দেশজুড়ে বেড়েছে গবাদিপশুর খাদ্যের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন পশু খামারিরা। সম্প্রতি হওয়া বন্যার কারণে খড়ের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। যার প্রভাব পড়েছে ছোট-বড় সব ধরনের খামারে। এতে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ধানের থেকেও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খড়।
খামারি মো. আলাউদ্দিন জানান, এবার তিনি সাড়ে ৬ লাখ টাকার খড় কিনেছেন। আগের বছর সমপরিমাণ খড় কিনতে তার খরচ হয়েছিল প্রায় ২ লাখ টাকা।
কৃষক ফয়েজ আহমেদ বলেন, তিনি চলতি মৌসুমে ১৬০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, তার জমিতে ৫০ হাজার টাকার ধান পাবেন। কিন্তু তিনি ইতোমধ্যে তার জমির খড় বিক্রি করে ফেলেছেন ৭০ হাজার টাকায়। গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে খামারিরা বাড়িতে গিয়ে তার খড়ের আগাম দাম দিয়ে গেছেন। গত বছর একই জমির খড় বিক্রি করেছিলেন ৫ হাজার টাকায়।
কমলনগর উপজেলার সরকারি নিবন্ধিত খামারি হাজি মো. আলাউদ্দিন জানান, প্রতিবছরের এ সময়ে তিনি খড় সংগ্রহ করে রাখেন এবং এতে তার প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ হয়। তবে চলতি মৌসুমে গত বছরের তুলনায় খড়ের দাম বেড়ে গেছে। তিনি এবার ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় গত মৌসুমের সমপরিমাণ খড় কিনেছেন।
খড়ের এমন নজিরবিহীন দাম অতীতে কখনো দেখেননি স্থানীয় কৃষক ও খামারিরা। কৃষকরা খড় বিক্রি করে খুশি হলেও হতাশ পশু খামারিরা।
গোখাদ্যের তীব্র সংকটে অস্থির হয়ে পড়েছেন তারা। অনেকেই গরু বিক্রি করেতে চেয়েও পারছেন না। গরুর দামও ব্যাপকভাবে কমে গেছে।
খামারি ইউসুফের খামারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি গরু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি গরুর জন্য বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় তিনশ টাকার খড় ও খাদ্য লাগছে। এত খরচ বহন করা আমার পক্ষে সম্ভব না। সব গরু বিক্রি করতে চেয়েছি। কিন্তু পাঁচ মাস পালন করার পর এখন ১৫ লাখ টাকার গরু মাত্র অর্ধেক দামে বিক্রি করতে পারব। হিসেবে করে দেখেছি, এতে আমার ৬০ ভাগের মতো ক্ষতি হচ্ছে। এখন গরু রাখতেও পারছি না, আবার বিক্রিও করতে পারছি না। কাঁচা ঘাস নেই এবং খড়ের দাম খুব বেশি।
খামারি মো. রফিক বলেন, খড় গরুর খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু চাহিদা বাড়তে থাকায় অনেক খামারি দানাদার খাবারের দিকে ঝুঁকছেন। এতে খামার পরিচালনার খরচ আরও বেড়ে যাচ্ছে।