ঢাকা ০৮:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সরকারী ছুটির দিনে দরপত্র কেনার শেষ তারিখ হওয়ায় বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে এডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের খুনীদের শাস্তি দাবি ১৪ কোটি টাকা আত্মসাতকারী এনজিও মালিকের শাস্তি ও জামানত ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন দৈনিক আমাদের কন্ঠ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক-কে হুমকির প্রতিবাদে মঠবাড়িয়ায় মানববন্ধন দেশে ফিরেই মিজানুর রহমান আজহারীর স্ট্যাটাস ‘আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জনগণ অন্যতম সহায়ক শক্তি’ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না হলে রাজপথে আন্দোলন হবে : ১২ দলীয় জোট ভারতের অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা উচিত : সিলেটে মির্জা ফখরুল ‘সাড়ে ১৫ বছর শাসনকারীরা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদের সাজিয়েছে’ কুর্দি যোদ্ধাদের শেষ পরিণতির হুঁশিয়ারি এরদোয়ানের

গোয়াইনঘাটে গরুচোর সন্দেহে দিনমজুর হেলালকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাধানগরে গরুচোর সন্দেহে হেলাল উদ্দিন (৩৫) নামে এক দিনমজুরকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দিনমজুর হেলাল উদ্দিন একই উপজেলার ডৌবাড়ী ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম (দাতারী) গ্রামের বাসিন্দা। সে মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয়রা জানান- মঙ্গলবার বিকেলে মধ্য জাফলং চা বাগানে গরু চুরির অভিযোগ তুলে দিনমজুর হেলালকে আটক করা হয় এবং পরে তাকে একটি গাছের সাথে বেঁধে দফায় দফায় বেধড়ক মারধর করেন রাধানগর এলাকার লোকজন। পরবর্তীতে চুন ও বালুমিশ্রিত পানি পান করান দিনমজুর হেলালকে। এক পর্যায়ে হেলাল অজ্ঞান হয়ে পড়লে মধ্য জাফলং ইউনিয়ন অফিসে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং রাত ভর সেখানে মারধর করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে তার গণপিটুনির দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোরে দিনমজুর হেলালের স্বজনরা মধ্য জাফলং ইউনিয়ন অফিস থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। যাওয়ার পথে হেলাল রাস্তায় খুব বেশি বমি করেন এবং তার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় বলে জানান স্বজনরা।
দিনমজুর হেলাল হত্যাকান্ড নিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেন
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের এএসআই ও বিট কর্মকর্তা প্রভাকর বড়ুয়া জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে খবর পেয়ে হেলালকে উদ্ধার করতে তিনি মধ্য জাফলং ইউনিয়ন অফিসে গেলে স্থানীয়রা তাকে বলেন- হেলাল উদ্দিনকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর তিনি ঘটনাস্থলে হেলালকে রেখে চলে আসেন। তিনি জানান, এ সময় ইউপি সদস্য মুছা, রতন ও নওয়াবসহ চৌকিদাররা উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের পরিবারের দাবি- পুলিশ সময়মতো হেলালকে উদ্ধার করে ফেললে এভাবে দফায় দফায় মারধর করতে পারতেন না।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার তোফায়েল আহমেদ ঘটনার দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অতিরিক্ত মারধর এবং চুনা-বালুমিশ্রিত পানি খাওয়ানোর কারণে হেলালের মৃত্যু হয়েছে। এমনটি আমরা প্রাথমিক ধারণা করছি। লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হবে। গরুর মালিকের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরুর মালিকের কোন তথ্য আমরা এখনো পাই নি। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতের গ্রেফতারে ডিবিসহ থানা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে তৎপর রয়েছে। আমরা আশা করছি রাতের মধ্যেই চিহ্নিতদের গ্রেফতার করতে আমরা সক্ষম হবো।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারী ছুটির দিনে দরপত্র কেনার শেষ তারিখ হওয়ায় বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ

গোয়াইনঘাটে গরুচোর সন্দেহে দিনমজুর হেলালকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা

আপডেট সময় ০৮:৩৯:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার রাধানগরে গরুচোর সন্দেহে হেলাল উদ্দিন (৩৫) নামে এক দিনমজুরকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দিনমজুর হেলাল উদ্দিন একই উপজেলার ডৌবাড়ী ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম (দাতারী) গ্রামের বাসিন্দা। সে মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয়রা জানান- মঙ্গলবার বিকেলে মধ্য জাফলং চা বাগানে গরু চুরির অভিযোগ তুলে দিনমজুর হেলালকে আটক করা হয় এবং পরে তাকে একটি গাছের সাথে বেঁধে দফায় দফায় বেধড়ক মারধর করেন রাধানগর এলাকার লোকজন। পরবর্তীতে চুন ও বালুমিশ্রিত পানি পান করান দিনমজুর হেলালকে। এক পর্যায়ে হেলাল অজ্ঞান হয়ে পড়লে মধ্য জাফলং ইউনিয়ন অফিসে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং রাত ভর সেখানে মারধর করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে তার গণপিটুনির দৃশ্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোরে দিনমজুর হেলালের স্বজনরা মধ্য জাফলং ইউনিয়ন অফিস থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। যাওয়ার পথে হেলাল রাস্তায় খুব বেশি বমি করেন এবং তার শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় বলে জানান স্বজনরা।
দিনমজুর হেলাল হত্যাকান্ড নিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেন
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশের এএসআই ও বিট কর্মকর্তা প্রভাকর বড়ুয়া জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার দিকে খবর পেয়ে হেলালকে উদ্ধার করতে তিনি মধ্য জাফলং ইউনিয়ন অফিসে গেলে স্থানীয়রা তাকে বলেন- হেলাল উদ্দিনকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর তিনি ঘটনাস্থলে হেলালকে রেখে চলে আসেন। তিনি জানান, এ সময় ইউপি সদস্য মুছা, রতন ও নওয়াবসহ চৌকিদাররা উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের পরিবারের দাবি- পুলিশ সময়মতো হেলালকে উদ্ধার করে ফেললে এভাবে দফায় দফায় মারধর করতে পারতেন না।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার তোফায়েল আহমেদ ঘটনার দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অতিরিক্ত মারধর এবং চুনা-বালুমিশ্রিত পানি খাওয়ানোর কারণে হেলালের মৃত্যু হয়েছে। এমনটি আমরা প্রাথমিক ধারণা করছি। লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হবে। গরুর মালিকের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গরুর মালিকের কোন তথ্য আমরা এখনো পাই নি। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতের গ্রেফতারে ডিবিসহ থানা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে তৎপর রয়েছে। আমরা আশা করছি রাতের মধ্যেই চিহ্নিতদের গ্রেফতার করতে আমরা সক্ষম হবো।