ধারাবাহিক অনুসন্ধানী সংবাদের প্রথম পর্বে উঠে এসেছে গণপূর্ত ই/এম বিভাগ ১১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী (ই/এম) ,শরীফ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুমের অত্যধিক দুর্নীতির তথ্য। যিনি একই পদে আজ প্রায় ৫ বছর ধরে বহাল রয়েছেন। টানা ক্ষমতায় থাকা স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলেও, তার দোসর হয়েও তিনি বহাল রয়ে গেছেন। কোন নিয়মে বা কোন জাদুতে তিনি বহাল আছেন তা আসলেই একটি আশ্চর্যের বিষয়।
তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও, কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে হটাতে চায় না এ প্রশ্ন অনেকের মনে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুমের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ হলো নিয়ে একজন ঊর্ধ্বতন নারী সহকর্মীকে জড়িয়ে বিভিন্ন রসালো গল্প গণপূর্ত অধিদপ্তরের আনাচে-কানাচে বিচরণ করে। যেকোনো দিন যে কোন ক্ষণ তাকে ওই নারী সহকর্মীর রুমে পাওয়া যায়। ওই নারী সহকর্মীদের সাথে তার তার সম্পর্ক গণপূর্ত অধিদপ্তরে আজ ওপেন সিক্রেট বিষয়। তাদের ডেটিং, তাদের সেটিং, তাদের রং ঢং সবাই দেখে আর মুখ টিপে হাসে। এমনকি গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীও এই বিষয়ে নির্বিকার ভূমিকা পালন করে গেছেন । তার সম্পর্কের জেরে ওই নারী সহকর্মীর বৈবাহিক জীবনে ছাড়াছাড়ি পর্যন্ত গড়িয়েছে । তারপরও ওই নারী সহকর্মীর রুমে তাকে বারবার দেখা যায়। একাধিক ঠিকাদ্দার এর কাছ থেকে কাজ দেওয়া বাবদ অ্যাডভান্স টাকা নেওয়ার ঘটনা তার বিরুদ্ধে রয়েছে । এ বিষয়ে একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেছে এই প্রতিনিধির কাছে। কাজ দিবে, প্রকল্প দিবে বলে তিনি শুরুতেই ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে নেন এবং তারপরে তাকে ঘোরাতে থাকেন।
অফিসে সর্বদা ইরেগুলার এই কর্মকর্তা অফিসের নিয়মকানুন এবং ড্রেসকোডকে সবসময় বুড়া আঙুল দেখিয়ে চলেন।তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একটাই অভিযোগ যে তাকে কখনোই ফোনে পাওয়া যায় না, সে কোথায় থাকেন তা তারা কেউ জানেন না।অথচ এই অফিসার বঙ্গভবনের মত একটি স্পর্শকাতর স্থাপনার নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন ।
সাম্প্রতিক সময়ে একদিনের টেন্ডার করার বিষয়ে যে কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলী বিরুদ্ধে প্রধান প্রকৌশলী কর্তৃক শোকজ লেটার দেওয়া হয়েছিল উনি তাদের মধ্যে অন্যতম। পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য তিনি নানা ধরনের অনিয়ম করেন । ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে টেন্ডার করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে।
তার অফিসের একাধিক কাজে তিনি নিজেই ঠিকাদার নিজেই নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন । এ বিষয়ে তার অধীন একাধিক কর্মকর্তা তাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন।
জনাব শরীফ মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুম বিগত ২০২০ সাল থেকে এই ডিভিশনে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। দায়িত্ব পালনের দিক থেকে ওনার কর্মকাল পাঁচ বছরেরও বেশি। একই কর্মকর্তাকে একই অফিসে তিন বছরের বেশি দায়িত্বে না রাখার বিষয়ে সরকারের একাধিক নির্দেশনা থাকার পরেও , কি জাদুর বলে তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তা শুধু মাত্র প্রধান প্রকৌশলী বলতে পারবেন।