পতি দুজনই চাকরি করেন বাজার থেকে মাছ কেটে নিয়ে গেলে তাদের সময়টা বেঁচে যায়। বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্যও রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

দেশের বেকারত্বের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে চলছে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্হা না থাকায় বাজারে মাছ কাটাকে অনেকেই নতুন কর্মসংস্থান হিসেবে বেঁচে নিয়েছেন।